বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১১

ছিটমহল-২

ফজলুস্ সাত্তার
বাংলাদেশের ছিটমহলের অধিবাসীর জীবন রাষ্ট্রহীন জনগোষ্ঠীর চেয়েও করুণ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কুচবিহার জেলা পরিবেষ্টিত ছিটমহলগুলোর অধিবাসী বাংলাদেশের নাগরিক হলেও অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এদের কথা ভুলে আছে এদেশের রাষ্ট্র সরকার। প্রকৃত অর্থে এরা পরিণত হয়েছেন নিজদেশে পরবাসী এবং রাষ্ট্রহীন নাগরিকে। তাদের না আছে রাষ্ট্র এবং সংবিধানস্বীকৃত নাগরিক মৌলিক অধিকার, না আছে মানবিক নিরাপত্তা আর না আছে আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত মানবাধিকার। অর্থাৎ ছিটমহলবাসীর জীবন হচ্ছে অধিকারহীন বঞ্চনার এক করুণ অধ্যায়
১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভক্তির পর থেকে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যকার এই ছিটমহল সমস্যার সূত্রপাত ১৯৪৯ সালে গভর্নর জেনারেল অব দ্য ইন্ডিয়ার সঙ্গে কুচবিহার মহারাজার চুক্তির ফলে ১৯৫০ সালে করদরাজ্য কুচবিহার ভারতভুক্ত হয়। সময় কুচবিহারের ১১১টি ছিটমহল ভারত তার অধিভুক্ত করে। যদিও এগুলোর অবস্থান বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডের অভ্যন্তরে। তেমনিভাবে ৫৩টি ছিটমহল বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়। যদিও এগুলোর অবস্থান ভারতের মূল ভূখন্ডের অভ্যন্তরে
মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার : ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত বাংলাদেশী ছিটমহলের অধিবাসী প্রতিনিয়ত মোকাবিলা করছেন চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের। বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তাদের সামগ্রিক দৈনন্দিন জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয় ভারতের বিএসএফ ভারতের বেসামরিক লোকজন দ্বারা। ভারত দ্বারা পরিবেষ্টিত হওয়ায় বিএসএফ তাদের কড়া নজরদারিতে রাখে, বাংলাদেশে যাতায়াতে বাধা দেয়। কেউ মূল ভূখন্ডে প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করলে তাদের গ্রেফতার করা হয়। চালানো হয় নির্যাতনসহ নানা হয়রানি। এমনকি অসুস্থ মা-বাবাকে দেখার জন্যও অনুমতি পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের ভূখন্ড হওয়া সত্ত্বেও সেখানে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের। বাজার-সওদার জন্য ব্যবহার করতে হয় ভারতীয় মুদ্রা। নিজেদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যও বিক্রি করতে পারেন না ন্যায্য বাজারমূল্যে। তারা যেমনি বিএসএফের বাধার কারণে মূল ভূখন্ডে আসতে পারছেন না, তেমনি যেতে পারছেন না ভারতের হাটবাজারেও। তাই মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে তারা বাধ্য হচ্ছেন অর্ধেক দামে ধান-পাট বিক্রি করতে। তার ওপর রয়েছে বিএসএফসহ ভারতীয়দের নানা জুলুম। এই জুলুম-নির্যাতনের ভয়ে অধিকাংশ ছিটমহলের নারীরা সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের হন না। রয়েছে মাস্তান-সন্ত্রাসীদের উপদ্রব। যখন-তখন ছিটমহলে অনধিকার প্রবেশ করে নানা উপলক্ষে চাঁদা দাবি করা হয়। লুট করা হয় গরু-ছাগল, মাছ। কেটে নেওয়া হয় ধান-পাট, গাছ। কোনো বাধা এলেই চলে বিএসএফ ইন্ডিয়ান সন্ত্রাসীদের যৌথ তান্ডব। অপরাধী ধরার নামে বিনাবিচারে আটক করা হয় এখানকার বাসিন্দাদের। নারী শিশু নির্যাতন এবং অপহরণের মতো ঘটনাও নিত্যদিনের ব্যাপার। এর ওপর আবার রয়েছে সীমান্তে উত্তেজনার খড়গ। কারণ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কোনো উত্তেজনা দেখা দিলেই তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এই ছিটমহলসমূহে। উদাহরণস্বরূপ রৌমারী সীমান্ত সংঘর্ষের কথা বলা যায়। ওই সময় মশালডাঙ্গার অনেক ঘরবাড়িতে ইন্ডিয়ানরা আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে প্রায় হাজার লোক জীবন বাঁচাতে মূল ভূখন্ডে পালিয়ে আসেন
নিজদেশে পরবাসী : ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত ছিটমহলসমূহের অধিবাসী আইনত বাংলাদেশী হলেও তারা রাষ্ট্রীয় অধিকাংশ সুযোগ-সুবিধা নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। আঙ্গরপোতা-দহগ্রাম ছাড়া অপরাপর ছিটমহলের অধিবাসী আমাদের জাতীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। ভারতীয়দের বাধার কারণে সেখানে ভোটার তালিকার কাজ বন্ধ কয়েক যুগ ধরে। কোনো কোনো ছিটমহলে ১৯৭২ সালের পর ভোটার তালিকা হালনাগাদ হয়নি। বিএসএফ অহরহ অনধিকার প্রবেশ করলেও বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো উপস্থিতি সেখানে নেই। বিচারব্যবস্থা বলতে স্থানীয় সালিশি। এমনকি জমি কেনাবেচাও হয় সাদা কাগজে লিখে অথবা মৌখিকভাবে। অবশ্য সরকারিভাবে অদৃশ্য কারণে ২০০৭ সালের জুলাই থেকে ভূমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ রাখার নির্দেশ রয়েছে। অধিকাংশ ছিটমহলেই কোনো স্কুল, কলেজ, মাদরাসা নেই। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পরিবার পরিকল্পনা, জন্মনিবন্ধন, দুর্যোগকালীন সহযোগিতা, অবকাঠামো নির্মাণ, দুস্থ, প্রবীণ মহিলা প্রতিবন্ধী ভাতা, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি, ব্যাংকঋণ, এনজিও কার্যক্রম, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন কর্মসূচির কোনোটাই নেই এখানে। সরকারি দারিদ্র্যবিমোচন কর্মসূচির প্রণেতারাও ভুলে গেছেন এদের কথা
ভঙ্গুর মানবিক অধিকার নিরাপত্তা : শিক্ষা, স্বাস্থ্য যোগাযোগ অবকাঠামো এবং দুর্যোগকালীন সহযোগিতার অভাবে সবচেয়ে নাজুক মানবিক নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন ছিটমহলের নারী, শিশু প্রবীণরা। অধিকাংশ শিশুই ভুগছে চরম পুষ্টিহীনতায়। সদ্যোজাত শিশু প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর হারও তুলনামূলক বেশি। অনেক গর্ভবতী মহিলাকে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়। প্রথমত বিএসএফ টহলদারির কারণে মূল ভূখন্ড বা ইন্ডিয়া কোথাও যাওয়া প্রায় অসম্ভব। আবার কোনোভাবে পরিচয় গোপন করে বা লুকিয়ে ইন্ডিয়ায় যেতে পারলেও আইডি কার্ড না থাকায় তারা হাসপাতালে ভর্তি হতে পারছেন না চিকিৎসকদের অস্বীকৃতির কারণে। এমনও জানা গেছে, ভর্তি হতে না পেরে হাসপাতালচত্বরেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ফলে স্থানীয় বৈদ্য, কবিরাজই তাদের একমাত্র ভরসা। আমাদের ছিটমহলসমূহ ভৌগোলিকভাবেই বন্যাপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সর্বস্ব হারালেও তারা কোনো সরকারের পক্ষ থেকেই সহযোগিতা পান না
ছিটমহল চিত্র-/দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা : লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার অন্তর্গত দুটি বাংলাদেশী ছিটমহলের নাম আঙ্গরপোতা দহগ্রাম, যার মোট আয়তন ২২ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। জনসংখ্যা ১৪ হাজার ৬৬৮। ভারতের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের কারণে এই ছিটমহল দুটি সারাদেশে পরিচিত এবং আলোচিত। এই ছিটমহল দুটিকে মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছে ১৮৭ বাই ৮৫ বর্গমিটার একটি করিডোর। ১৯৫৮ সালের নেহেরু-নূন চুক্তিতে এটা তিনবিঘা করিডোর নামে পরিচিত। করিডোরটিকে তৎকালীন পাকিস্তানের স্থায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু কোনো এক অজানা রহস্যে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিতে এটিকে ভারতীয় ভূখন্ড হিসেবে উল্লে­ করে লিজ নেওয়া হয়। তার পর থেকে শুরু হয় এক মানবিক বিপর্যয়ের ইতিহাস। অবশেষে দীর্ঘ অবরুদ্ধ দশার অবসান ঘটে ১৯৯২ সালে সম্পাদিত তৎকালীন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাও বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে, যা ওই বছরের ২৬ জুন থেকে কার্যকর হয়। যে দিবসটিকে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতাবাসী তাদের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। ওই চুক্তির ফলে তিনবিঘা করিডোরটি খুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত করিডোরটি খোলা থাকে। অর্থাৎ বাকি ১২ ঘণ্টা এই ছিটমহলবাসীর জীবন কাটে অবরুদ্ধ দশায়। ১২ ঘণ্টার মধ্যেও ভারতীয় লোকজন এবং যানবাহনের চলাচলের সুবিধার জন্য করিডোরের গেট ইচ্ছেমাফিক বন্ধ করা হয়। অর্থাৎ রাতের বেলা গুরুতর অসুস্থ রোগী নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য করিডোর অতিক্রম সম্ভব নয়। শুধু রাতের গেট নয়, ছিটমহলবাসীর অর্থনৈতিক জীবনের অনেকটা এখনো নিয়ন্ত্রণ করছে বিএসএফ। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, দহগ্রাম-আঙ্গরপোতায় রয়েছে ৩৫ হাজার গরু। প্রতি রবি বৃহস্পতিবার পাটগ্রামে বিরাট গরুর হাট বসে। কিন্তু বিএসএফ প্রতি হাটে ১০টির বেশি গরু করিডোর অতিক্রম করতে দেয় না। ফলে এই বিপুলসংখ্যক গরু এখন দহগ্রাম-আঙ্গরপোতাবাসীর সম্পদ না হয়ে উল্টো বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে
ছিটমহল চিত্র-/মশালডাঙ্গা : কুড়িগ্রামের ভুরঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড মশালডাঙ্গা, যা কয়েকটি ছিটমহল নিয়ে গঠিত এবং ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কুচবিহার জেলার দিনহাট থানা দ্বারা পরিবেষ্টিত। মশালডাঙ্গায় আনুমানিক ২০-২৫ হাজার লোকের বসবাস। বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডের সঙ্গে মশালডাঙ্গা যুক্ত হয়েছে ৪২ বাই ১৫০ গজের একটি লম্বা ভারতীয় করিডোর দিয়ে। কিন্তু মশালডাঙ্গাবাসী যাতে মূল ভূখন্ডে অর্থাৎ বাংলাদেশে আসতে না পারেন সে জন্য করিডোরটির প্রবেশমুখে নির্মাণ করা হয়েছে একটি বিএসএফ চৌকি। মশালডাঙ্গার উত্তর সীমান্তে রয়েছে ভারতীয় কালজানী নদী। তাই পাশের ভারতীয় গ্রাম নাজিরহাট, শালমারা, গালঝাড়া বল­মপুর গ্রামের লোকজন মশালডাঙ্গার ওপর দিয়েই তাদের দেশের অপর প্রান্তে যাতায়াত করেন। এমনকি বাংলাদেশী সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়াই ভারতীয় সরকার মশালডাঙ্গার ভেতর দিয়ে আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক নির্মাণ করেছে, যে সড়ক ধরে সে দেশের যানবাহনগুলো যাত্রী, মালামাল সামরিক লোকজন পরিবহন করে। এই সড়ক দিয়েই নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ টেলিফোন লাইন, যাতে মশালডাঙ্গাবাসীর নেই কোনো অধিকার। ভারতীয় লোকজন অহরহ মশালডাঙ্গায় যাওয়া-আসা করলেও বিএসএফের কড়া টহলের কারণে ছিটমহলের লোকজন ভারতে যেতে পারেন না। এমনকি বাংলাদেশে আসতে চাইলেও তাদের শিকার হতে হয় গ্রেফতার, নির্যাতনসহ নানা হয়রানির। ফলে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে আসতে হয় নিজদেশে। মৃত্যুপথযাত্রী মা-বাবা, ভাই, বোন, সন্তানের সঙ্গে দেখা সাক্ষাতেরও অনুমতি পাওয়া যায় না। মূলত বিএসএফ ভারতীয় প্রভাবশালী লোকজন সন্ত্রাসীরাই তাদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। বিভিন্ন সামাজিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে প্রায়শই চাঁদা দাবি করা হয়। বাধা দিলে নেমে আসে নানা নির্যাতন হয়রানি। গরু-ছাগল মাছ লুট হয়। কেটে নেওয়া হয় ঝাড়ের বাঁশ। জমির ধান বিক্রি করতে হয় মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে অর্ধেক দামে। যখন-তখন বিএসএফ অনধিকার প্রবেশ করে বিনাবিচারে ধরে নিয়ে যায় লোকজনকে
১৯৮৬ সাল থেকে জাতীয় বা স্থানীয় কোনো নির্বাচনেই মশালডাঙ্গাবাসী ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাননি বিএসএফের বাধার কারণে। এই ২০-২৫ হাজার লোকের জন্য নেই কোনো স্কুল, কলেজ, মাদরাসা। স্থানীয়দের মতে, পুরো মশালডাঙ্গায় এমন একজনও নেই যিনি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে লেখাপড়া করেছেন। ছিটমহলবাসী নিজস্ব উদ্যোগে একটি মক্তব প্রতিষ্ঠা করলেও বিএসএফ এসে তা ভেঙে দেয়
সরকারি এনজিও সেবা বলতে যা বোঝায় তার কোনোটাই নেই এখানে। পুষ্টিহীনতা, সদ্যোজাত শিশু প্রসূতি মায়ের মৃত্যু অনেকটা স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। যেহেতু দেশের অপরাংশের লোকজন এই অবরুদ্ধ ছিটমহলবাসীর সঙ্গে বিয়ে-শাদিতে রাজি নয়, তাই এমনকি উপযুক্ত পাত্রের অভাবে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন, এমনকি চাচা-ভাতিজি বিয়ের মতো ঘটনাও হচ্ছে। ফলে বহুবিবাহও একটি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে
দাশিয়ারছড়াএকটি ভিন্নচিত্র : দাশিয়ারছড়া পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানার অন্তর্গত একটি ছিটমহল, যা বাংলাদেশের কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলা দ্বারা পরিবেষ্টিত। হাজার ৭৪৩ একর আয়তনের এই ভারতীয় ছিটমহলটির জনসংখ্যা সাড়ে হাজার। দাশিয়ারছড়ার অধিবাসীর প্রায় ৫০ শতাংশই শিক্ষিত। এখানকার অনেক ছেলেমেয়েই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশের গ্রামের ঠিকানা ব্যবহার করে লেখাপড়া করছে। অনেকে বিভিন্ন সরকারি দফতরেও চাকরিরত  (প্রতিরক্ষা ছাড়া) স্থানীয় সরকারি হাসপাতালসমূহে তারা যথারীতি স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন। পরিবার পরিকল্পনা, টিকাদান কর্মসূচি, দুর্যোগকালীন ত্রাণসবই পাচ্ছেন তারা। শুধু ভূমি রেজিস্ট্রেশন হস্তান্তরের জন্য তাদের দিনহাট যেতে হয়। তবে ভারতীয় সরকারকে ভূমিকর দিতে হয় না। ১৯৫৮ সালের পর ভারতীয় কোনো সরকারি কর্মকর্তা এই ছিটমহল সফর করেননি
নতুন উদ্বেগ : একদিকে বাংলাদেশী হওয়া সত্ত্বেও পরিচয়পত্র না থাকায় পশ্চিমবঙ্গের অভ্যন্তরে অবস্থিত ছিটমহলের লোকজন ভারতীয় হাটবাজার হাসপাতালে যেতে পারছেন না, অন্যদিকে বাংলাদেশে আসতে গেলেও বিএসএফ বাধা দেয়। অবস্থায় ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত না হওয়া এবং বাংলাদেশে জাতীয় পরিচয়পত্র চালু হওয়ায় ছিটমহলের লোকজনের মধ্যে নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের ভয়, নিজদেশে ভিনদেশী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে তারা যেন রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকে পরিণত না হন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্রাট আকবর ও মুসলমানী প্রসঙ্গ।

ইতিহাসের এইদিনে এই ভ্যালেন্টাইন ডে তে ১৪ ফেব্রুয়ারী,১৫৫৬ খ্রীঃ সম্রাট আকবর ১৪ বছর বয়সে দিল্লীর সিংহাসনে আসীন হন। ভ্যালেন্টাইন ডে তে সম্র...