শরবত গুলা
আমি এই অনুস্টানটি প্রথম দেখি ন্যাশনাল জিওগ্রাফী চ্যানেলে।ঘটনাটি এতই হৃদয়গ্রাহী ও মর্মস্পর্সী ছিলো যে ব্লগে না দিয়ে পারলাম না।এ রিপোর্টটি মার্চ২০০২ সালে প্রথম ছাপা হয়,যখন ন্যাশনাল জিওগ্রাফী ঘোষনা দেয়”আফগান মেয়ের”পরিচয় পাওয়া গেছে।কে এই মেয়ে?পাঠকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়।
এরজন্য আমাদেরকে অনেক পিছনের দিকে যেতে হবে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফী যখন ১৯৮৫ সালে মুখটিকে তাদের ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ করে শিরোনাম দেয়”আফগান গার্ল”তখন থেকেই সে ছিল বিশ্বের ফটো সাংবাদিকদের কাছে খুবই পরিচিত।সারা বিশ্বে সে ছবি সাড়া ফেলে দেয়,অথচ ভাগ্যের কি পরিহাস সে নিজেই জানতোনা ছবির কথা।তারপর কেটে যায় ১৭ বছর।২০০২ সালে তালিবান্দের পতন হলে উত্ত ছবির ফটোগ্রাফার স্টিভ ম্যাককারি আবার যায় আফগানিস্তানে সেই মেয়ের সন্দ্বানে।যার ছিল সবুজ একজোড়া বিরল চোখ।
স্টিভ ১৯৮৪ সালে পেশোয়ারের নাসির বেগ রিফিউজি ক্যাম্প থেকে ছবিটি তুলেন।তিনি মেয়েটির খোজে অনেকবার আফগানিস্তান,পাকিস্তান টুর দেন। রিফিউজি ক্যাম্প থেকে জালালাবাদ,সেখান থেকে কাবুল সর্বত্র তিনি খুজে ফেরেন।তার কাছে প্রমানপত্র বলতে মেয়েটির সেই একটি ছবি,যেখানে সে সবুজ চোখে সরাসরি তাকিয়ে আছে।তারা দুই তিনজন পেয়েও যান,কিন্তু যখন তাদের চোখের কর্নিয়া পরিক্ষার জন্য আমেরিকায় ল্যাবে পাঠান ,টেস্টের পর জানানো হয় এটি সেই মেয়ে নয়।অবশেষে অনেক খোজাখুজির পর কাবুলের উত্তরে এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাওয়া যায় এক মহিলাকে,যার চোখদ্বয় সবুজ।তার নাম শরবত গুলা,যে তার স্বামী ও তিন কন্যা নিয়ে সেখানে বাস করে।বায়োলজিক্যাল টেস্টের জন্য তার চোখের ছবি আবার পাঠানো হয়।অবশেষে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেখান থেকে জানানো হয়,এটিই সে কাংখিত মেয়ে,যাকে ন্যাশনাল জিওগ্রাফী খুজছিলো।এতগুলো বছর পরে মেয়েটির কোন ধারনা ছিলনা যে তার ছবি এভাবে বিশ্বে আইকন হয়ে উঠবে।শরবত গুলা ফটোগ্রাফারকে চিনতে পারে,কারন ১৯৮৪ সালে এই ফটোগ্রাফার যখন ছবিটি তুলেছিল সেটাই ছিল তার প্রথম ফটো।দ্বিতীয়বার সে ফটো তুলে ২০০২ সালে তাকে খুজে পাওয়ার পর।তাদের পুনর্মিলনীর সে দৃশ্য ছিল আবেগময় ও মর্মস্পর্শী।
সতের বছর পর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন