বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

একটি ফাও টপিক।

শুচিবায়ু ব্যাপারটা একটা রোগের মতো।আপনারা সবাই সম্ভবত এটার ব্যাপারে জানেন।এরা পরিচ্ছন্নতার সকল ব্যাপারে খুবই এলার্ট,বলতে গেলে অনেকটা বিরক্তিকর পর্যায়ে সেটাকে নিয়ে যায়।প্রচুর পানি ব্যবহার করে,ছোয়াছুয়ির ব্যাপারে সেন্সিটিভ আর প্রায় অনেক সময়ে অদ্ভুত সব বাঁতিকগ্রস্ত প্রশ্ন করে।

তেমনি এক রোগী একবার এমনি এক প্রশ্ন তুলে চিকিতসকদের কাছে।তার ওপেন হার্ট সার্জারি হবে,সে অপারেশন থিয়েটারে যাবার আগে ডাক্তারদের জিজ্ঞেস করে,সমস্ত ব্যাপারতায় কতো সময় নিবে?ডাক্তাররা জানায়,৩ ঘন্টার বেশী নিতে পারে।রোগী বলে তাহলে তো ঝামেলার ব্যাপার আছে?ডাক্তাররা বলেন।সেটা কিরকম?রোগী বলেন,আমার অপারেশনে ব্যবহৃত সব অস্ত্র-পাতি নিশ্চয় স্টেরিলাইজ করা আছে,সেটা ঠিক আছে।কিন্তু এই ৩ঘন্টা আপনারা নিশ্চয় পর্দন(বায়ু-ত্যাগ) চেপে থাকবেন না।আর আপনারা এই ৪-৫ জনের ক্রমাগত পর্দনে স্টেরিলাইজ অস্ত্র-পাতি জীবানু কন্টামিনেশনে আক্রান্ত হবে।ডাক্তাররা ভিতরে ভিতরে খুবই বিরক্ত হয়ে একজন আরেকজনকে ইশারা দিলেন দ্রুত অজ্ঞান করে কাজ শুরু করা যাক।এই রোগী আর ৫মিনিট কথা বললে একে পিটিয়ে মেরে ফেলার ইচ্ছা জাগতে পারে।

পড়ে কিন্তু সত্যি এক গবেষনায় এটা নিয়ে জানা যায়,পর্দনের ফলে নির্গত গ্যাসের সাথে কিছু নির্দোষ ব্যাকটিরিয়া থাকে,এটা ক্ষতিকর নয়।দইয়ের ব্যাকটিরিয়ার মতো।

মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ঘুড়ি ও মাঞ্জা সুতো।

ঘুড়ির সুতায় মাঞ্জা দেয়ার ব্যাপারটা অন্যজেলায় কি নামে আছে জানি না?তবে আমাদের চট্টগ্রামে এটাকে মাঞ্জা দেয়াই বলে।একটা পাত্রে সাগু,ভাতের মাড়ের সাথে সিদ্ধ করে তাতে কাঁচগুড়ো(যা আগেই বালির মতো মিহি করে চূর্ন করা হয়েছে)দিয়ে মিক্স করে সেই গলিত মিশ্রনের ভেতর দিয়ে সুতাকে এনামেল করা হয়।যা শুকোলে সত্যিই বেশ ধারালো।নাটাই থেকে এটা যখন বাতাসের টানে সরসর করে যেতে থাকে তখন অসাবধানে কেউ হাত দিলে হাত কেটে যেতে পারে।

আবার কারো ঘুড়ি ভো-কাট্টা(বহোডই-চট্টগ্রামের ভাষায়) হয়ে গেলে যখন এটি নেবার জন্য ছেলেপিলেদের মধ্যে টানাটানি হয় তখনও হাত কেটে যায়।মাঞ্জা সুতায় হাত কেটে গেলে বেশ হাত জ্বলে বা ব্যথা করে।আবার অনেক নেশাড়ু ঘুড়ি উড়িয়ে থাকে,তারা তাদের স্পেশাল মাঞ্জা দেয়ার ফর্মুলা কোকাকোলা ফর্মুলার মতো গোপন রাখে।তেমনি এক ঘুড়িবাজ ছিলো আমাদের বাল্যকালে এমু নামে এক লোক।সে এমনই মারাত্বক প্লেয়ার ছিলো যে,সে ঘুড়ি উড়ানো মাত্রই আকাশে ত্রাহি ত্রাহি রব পড়ে যেতো।সবাই তার প্রিয় ঘুড়ি নামিয়ে নিতো।যেনো কবুতরের পালে চিল হামলা দিলো বলে।আসলে ঘুড়ি ৫-৬টা কিনলে ১-২ টা ভালো পড়ে।তাই শান্তিতে ওগুলো ঊড়াবার সময় এমুর উৎপাত সত্যিই অসহ্য ছিলো।

এমু এক ঘন্টা ঘুড়ি উড়োলেই বিরক্ত হয়ে ঘুড়ি নামিয়ে ফেলতো।কারন যেগুলো উড়তো সেগুলোকে সে অলরেডি কেটে দিয়েছে বা অন্যরা অপেক্ষায় থাকতো এমু ছাঁদ থেকে বিদায় নিলে আবার উড়াবে।

আমাদের মাঝে গুজব ছিলো এমু মাঞ্জা দেয়ার সময় সাবুর কাঁচের গলিত দ্রবনে কুত্তার গু,চিলের রক্ত আর অর্জুনের ছালের রস দেয়।তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে সেও কোকাকোলা কোম্পানির মালিকের মতো রহস্যময় হাসি দিতো।তাতেই আমাদের ধারনা আরো পোক্ত হয়ে যেতো।সে তার নাটাই আর ঘুড়ি কখনো ঘরে নিতো না।ছাদেই একটা নিরাপদ জায়গায় রেখে যেতো।আর কেউ এ জিনিস চুরিও করতো না,কিংবা তার সুতো হাতে ধরার দূঃসাহস দেখাতো না।কারন কুত্তার গু আর চিলের রক্ত।তার মাঞ্জা সুতার রঙ ছিলো অদ্ভুত ধরনের হালকা গোলাপি।হালকা গোলাপি রংটা কি জন্য আর বোঁটকা গন্ধ কি জন্য,আমরা তো তা জানতামই।

আমাদের ছফা হুজুর ও নুহ নবীর কিস্তি।

আমাদের এখানে এক হুজুর ছিলেন,নুর ছফা তার নাম।অত্যান্ত ভালো মানুষ ছিলেন উনি।এখন অন্যকোন মসজিদে চলে গিয়েছেন।আমার দেখা উনিই একমাত্র হুজুর যিনি ডেস্টিনি২০০০ করতেন।প্রায় তিনি বিভিন্ন লোককে ডেস্টিনির দাওয়াত দিতেন।আসলে উনি অনেক কম বেতন পেতেন,যার জন্য উনি এটাকে পার্ট-টাইম হিসেবে নিয়েছিলেন।আমরা হয়তো অনেকেই জানি না,আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেবেরা অত্যান্ত কম বেতন পান।যার দ্বারা কখনোই সন্মানজনকভাবে বাঁচা সম্ভব না।

তাই উনারা টিউশনী করেন।কিন্তু উনি ডেস্টিনি করাতে এলাকার মসজিদ কমিটির লোকেরা উনাকে চাকুরীচ্যুত করেন।যে কারনে উনার কথা আমার মনে আসলো সেটা বলি,নুর ছফা হুজুর উনার কথাবার্তা বা খুতবার মধ্যে মাঝে মাঝে বেশ সুন্দর মানানসই ইংরেজী বলতেন,শুনতে ভালো লাগতো।

একবার উনি নুহ নবীর কিস্তির কাহিনী বললেন।উনি জানালেন,নুহ নবী এটা বানানোর পর সবাই হাসাহাসি করতো।এট দ্যাট টাইম কতিপয় দুস্টলোক তাতে পায়খানা করা স্টার্ট করলো।তো সার্টেন একটা পিরিয়ডে নৌকা মল-মুত্রে পরিপূর্ন হয়ে গেলো।ইন দ্য মিন টাইম এক বুড়ি চিন্তা করলো,সবাই যখন করলো আমি আর বাদ কেনো যাই।সেই বুড়ি মলত্যাগ করতে গিয়ে পা স্লিপ করে একেবারে সেই মল-মুত্রের মধ্যে পড়লো।

আজকে আওয়ামি লিগের নুহ নবীর কিস্তির কথা শুনে আমার এইসব কথা মনে পড়লো।

তুঘলকি কান্ডের সেই বাদশাহ তুঘলক।

দিল্লীর বাদশাহ মুহম্মদ বিন তুঘলক বিখ্যাত ছিলেন তার পাগলামী ও উন্মুক্ততার জন্য।ছিলেন খামখেয়ালি ও অত্যাচারী শাসক।তার পাগলামীর জন্যই বাংলা ভাষায় তুঘলকি কারবার কথাটি এসেছে।তিনি একবার হঠাত করে ঠিক করলেন,রাজধানী নিরাপদ জায়গা দিল্লী থেকে মধ্য প্রদেশের দেবগিরিতে পাহাড়ের মাঝে নিয়ে যাবেন,সবাই আপত্তি জানালো।এবং হাতে হাতে ফলও পেলো।অতঃপর দেবগিরিতে গিয়ে তার নাম দিলেন দৌলাতাবাদ।এটি এখন ভারতের ঔরঙ্গাবাদের কাছে।

মাত্র ৬ মাস থেকে তার মন উঠে গেলো।তিনি আবার দিল্লী যাবার প্লান নিলেন আর মত প্রকাশ করলেন- একমাত্র জংলী লোক ছাড়া কোন লোক এখানে থাকতে পারে না।সবাই একবাক্যে রাজি হলো।ঐ রাতেই অর্ধেক নগরী সুর্য উঠার আগে রওয়ানা দিয়ে দেয়।অথচ এটি নির্মান করতে গিয়ে উনি রাজকোষ খালি করে রাষ্ট্রে দূর্ভিক্ষ এনেছেন।তুঘলক বাদশা ভাবলো,যাবোই যখন তখন এতোদিন ধরে যে পার্বত্য ডাকাতটা জীবন অতিস্ট করেছিলো তার একটা হেস্তনেস্ত করেই যাই।অতএব ডাকাতের পিছু নিলেন।ঐ ডাকাত রাজস্থানের মরুভূমির দিকে পালিয়ে গিয়ে ডুব মারলো।সবাই মাস ছয় ঐ ডাকাতের পিছে ঘুরে স্বাস্থ্য তিনভাগের দুইভাগ হারিয়ে সিন্ধু নদের দিকে পেরিয়ে আবার পুবমুখী হয়ে দিল্লীর পথ ধরলো।

এদিকে সিন্ধুনদে পাওয়া গেলো এক তেল চকচকা ভিগু মাছ(আমাদের ইলিশের জাত ভাই)।এটি দেখেই তুঘলকের মাথা খারাপ হয়ে গেলো,সে এটি এখনই খাবে।রাজকীয় কবিরাজ নিষেধ করলো,উনি জানালেন সবাই মরুভূমিতে পায়চারী করার সময় যে স্বাস্থ্য হারিয়েছে,তাতে এখন চোখের ক্ষুধায় এটি খেলে নির্ঘাত প্রান হারাবে।অতপর তারা খেলো এবং প্রানটা খোয়ালো।বাদশাও গেলো।

আরেকবার তুঘলক বাদশা সকালে উঠে দূর্গের বারান্দায় এসে শুনলো,পুরো শহর কান্নাকাটি করছে।উনি জিজ্ঞেস করলেন কি ব্যাপার?প্রহরীরা জানালো,হুজুর শহরে গুজব রটেছে,আপনি মারা গেছেন?তিনি হুকুম দিলেন,যারা গুজবে কান দেয়,তাদের নির্বিচারে হত্যা করা হোক।আদেশ পালিত হলো।অগনিত নগরবাসী নিহত হলেন।

তো এহেন বাদশা যখন অবশেষে মারা গেলেন এবং তার খবর এসে দিল্লীতে পৌছলো।তখন শহরের অবস্থা শোচনীয়,আগের রাতে রওয়ানা দেয়া সেইসব লোকেরা এসে তাদের দখলদারীত্ব বুঝে নিচ্ছিলো আর অভিশাপ দিচ্ছিলো তুঘলককে।আর যারা দখলদারিত্ব হারাচ্ছিলো,তারাও অভিশাপ দিচ্ছিলো তুঘলককে।এই দুই গ্রুপের অভিশাপের সাথে যুক্ত হচ্ছিলো,ঐ গুজব শুনে কান্নাকাটি করা নিহত লোকদের আত্নীয়দের অভিশাপ।সাথে বিপুল ক্ষুদ্ধ জনগন।

ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দীন বরনী ঘটনাকে এভাবে বলেছেন,অতঃপর অত্যাচারী তুঘলক বাদশা মরিয়া ক্ষুদ্ধ জনগন হতে রেহাই পেলেন আর ক্ষুদ্ধ জনগন রেহাই পেলেন অত্যাচারী পাগল তুঘলক বাদশা থেকে।

উনি বলেছেন,উনি রাজনীতি করবেন।

আমি এক লোকেরে চিনি,যিনি দারুন পশু-পাখি প্রেমিক।উনি পশু-পাখির কস্ট কোনক্রমেই সহ্য করতে পারেন না।উনার প্রিয় খাদ্য হলো সকালে ছাগলের পায়া দিয়ে নান।আবার গরুর নলাও উনার খুব প্রিয়।অনেকবার গরুর নলার ভিতর থেকে নরম মজ্জা বের করতে গিয়ে ঝাঁকানির সময় উনার চিনা মাটির প্লেট ভেঙ্গে গিয়েছে।এছাড়া মুরগীর রান থেকে উনি মাংশ অদ্ভুত দক্ষতায় ফুলের মতো করে খুলে খেয়ে ফেলেন।আর হাড্ডিটা চুষে চিবিয়ে মজ্জা বের করেন।

কিন্তু অদ্ভুত!উনার সামনে কোন পশু-পাখিকে নির্যাতন উনি সহ্য করেন না।উনার একটা কাঠ বা গাছ চেড়াবার টিম্বার আছে।সেটার নাম এভারগ্রীন টিম্বার।উনি সামনে নাকি রাজনীতি করবেন।আমাকে জানিয়েছে।

গরুর বাজারে।

গরুর দালাল বলতেছে,মামু আপনি এটা লিয়ে নেন।হামি বুইলছি ইরকম দুধাবাল বলদ আপনে পুরা বাজারে দুইটা পাবেন না।ইটা হামাদের চাঁপাইয়ের(চাঁপাই নবাবগঞ্জ) সলিড গরু।

আরে রাখো তোমার সলিড গরু।গরু তো দেখতেছি ঝিমাইতেছে।শ্বাস-প্রশ্বাসও তো খুব লম্বা লম্বা করে নিতেছে।সত্যি করে বলোতো,এটারে কি তোমরা ইঞ্জেকসন টিঞ্জেকসন দিছোনি কোন?আমার তো মনে লাগে,এটারে বাজার থেকে নিতে রাস্তায়ই মরতে পারে।

মামা,ইগলান কি বলেন,হামি গ্যারান্টি দিলাম এর।লম্বা রাস্তায় জার্নিতে গরু হয়রান,অন্য কিছু লয়।এর পর কিছুমিছু হলে আল্লার কিরে আপনাকে হামার বিবি দিয়ে দিবো,আপনি লিয়ে লিবেন।

মিয়া,আর কোন খেয়ে দেয়ে কাম নাই।এমনিতেই তো টাকা দিয়ে গরু কিনে সেই গরু মারা গেলে আমার বিবি আমার জীবন বরবাদ করে দেবে,তার উপর তোমার বিবিরে নিয়ে হাজির হলেতো ঐ মরা গরুর সাথে আমারে কবর দিয়ে দিবে।

আমার বন্ধু মুরাদ।

আমাদের বন্ধু মুরাদ অত্যান্ত সেনসেটিভ মনের মানুষ।সত্যি বলছি,এমন সাদা মনের মানুষই আজকাল দেখা যায় না।সে অল্পতেই নার্ভাস হয়ে পড়তো।এতে আমরা দারুন মজা পেতাম।একবার আমি,রেজা সহ আরো অনেকে মাঠে বসে আড্ডা দিতেছি।এসময় দূরে দেখা গেলো সুন্দর একটা স্বাস্থ্যবান মুরগী।আপন ব্যক্তিত্বের গৌরবে মাথা উচু করে সেটি ক্রমাগত পাঁক খাচ্ছিলো।

মুরাদ সগর্বে বললো,এটা ব্যাটা আমাদের মুরগী।অকস্মাত অঘটন ঘটে গেলো।কোথা থেকে এক বখাটে রাঁতা মোরগ ছুটে এসে যা করার তা করে দিয়ে চলে গেলো।মুরাদের চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেলো।সে অপ্রস্তুত হয়ে বললো,না না ,এটা না,আমাদের মুরগী আরেকটা।একদম সেইম সেইম দেখতে।

আমি বললাম,মুরাদ বাস্তবতা মেনে নে।এটাই তোদের মুরগী।আর তোর কোন দোষ নেই।তুই কেনো নার্ভাস হচ্ছিস?মুরাদ রে,মোরগ কুক কুরুক কুক করলেই মুরগীর ডিম হয় না রে।দুনিয়া এতো সোজা না রে।

মুরাদ ভুল বুঝলো আমাদের।উঠে চলে গেলো।

আমার স্বপন মামা।

আমার স্বপন মামা আমার ঘনিস্ট বন্ধুর মতো।মামা সুন্দর করে কৌতুক বলে।আমরা দুই মামা-ভাগিনা একটা সময় ঢাকায় একসাথে ঘোরাফিরা করতাম।আজকে বিএনএফের ধানগাছ প্রতীক চাওয়া নিয়ে মামার একটা কৌতুক মনে পড়লো।

মামা বলতো বুঝলি তুহিন,এক মেয়ে নতুন স্টাইল শিখছে।যা দেখে তা দেখেই বলে,ও শিট এটা কি কিংবা ও মাই গড এটা কি?(টাইটানিক সিনেমার পর এই শিট বলার খুব চল হইছিলো)।তো হলো কি,এক অনুস্টানে গিয়ে সেই মেয়ে ঐ বাসার ড্রয়িং রুমে ধানের শীষের শো-পিস দেখে যথারীতি বললো-ও শিট ,এটা কি ধানগাছ?

তখন আরেকপাশ থেকে এক ভদ্রলোক এসে ঐ মেয়েকে জিজ্ঞেস করলো,তুমি অমুক সাহেবের মেয়ে না।আচ্ছা,তোমাদের বাসার চারদিকে কি এখনো ধানক্ষেত আর বিল আছে,নাকি বাড়িঘর উঠে গেছে?

আরেকটা কৌতুক।তুহিন শোন,এক অফিসের পিয়ন ক্ষেপে গিয়ে অফিসের সবার সামনে জিএম সাহেবকে বললো,স্যার আপনে যতোবড় ইতর,যতোবড় লম্পট,যতোবড় বদমাশ, যতোবড় চরিত্রহীন- - - বলে আমারে মনে করেন,আমি তা না।ততক্ষনে প্রেসার উঠে জিএম সাহেব অজ্ঞান।

চিনিলো কেমনে?

আইয়ুবের আমলে সে জনগনের ভোটাধিকার না দিয়ে বেসিক ডেমোক্রেট মেম্বার বা বিডি মেম্বার বলে কতগুলো টাউট লোকের সৃষ্টি করেছিলো।এরাই প্রথম আবহমান গ্রাম-বাংলার লোকদের মামলা-মোকদ্দমার সাথে পরিচয় ঘটান।কিছু বললেই মামলা,কিছু ঘটলেই মামলা,মানে এক কথায় মামলায় মামলায় সব সয়লাব করে ফেলেছিলো।

সেসময় এক বিডি মেম্বারকে এক ক্ষিপ্ত মহিষ গুতিয়ে মেরে ফেলে।তো পরের দিন,ইত্তেফাকে এটা প্রকাশিত হয় এই শিরোনামে"চিনিলো কেমনে"।খবরে ছাপা হয়,বিডি মেম্বাররা যে জনজীবন অতিস্ট করে ফেলেছে,সেটা সমস্ত জাতি জানে।কিন্তু মহিষটা কিভাবে জানলো?তাই ইত্তেফাকের সাধু ভাষায় তাদের ট্র্যাডিশন অনুযায়ী রিপোর্টিং ছিলো,মহিষটা বিডি মেম্বারকে চিনিলো কেমনে? - (ফয়েজ আহমেদের মধ্যরাতের অশ্বারোহী থেকে)।

নাসিরুদ্দীন হোজ্জা।

নাসিরুদ্দীন হোজ্জার গ্রামের লম্পট জমিদার অবশেষে মারা গেছে,সবাই হাল ছেড়ে বেঁচেছে।অত্যান্ত কামুক ও লম্পট ছিলো লোকটি।সবাই সবার স্ত্রী,কন্যা নিয়ে সদাই শঙ্কিত ছিলো।কিন্তু না কিছু লোক মরার সময় বা মরার পরেও ডিস্টার্ব বলে পরিগনিত হয়।

স্থানীয় ইমাম সাহেব এসেছেন হোজ্জাকে বলতে যে,এক মহা মুসিবত দেখা দিয়েছে।লম্পট জমিদারের চোখের পাতা কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না।হাত দিয়ে অসংখ্যবার চোখ বুলিয়ে দেয়া হয়েছে।কিন্তু যেই কে সেই।একেবারে সেই লম্পটের দৃস্টি নিয়ে চোখ দুটি তাকিয়ে আছে।সবাই বিরক্ত ও চিন্তিত।এভাবে চোখ মেলা অবস্থায় কিভাবে কবর দিবে?একজন বললো,পাতা দুটি সুতা দিয়ে সেলাই করে দিবে কিনা?আর তো সহ্য হচ্ছে না।

হোজ্জা কবরস্তানে আসলেন,দেখলেন।তার পর সমাবেত সবাইকে বললেন,দেখেন আপনারা কেউ ব্যাপারটা অন্যভাবে নেবেন না।এই লম্পট লোকটির সমস্যা হলো সে তার প্রিয় বাইজির নাঁচ না দেখেই মারা গেছে,তাই তাকে এখন একবার নাচটি দেখানো হোক।এতে তার মনের ক্ষুধা মিটবে ও তার চোখ বন্ধ হবে।

ক্লিনিক গুলোর হালচাল।

রসিক মেয়র শরফুদ্দীন আহমদ ঝন্টু(রসিক মানে কিন্তু উনি রসিকতাপ্রিয় তা নয়,রংপুর সিটি কর্প) এপোলো হসপিটালের নামে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরন মামলা এনেছে,চিকিতসার নামে অবহেলা করায়।বুঝেন একজন মেয়র এর এ দশা হয়।তাহলে আমাদের কি হতে পারে।এসব ক্লিনিক এর নামে অপচিকিতসার এই রমরমা কারবার পুরো পৃথিবীর সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা।

এরা একদম কমনলি যে কাজটা বেশী করে তা হলো,ডেলিভারি কেসে সবসময় গার্ডিয়ানকে চরম চাপে ফেলে বলে,এখনই সিজার করতে হবে,না হলে আপনি যেহেতু এ কাজের জন্য দায়ী সেহেতু এখন রিডবল দায়ী হবেন।এদের আচরনটা হবে অনেকটা আপনার প্রতি আপনি একটা খুনী।নার্সগুলা পর্যন্ত আপনাকে চাপে ফেলার জন্য বলবে,এ আপনি কি করেছেন?

দেরী করলে বাচ্চার কি কি হতে পারে,বাচ্চার মার কি কি হতে পারে তার একটা নিঁখুত ছবি আপনার মাথায় খোদাই করে একে দিবে?ফলস্রুতি হবে এই,আপনি শুধু স্ত্রীর সিজারের জন্যই রাজি হবেন না,আপনাকেও যাতে ইচ্ছা করলেই সিজার করতে পারে তাতে রাজি হয়ে যাবেন।

একদম সত্য একটা ঘটনা বলি,আমার এক ছোট ভাইয়ের আত্নীয়ার জীবনে এটা ঘটেছে।চট্টগ্রামের এক ক্লিনিকের ঘটনা।সেই ভদ্রমহিলা ক্লিনিকে ভর্তি হতেই তারা যথারীতি রাস্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত হয়ে আদালতের সুয়োমটো রুল অনুযায়ী স্বতঃ প্রনোদিত হয়ে(সিজারের জন্য প্রায়ই ডাক্তাররা সুয়োমটো রুল অনুযায়ী স্বতঃপ্রনোদিত হন) উনাকে সিজারের জন্য প্রস্তুত হতে বললেন।কিন্তু রোগী স্বয়ং বললেন যে,দেখেন আমার মনে হচ্ছে,আমার নরমালই হবে ।আমি তো কোন অসুবিধা ফিল করতেছি না,জাস্ট আজ দুইদিন বাচ্চার মুভমেন্ট টের পাচ্ছি না। এরপর যেকোন কারনেই হোক,ডাক্তারদের আসার দেরীতে বা বিদ্যুৎ এর গোলযোগে অপারেশন টাইম পিছিয়ে যায়।আর ডাক্তার ,নার্স ও ক্লিনিকের সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে বাচ্চা নিজেই পৃথিবীতে পদার্পন করেন।

আল্লাহর অসীম মহিমায় সে মাতৃ-গর্ভেই টের পায় যে,তার বাবার টাকা শ্রাদ্ধ করার এক সুগভীর চক্রান্ত হচ্ছে।ফলে সে পুরো পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়।ক্লিনিক সংশ্লিস্ট সবার চেহারায় বিরক্তির ছাপ একে দেয়।দোয়া করি এ ছেলে যেনো ভবিষ্যতে রাস্ট্রের মহাহিসাব-নিরীক্ষক হয়।

ঈসপের গল্পের আধুনিক পরিনতি।

কোথায় যেনো কৌতুকটা শুনেছিলাম।

পোলা ইদানিং ইয়াবা-হিরোইনখোর বদমাশ পোলাপাইনের সাথে ঘুরতেছে দেখে বাপে দুঃশ্চিন্তায় বাঁচে না।তাকে একটা হাতে কলমে শিক্ষা-দেওয়ার জন্য রাস্তা থেকে একটা পঁচা আম যোগাড় করে দোকান থেকে ১ কেজি ভালো আম এনে সেগুলোর সাথে রেখেছে।উদ্দেশ্য পঁচা আমের সাথে থেকে কিভাবে ভালো আমও পঁচে যায় তা বুঝানো।

কিন্তু দুইদিনেও ভালো আমগুলা পচে নাই,উল্টা খারাপটায় আরো যেটুকু পচার কথা ছিলো,সেটা যেনো থেমে গেলো।বাবা বুঝলো,শুয়োরের বাচ্চা দোকানি গুলো ফরমালিন দেয়াই এটা ঘটেছে।রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে সবগুলো আম নিয়ে গিয়ে দোকানির মুখে নিক্ষেপ করে বাবা বলেছে,তোদের জন্য পোলাপাইন্দের যে একটা শিক্ষা দিবো,তারও কোন উপায় নাই।

স্টালিন ও তার শুদ্ধি অভিযান( দ্য গ্রেট পার্জ)।

লেনিনের মৃত্যুর অব্যাবহতি পরই স্টালিন ১৯২৪ সালে সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির দায়িত্ব নেয়।এর পর সে ১ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ,২য় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা পর্যন্ত তার প্রতিপক্ষদের প্রতি কিছুটা রক্ষনশীল ভুমিকায় অবতীর্ন হন।কেননা,তার তখন ব্যস্ত থাকতে হয় বিভিন্ন প্রতিবিপ্লবী,কমিউনিস্ট বিরোধী সংগঠন গুলোর বিরুদ্ধে,গৃহযুদ্ধের বিরুদ্ধে।এর পাশাপাশি চলছিলো বিভিন্ন স্বায়ত্বশাসিত দেশগুলোর সোভিয়েতি করন।১৯২৪ থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে স্বায়ত্বশাসিত মধ্য এশিয়ার উজবেকিস্তান,কাজাখস্তান,কিরগেজিস্তান,তাজিকিস্তান,তুর্কমেনিস্তান,আজারবাইজান,আরমেনিয়া,জর্জিয়া,ইউক্রেন,মোলদাভিয়া,বেলোরুশিয়া,এস্তোনিয়া সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক দেশে রুপান্তরিত হয়।

স্টালিনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি নিধন অভিযানের সর্বপ্রথম ধারনা পান ট্রটস্কি।তিনি সোভিয়েত দেশ থেকে পালিয়ে মেক্সিকো চলে যান।কিন্তু লাভ হলো না,১৯৪০ সালে শুদ্ধি অভিযানের সমাপ্তি পর্বে তিনি মেক্সিকোতেই লাইব্রেরীতে আততায়ীর হাতে প্রান হারান।তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত হানা হয়।প্রাক শুদ্ধি অভিযান প্রকৃতপক্ষে ১৯৩২ সালের পরই শুরু হয়।এবং তা চালানো হয় কমিউনিস্ট পার্টি,লাল ফৌজ ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অভ্যন্তরে।আক্রান্তদের অভিযুক্ত করা হতো প্রতি বিপ্লবী ও জনশত্রু হিসেবে।প্রবর্তন করা হয় আর্টিকেল ৫৮ ধারা,এই কালাকানুনই স্টালিন মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত বিপুল লোকের প্রানহানী ঘটায়।অদ্ভুত হলেও সত্য,ম্যাক্সিম গোর্কি ও লেনিন স্ত্রী নাদেজদা স্ক্রপস্কায়া পর্যন্ত আমৃত্যু গৃহবন্দী ছিলেন।ট্রটস্কি পালিয়ে যাবার পর লেনিন গ্রাদের জনপ্রিয় কমিউনিস্ট নেতা সার্গেই কিরভ অত্যান্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠে।কিন্তু ১৯৩৪ সালে তাকে লেনিন-গ্রাদের স্মোলনি ইন্সটিটিউটে আততায়ী গুলি করে হত্যা করে।এটা পরিস্কার ছিলো কাজটা স্টালিনের।কিন্তু স্টালিন এর দায় দেয় তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের।স্টালিন নিজে কিরভের কফিন বহন করে সবাইকে বুঝায় যে,তিনি কি মর্মাহত!

বলা যায়,কিরভ হত্যার পরই স্টালিনের গ্রেট পার্জ বা শুদ্ধি অভিযানের ডেব্যু হয়।এর পর ১৯৩৫ সালে লাল ফৌজে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়।সে সময় সোভিয়েত ফৌজে ৫ জন মার্শাল ছিলেন।এরা হলেন মিখাইল তুখাচেভস্কি,আলেকজান্দার ইলিচ ইয়েগরভ,ভাসিলি কন্সটানটিনোভিচ ব্লিউখের,সেমিওন বুদিউন্নী ও ক্লাইমেন্ট ভরোশিলভ।এদের মধ্যে মিখাইল তুখাচেভস্কি ছিলো সে সময়ের সবচেয়ে মেধাবি মার্শাল।তার সেনাবাহিনীকে মেকানাইজড করার সুত্র স্বয়ং জার্মান সেনাবাহিনী অনুসরন করতো।তিনি ত্রিশের দশকেই স্টালিনকে সেনাবাহিনীকে দ্রুত মেকানাইজড ও ভারী আর্টিলারীতে সজ্জিত এবং ট্যাংক বাহিনী সজ্জিত করার উপ জোর দেন।কিন্তু স্টালিন তার অনুগত সেমিওন বুদিওন্নী ও ক্লাইমেন্ট ভরোশিলভের কথাই বেশী শুনতেন।বুদিওন্নী আগের কনভেনশনাল অশ্বারোহী কোরের প্রতি দূর্বল ছিলেন।তিনি আমাদের মীর শওকত আলীর মতো বড় গোঁফের অধিকারী ছিলেন,আর বেশীর ভাগ সময় সামরিক কুচকাওয়াজের জন্য সুর রচনা করতেন।আবার ঘোড়ার উন্নত প্রজাতির সংকর প্রজননেও ব্যস্ত থাকতেন।রাশিয়ায় বুদিওন্নী হর্স নামে এক প্রজাতির ঘোড়া তারই সৃস্ট।ভরোশিলভ ও স্টালিনের প্রিয়-পাত্র ছিলেন।আমার একটি ব্যক্তিগত ধারনা,লম্বা মোঁচওলা আর্মি অফিসার কোন কাজের না,এরা মোঁচের যত্নেই ব্যস্ত থাকে।উদাহরন আজকের যুগেও খাটে।

স্টালিন মার্শাল তুখাচেভস্কির সেনাবাহিনীর যান্ত্রিকিকরনকে অবজ্ঞা করলেও নাৎসি জেনারেল হাইন্স গুডেরিয়ান আর মান্সটাইনরা তা লুফে নেয়।তুখাচেভস্কি ত্রিশের দশকেই বলে দেয়,ভবিষ্যতের স্থলযুদ্ধ হবে দ্রুত গতির।বিভিন্ন মেকানাইজড কোর,ট্যাংক বাহিনী ও ভারী আর্টিলারীর দ্রুত প্রয়োগই যুদ্ধের মোড় ঘুরাবে।যেটা জার্মান বাহিনী তাদের পানজার বাহিনী গঠন করে দেখিয়ে দেয়।১ম বিশ্বযুদ্ধের পরিখা যুদ্ধের অবসান ঘটাবে এই ব্লিতসক্রিগ বা বিদ্যুৎ গতির যুদ্ধ।স্তালিন শুধু তুখাচেভস্কিকে তার মতবাদের জন্য শাস্তিই দেননি,বরং যারা এ মতবাদের পক্ষে ছিলো তাদেরও গোয়েন্দা পর্যবেক্ষনে রাখেন।পরবর্তীতে মার্শাল রকসসভস্কি পর্যন্ত এ সন্দেহের মধ্যে ছিলেন।তিনি ২য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে এ থেকে অব্যাহতি পান।স্টালিন ১৯৩৫-৩৯ এর মধ্যে মিখাইল তুখাচেভস্কি,আলেকজান্দার ইলিচ ইয়েগরভ,ভাসিলি কন্সটানটিনোভিচ ব্লিউখের এদের হত্যা করে।এদের জায়গায় নতুন ৩জন মার্শাল নিয়োগ পায়,এরা হলেন মার্শাল সেমিওন তিমোশেঙ্কো,বরিশ সাপোস্নিকভ ও গ্রিগরী কুলিক।সাপোস্নিকভ ও কুলিককে পরবর্তীতে হত্যা করা হয়।

সেমিওন তিমোশেঙ্কো আর মার্শাল বুদিওন্নী ১৯৪১ সালে জার্মান নাজি বাহিনী দন আর নিপার এর পশ্চিম পাশ ও দক্ষিন পাশ দখল করে নিলে স্তালিন কতৃক ডিসমিস হন।নতুন মার্শাল হন গেওর্গি জুকোভ,ইভান কনেভ ও কন্সতানভিচ রকসসভস্কি।এ তিনজন স্বাভাবিক ভাবেই ভাগ্যক্রমে মরতে পেরেছিলো।

এবার আবার শুদ্ধি অভিযানে ফিরে আসি।১৯৩৭ সালে স্তালিন তার প্রতিপক্ষদের ১ম পর্যায়ে ১৬ জনকে হত্যা করে।এদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো,গ্রিগরি জিনোভিয়েভ ও লেভ কামানেভ।এদের ট্রটস্কির সাথে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মারা হয়।২য় পর্যায়ে ১৭ জনকে মারা হয়।এদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো,কার্ল রাদেক,ইউরি পিয়তাকভ ও গ্রিগরি সকলনিকভ।এভাবে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত প্রচুর প্রতিভাবান বিজ্ঞানী,উদ্যানবিদ,কবি,সুরকারদের শুদ্ধি অভিযানের শিকার হতে হয়।

শুদ্ধি অভিযান চালাতো সোভিয়েত এনকেভিডি(কেজিবির আগের প্রতিস্টান)।অদ্ভুত যে,এনকেভিডি প্রধান নিকোলাই ইয়েজব প্রচুর নিরীহ লোককে হত্যা করার পর ১৯৩৯ সালে স্টালিনের নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়।এর পর এর দায়িত্বে আসে,কুখ্যাত লাভরেন্তি বেরিয়া।যিনি তার পদে বহাল ছিলেন স্তালিন মরার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত।এর পরেই অবিলম্বে তাকে হত্যা করা হয়।

শুধুমাত্র ২য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলেই এ শুদ্ধি অভিযান বন্ধ হয়।যুদ্ধ শেষ হলেই আবার শুরু হয়,যা ১৯৫০ সাল পর্যন্ত চলে।এসময় বিপুল লোক ও সৈন্য যারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেছে,তাদের ও বিভিন্ন সন্দেহমুলক কার্যক্রমে বিভিন্ন শ্রমশিবির ও গুলাগে প্রেরন করা হয়।এসময় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর লোকদের এন্টি কমিউনিজম আখ্যা দিয়ে সাইবেরিয়ায় নির্বাসন দেয়া হয়।ধারনা করা হয়,প্রায় কোটির কাছাকাছি মানুষ গ্রেট পার্জ বা শুদ্ধি অভিযানে নিহত হয়।স্তালিন ২৯ বছর প্রবল প্রতাপে সোভিয়েত দেশ চালান।একমাত্র মৃত্যুতেই তিনি ক্ষমতা হারান।শুরু হয় ডি-স্তালিনাইজেশেন,স্তালিনের পক্ষের লোকদের বন্দী ও হত্যাকরন।এটি চলে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত।তথাপি স্টালিন ছিলেন বিংশ শতাব্দির সফল সমরনায়ক।তার ঠান্ডা মাথার নেতৃত্বতেই জার্মান ফ্যাসিবাদের কবর রচনা হয়।

চেঙ্গিস খান।

চেঙ্গিস খান নিজে পরাক্রান্ত শাসক ছিলেন সত্য,কিন্তু অনেকেই যেটা জানে না তা হলো তার কয়েকজন উৎকৃষ্ট সেনাপতি ছিলো যারা বীরত্বে,ধুর্ততায় আর নিষ্ঠুরতায় তার সমকক্ষই ছিলেন।এক চোখ কানা সুবুদাই

বাহাদুরের কথাই বলা যাক,সে ছিলো চেঙ্গিসের ডান হাত।তারা দুজনেই একই উপজাতির,দুজনেই অনোন নদীর পারে মঙ্গোলিয়ায় জন্মেছেন।সুবুদাই সবচেয়ে কুখ্যাত।তার ধুর্ততা ও নিষ্ঠুরতার কোন সীমা ছিলো না।সে

ভালো চোখটা দিয়ে কোন উচু একটা পাহাড় বা গাছে চড়ে শত্রুকে লক্ষ্য করে নিজের মতো করে একটা সমর পরিকল্পনা করতো।বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই যা লক্ষ্য হিসেবে অব্যর্থ্য হতো।অনেকটা সাপের মতো ঠান্ডা

মেজাজে থেকে হঠাত করে ছোবল হানতো।আর চেঙ্গিসের অন্য সেনাপতিদের জন্য চ্যালেঞ্জ রেখে যেতো,কিন্তু অন্যরা কখনো তাকে টক্কর দিতে পারেনি।যুদ্ধে যাওয়ার কালে সে কখনোই ভরাপেটে যেতো না,এবং

যোদ্ধাদেরও তাই করতে নির্দেশ দিতো।তারমতে ভরাপেটে যোদ্ধার ক্ষিপ্ততার ধার কমে যায়।আলস্য শরীরে ভর করে।সে নিজে যুদ্ধে যাওয়ার প্রাক্কালে তাবু থেকে বের হয়ে এসে তার বাহিনীর দিকে তাকিয়ে

থাকতো।এসময় তার কাছে একটি সাদা ঘোড়া আনা হতো।সে ওটার ঘাড়ে ছোট একটা ছিদ্র করে সেখানে মুখ লাগিয়ে ওটার রক্ত পান করতো,তারপর কিছু রক্ত তার মুখে মেখে একটা হুংকার দিতো।সেটাই যুদ্ধ

শুরু করার তার ইশারা।

শেষ বয়সে সে চেঙ্গিসের নির্দেশে বড় ছেলে জুচির কাছে চলে যায়,জুচি আততায়ীর হাতে নিহত হলে(অনেকেই মনে করেন এতে চেঙ্গিসের হাত ছিলো,কারন জুচি প্রায়ই তার বাবার সিদ্ধান্তের উলটো কাজ করতো)তার

ছেলে বাটুর শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেয়।একেবারে পরিনত বয়সে তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়।

দ্বিতীয় জন ছিলো জেবে নোইয়ন।একেবারে কমবয়সী(২০-২২ বছর)এ সেনাপতি ছিলেন একেবারে ডাকাবুকো।সে চেঙ্গিস ছাড়া কারো কমান্ড মানতো না।সুবুদাই ও জেবে নোইয়ন এই দুই জনের হাতেই বলতে গেলে

পুরো এশিয়া ধবংস হয়।সুবুদাইয়ের শয়তানি বুদ্ধি আর জেবের বল্গাহারা সাহস এই দুইয়ের মুখোমুখি হওয়ার মতো বাহিনী বলতে গেলে সেই আমলে ছিলো না।জেবেকে চেঙ্গিস যেভাবে পায় তা হলো,জেবের ১৩-১৪

বছর বয়সে চেঙ্গিস জেবের উপজাতির লোকদের লুট করে তাদের সবাইকে হত্যা করে।কিন্তু হঠাত করে একটা অবর্থ্য তীর এসে চেঙ্গিসের ঘাড়ে বিদ্ধ হয়।চেঙ্গিস মরতে মরতে বেঁচে যায়।কিন্তু জেবের উপজাতির

জীবিত বন্দীদের কেউ স্বীকার করে না কে এটা নিক্ষেপ করেছে।তাই চেঙ্গিস তাদের সামনে এনে বলে,বলো তো তোমাদের মধ্যে কে এতো নিঁখুত করে তীর ছূড়তে পারে,যেটা আমার ঘোড়ার ঘাড়ে বিদ্ধ হয়।তখন

কিশোর জেবে বলে,সেটা আপনার ঘোড়া নয়,আমিই আপনার ঘাড়ে তীর মেরেছি।কিন্তু আপনি যদি আমার প্রান ভিক্ষা দেন তাহলে আমি আমৃত্যু আপনার সেবা করে যাবো।চেঙ্গিস বীরত্ব পছন্দ করতেন।তখনই

সুবুদাইকে ডেকে তার হাতে জেবে নোইয়নকে তুলে দেন।পরবর্তী জীবনে জেবে তার বীরত্বের প্রমান রেখেছিলো।কিন্তু চেঙ্গিসের মৃত্যুর বছরই সে এক অভিযানে নিহত হয়।জেবের নামের অর্থই হলো তীর। আরেকজন ছিলো,তখুচার নোইয়ন।সেও জেবের

পড়ে নাম করেছিলো।

সুবুদাই,জেবে নোইয়ন এদের দ্বারাই সমগ্র মধ্য এশিয়া ধবংস হয়।এরা তখনকার সমরকন্দ,বুখারা মাটিতে মিশিয়ে খোরেজম শাহর রাজধানী উরগঞ্জে হাজির হয়।আমু দরিয়ার বাধ ভেঙ্গে উরগঞ্জকে প্লাবিত করে ধবংস

করা হয়।সেখান থেকে সুবুদাই আর জেবে আজকের তুর্কমেনিস্তান হয়ে ইরানের কাজবিন হয়ে আজার বাইজানের মধ্যে দিয়ে আর্মেনিয়া হয়ে পুরো কাস্পিয়ান ঘুরে গিয়ে উত্তর পুব মোড় নিয়ে আবার মধ্য এশিয়ার

স্তেপে ফিরে আসেন।আর বলাবাহুল্য পুরো ভ্রমনে তারা সমস্ত লোকালয়কে মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে যান।তাদেরকে পশ্চিমে পাঠিয়ে চেঙ্গিস তখুচারকে নিয়ে পুবে একেবারে তের্মেজের কাছে আমু দরিয়া পেরিয়ে খোরেজম শাহ

মোহাম্মদের পুত্র জালাল উদ্দীনকে ধরতে আফগানিস্তানে ঢুকে পড়েন।জালাল তখন বীরের মতো এখানে সেখানে গেরিলা আক্রমনে মঙ্গোলদের ব্যতিব্যস্ত করে তুলছিলেন।একেবারে সিন্ধু নদীর ধারে এসে চেঙ্গিস তার

অভিযানের রাশ টেনে ধরেন।কারন জালাল তার চোখের সামনে উচু পাহাড় থেকে সিন্ধুতে ঘোড়াসহ ঝাপিয়ে পড়ে অপরপাশে গিয়ে পৌছান।সেখান থেকে তাকে তরবারি উচিয়ে ইশারা দেন,বেঁচে থাকলে সে আবার

এসে মঙ্গোলদের খতম করবে।কিন্তু সেই সুযোগ আর আসে নাই।জালাল অনেক বছর পর আজারবাইজানের কাছে দিয়ারবাকী আততায়ীর হাতে নিহত হন।

ওদিকে সুবুদাই আর জেবে ও যুদ্ধে হেরে পালিয়ে যাওয়া খোরেজম শাহ মোহাম্মদকে আর খুজে পায়নি।তারা আশাহত হয়ে চেঙ্গিসকে খবর পাঠায় তারা আর কতটুকু যাবে?চেঙ্গিস ক্রুদ্ধ হয়ে জবাব পাঠায়,খুজে না

পেলে তাদের আসার দরকার নাই।এতে তারা আরো যতোবেশী খুজে ততো জনপদ ধবংস হতে থাকে।শাহ মোহাম্মদ পলাতক থাকা অবস্থায় কাস্পিয়ান সাগরের এক দ্বীপে মারা যায়।এজন্যই তারা তাকে খুজে

পায়নি।কারন তিনিও জানতেন মুল ভুখন্ডে থাকলে তার আর রক্ষে ছিলো না।অবশেষে চেঙ্গিসের রাগ কমে,কারন তিনি নিজে ও তার বাহিনীও দীর্ঘ রনযাত্রায় ক্লান্ত হয়ে মঙ্গোলিয়া ফিরতে চায়।সুবুদাই আর জেবেকেও

বলা হলো,স্তেপ পেড়িয়ে মঙ্গোলিয়া আসার জন্য।এরপর পরবর্তী ১৫০ বছর পর্যন্ত মঙ্গোলরা তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছিলো।

বার্লিনের জন্য যুদ্ধ।

১৯৪৫ সালের ১৯ শে এপ্রিল।১ম বেলোরুশিয়া ফ্রন্টের সৈন্যরা শেষমুহুর্তের নির্দেশের অপেক্ষায়।এর মধ্যেই সোভিয়েত আর্টিলারী তাদের কাতিউশা ভারী কামানগুলোকে বার্লিনের পুবে শিয়ালো হাইটস এ স্থাপন করে ফেলেছে।এখান থেকে বার্লিন এখন সম্পুর্ন কামানের আওতায়।পুর্ব রনাঙ্গনে জার্মান বাহিনীর আর কার্যত অস্তিত্ব নেই।মার্শাল গেওর্গি জুকোভ আজ রাতেই একমাত্র টিকে থাকা আড়াই লক্ষাধিক জনবলের বার্লিন গ্যারিসনকে শেষ সিদ্ধান্ত ও তাদের নিয়তি জানাবেন।

ইতিমধ্যেই মার্শাল ইভান কনেভের ১ম ইউক্রেনীয় বাহিনী বার্লিনকে হাতের ডানদিকে রেখে পশ্চিমের দিকে গিয়ে বার্লিনের ২০ কিঃ মিঃ পশ্চিমে ধনুকের মতো একটা বেস্টনি টেনে দাড়ায়।সেখানে তিনি মিলিত হন ২য় বেলোরুশীয় বাহিনীর মার্শাল রকসভস্কির সৈন্যদের সাথে,যিনি আবার বার্লিনকে হাতের বামে রেখে গিয়ে কনেভের সাথে মিলিত হন।এভাবেই বেস্টনি সম্পুর্ন সিলড হয়ে যা্য।এর মধ্যে রকসভস্কির অগ্রবর্তী দল বাল্টিক সমুদ্রের পাড়ে সবার আগে পৌছে।তারা বাল্টিকের নীল জল বোতলে পুরে তাদের অধিনায়ক রকসভস্কিকে উপহার পাঠায়।তিনি এটি সরাসরি স্টালিনকে পাঠিয়ে দেন।

রাতেই বার্লিন গ্যারিসনের অধিনায়ক হেলমুট ওয়েল্ডিং কে চরমপত্র পাঠানো হয়।তাকে নিঃশর্ত আত্ন-সমর্পনের নির্দেশ দেয়া হয়,কিন্তু সে বলে পাঠায় যেহেতু হিটলার আত্ন-সমর্পনের জন্য কোন নির্দেশ রেখে যায় নি।ফলে তার পক্ষে এটা মানা সম্ভব নয়।বস্তুত এটা শুধু হিটলারের একগুয়েমীর ব্যাপার নয়,হেলমুট ওয়েল্ডিং পুরো জাতির জন্য একটা শেষ সুযোগ হারালেন।২০ এপ্রিল,১৯৪৫ ভোর ৪টা থেকে জুকোভের নির্দেশে কাতিউশা কামান শেলিং শুরু করে।দিনের শুরুতেই সোভিয়েত ফৌজ বার্লিনের বিভিন্ন দিক দিয়ে প্রবেশ শুরু করে।আড়াই লক্ষাধিক সৈন্যের বার্লিন গ্যারিসন অত্যান্ত মরিয়া হয়ে প্রতিরোধ দিচ্ছিলো।যার ফলে যুদ্ধ আক্ষরিক অর্থেই কঠোর হাতাহাতি লড়াইয়ে গিয়ে দাড়ালো।জার্মান সেনারা প্রতিটি রাস্তা,বাড়ীর জন্য লড়ছিলো।হতাহতের পরিমান ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়ায় দু-পক্ষেরই।বিজয়ের এই শেষ মুহুর্তে সোভিয়েত বাহিনীর জন্য এটা অত্যান্ত বেদনাদায়ক হয়ে দাঁড়ায়।

৩০ শে এপ্রিল,১৯৪৫,প্রতিরোধ যুদ্ধ পুরোপুরি থেমে যায়।বার্লিন গ্যারিসন সম্পুর্ন ধবংস হয়ে যায়।ইতিমধ্যেই বেস্টনির ভেতরের জার্মান সৈন্যদের চারটি ভাগে ভাগ করে অংশে অংশে বিলোপ সাধন বা মপিং অফ করা হয়।এই নির্দেশের পর শত্রুসৈন্য আর জীবিত রাখা হয় না।এদিন সোভিয়েত সৈন্য রাইখস্টাগ ভবন দখল করে।জর্জিয়ান ভেটেরান মেলিন্টন কান্তারিয়া ফ্যাসিবাদের ঈগলের চিহ্ন ও জার্মান পতাকা নামিয়ে সোভিয়েত পতাকা উত্তোলন করেন।সোভিয়েত ৮ম গার্ড বাহিনীর অধিনায়ক ভাসিলি চুইকভের সৈন্যদের হাতে হেলমুট ওয়েল্ডিং বন্দী হন।তাকে নির্ধারিত সময়ে আত্ন-সমর্পন না করে ক্ষয়-ক্ষতি বাড়ানোর জন্য সিদ্ধান্ত নেয়ায় মস্কোতে পাঠানো হয়।তিনি আরা কখনো জীবিত ফিরতে পারেননি।মুর্মানস্কের কাছে বন্দীশিবিরে ১৯৫৫ সালে তিনি মারা যান।

বিপুল সংখ্যক জার্মান পুরুষ বন্দী হয়ে রাশিয়া যায়।তাদের খুব কম সংখ্যকই ১০ বছর পর জীবিত ফিরতে পেরেছিলো।জার্মানি চরম পুরুষ সংকটে পড়েছিলো,কেননা সক্ষম পুরুষদের বৃহত্তর অংশ যুদ্ধে ও বন্দীশিবিরে নিহত হয়েছিলো।

মোহাম্মদ আলী ক্লে।

সর্বকালের সেরা মুস্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী শুধু সেরা লড়িয়েই ছিলেন না,তিনি উপস্থিত জবাবের জন্য বেশ দক্ষ ছিলেন।সাংবাদিকদের জায়গায় হাসিয়ে ফেলতেন।১৯৬৭ সালে আমেরিকা তখন পুরোদমে ভিয়েতনামে লড়ে যাচ্ছেন।মরছেও সমানে সমান।প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন দেশজোড়া ব্যাপক সৈন্যযোজন চালাচ্ছেন।এই প্রচারনার ধাক্কা তিনি খেলাধুলায় এনে ফেললেন।

সেরা মুস্টিযোদ্ধা হিসাবে তিনি মোহাম্মদ আলীকে চাইলেন দেশের যুবকদের কাছে যুদ্ধে নামার আহবান জানাতে।প্রস্তাব শোনামাত্র মোহাম্মদ আলীর ঘৃনা ভরে প্রত্যাখান।তিনি তারা ঐতিহাসিক ডায়লগটি দিলেন- কেনো আমি ভিয়েতনামীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাবো।তোমরা আমাকে নিগার বলো,কই তারা তো কোনদিন আমায় নিগার বলেনি।

এর ফলে আলীকে ৬ বছর ইচ্ছাকৃতভাবে রিং এর বাইরে একঘরে করে রাখা হয়।১৯৭৩ সালে তিনি আবার রিং এ ফিরেন।সেরা ক্রীড়াবিদেরা সবসময় হোয়াইট হাউসে ডিনারের দাওয়াত পায়,এটা মার্কিন মুল্লুকের রীতি।কিন্তু মোহাম্মদ আলী কোনদিন এই দাওয়াত পায়নি।

১৯৭৫ সালে জায়ারের প্রেসিডেন্ট মবতু সেসে সিকো তাকে কিনশাসা প্রেসিডেন্ট প্যালেসে দাওয়াত দেন,কারন কিনশাসায় উনি হেভিওয়েট লড়াইয়ের জন্য গিয়েছিলেন।যারা জায়ারের প্রেসিডেন্ট প্যালেস দেখেছেন,তারা জানেন এটা হোয়াইট হাউস থেকে শতগুনে সেরা,পুরোটাই শ্বেত পাথরে গড়া।মবতু তাকে ডিনারে আমন্ত্রন জানানোর জন্য যখন এগিয়ে এলেন,মোহাম্মদ আলী বললেন,আমি আপনার কাছে অত্যান্ত কৃতজ্ঞ।আমার নিজ দেশের হোয়াইট হাউসে আমি কখনো নিমন্ত্রিত হয়নি,কিন্তু আপনার ব্ল্যাক হাউসে আপনি আমায় নিমন্ত্রন করলেন।সবাই হেসে উঠেছিলো।

দুটি মাঝ রাতের কৌতুক।

ঘুম আসতেছে না।মাঝরাতে দুইটা জানা কৌতুক বলি।

আফ্রিকার এক গহীন অরন্যে গত শতকের শুরুর দিকে দুই মিশনারী পাদ্রী যেয়ে হাজির।তারা যেখানে গেছে সেখানের উপজাতিরা আগে কখনো শ্বেতাঙ্গ লোক দেখে নাই।পাদ্রীরা দেখলো,সব কিছুর আগে প্রধান সমস্যা হলো এরা উলঙ্গ থাকে।তারা ঠিক করলো আগে এই ব্যাপারটা ঠিক করবে তারপর ধর্মপ্রচার।

পাদ্রীরা বললো,দেখো তোমরা যেভাবে উলঙ্গ থাকো,এটা উচিত না পাপ।ইশ্বরের পছন্দ নয় এভাবে থাকা।উপজাতি সর্দার বললো,পাপ কি?অতএব পাদ্রীদের পাপ সম্পর্কে একটা ধারনা দিতেই হলো।পাদ্রীরা বললো,তাহলে তোমরা তো বুঝেছোই যে,উলঙ্গ থাকা পাপ।

সর্দার বললো,তাহলে ফাদার এতোদিন কি আমরা পাপই করে এলাম?ফাদার বললো,সেটা তোমাদের দোষ নয়।তোমরা জানতে না ব্যাপারটা,তাই সেটা পাপ ছিলো না।

সর্দার বললো,তাহলে আমরা তো বেশ ভালোই ছিলাম,তোমরা বাল এসব আমাদের কেন জানাতে এলে?

এবার দ্বিতীয়টা-

সেবার উপজাতি সর্দারের ১১তম সন্তান হলো।কিন্তু সর্দার সহ গ্রামের অন্যরা অত্যান্ত অবাক।কারন বাচ্চা অন্যগুলোর মতো কালো হয় নি।একটু লালচে।সবার মাঝে একটা জানা জানা ভাব।একটু বেয়ারাটাইপ কিছু যুবক কয়েকবার সর্দারকে জিজ্ঞেসই করে ফেললো,পাদ্রী বাবারা আর কয়দিন গ্রামে থাকবে?

সর্দারের আর সহ্য হলো না।এসব টিপ্পনি মার্কা কথা কাঁহাতক সহ্য করা যায়।সেকি আর বুঝতেছে না এরা কি বলতে চায়।আশ্চর্য যে,এসব গাঁ জ্বলুনি খোচানে কথাও আগে গ্রামে প্রচলিত ছিলো না।এই পাদ্রীরা গায়ে জামা-কাপড় ধরানোর পর থেকে এগুলোর আবির্ভাব।সেকি আর বুঝে না যে,এই কালো মাগুর মাছের ঝাঁকে এই লালচে তেলাপিয়া কোনখান থেকে আসছে?

রেগেমেগে সর্দার পাদ্রীদের ধরে গ্রামে আনলো।জিজ্ঞেস করলো,ফাদার সোজাসুজি উত্তর দিন,আমার এই সন্তানের কালার এমন কেনো?

ফাদার বললো,দেখো এই মহাবিশ্বের রহস্যের আমরা কি জানি?এটা ইশ্বরের মাহাত্ব্য।
দেখো সর্দার তোমাকে একটা উদাহরন দিই।এই যে,তোমার সাদা ছাগল ও সাদা ছাগী ,এই দুইটার বাচ্চাগুলো তো সাদাই হওয়া উচিত ছিলো।কিন্তু দেখো সব কালো।

সাথে সাথে সর্দার ফাদারের মুখ চেপে ধরে একপাশে নিয়ে যেয়ে বললো,ফাদার থাক,যা হবার হয়েছে,মহাবিশ্বের রহস্য জাহান্নামে যাক।আমি আপনারটা কাউকে বলবো না,আপনিও আমারটা কাউকে বলবেন না।

সম্রাট আকবর ও মুসলমানী প্রসঙ্গ।

ইতিহাসের এইদিনে এই ভ্যালেন্টাইন ডে তে ১৪ ফেব্রুয়ারী,১৫৫৬ খ্রীঃ সম্রাট আকবর ১৪ বছর বয়সে দিল্লীর সিংহাসনে আসীন হন। ভ্যালেন্টাইন ডে তে সম্র...