শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৮

হোন্ডা নামা।

একটা সময়ে আমার মোটর সাইকেলের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ ছিলো।কিন্তু সেটা এফোর্ড করার মতো সামর্থ ছিলো না।এখন যে সামর্থ একেবারে গা বেয়ে বেয়ে পড়ে তাও না,কিন্তু অদ্ভুত যে, আমার সে ইচ্ছাটা আর মোটেও নাই।কিভাবে যেনো ইচ্ছাটা নাই হয়ে গেছে।আমাদের চট্টগ্রামে মোটর সাইকেলকে আশ্চর্যজনকভাবে হোন্ডা বলা হয় প্রায়ওই ক্ষেত্রে।আক্ষরিক অর্থে বলা হয় হুন্ডা।সেটা যে ব্রান্ডেরই হোক না কেনো।সম্ভবত সত্তরের দশকে হোন্ডা সিডি আই এর ব্যাপক প্রচলন আর জনপ্রিয়তাই এর মুল কারন।এরপর ইয়ামাহা,সুজুকি এরাও জনপ্রিয়তা পেয়েছে, কিন্তু সবই চলতি মুখের লবজে হুন্ডা বলে ব্যাপক প্রচলিত।
তাই আমি বাকি লেখাটাতে মোটর সাইকেলকে হোন্ডা বলে অভিহিত করবো।আজকে দেখি কি ,দুইজন বয়স্ক লোক ৫০ সিসি হোন্ডাতে করে যাচ্ছে।সেই হোন্ডার ৫০ সিসি ,যা প্রায় অনেকটা প্লাস্টিকের গড়ন।রং বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে লাল,অন্যান্য কালারের বেশ কম দেখা যায়।আমার ধারনা এটি তৈরীর পর কোটি কোটি পিস বিক্রি হয়েছে।তো, বয়স্ক চালক পুরোপুরি মোল্লা নাসিরুদ্দীন হোজ্জার মতো দেখতে।আমার হঠাত মনে এলো,কেনো এই মডেল কেবল আমি বয়স্কদেরই চালাতে দেখি।কেনো যুবকদের নয়?সাথে সাথেই সরল কারনটা বুঝতে পারলাম, আসলে সবকিছুর মুলে ফুয়েল কন্সাপশন ।কারন একটু বয়স্করা মিতব্যয়ী ,তারা ফুয়েল কন্সাপশন কমাতে চায়।আর তাদের এতো দ্রুত গতিও প্রয়োজন নেই।তাই তারা যে যার প্রয়োজন অনুযায়ী বাহন বেছে নিয়েছে।ম্যানুফেকচারার সেই অনুযায়ী পন্য তৈরী করেছে।
একটু আগের যুগের দিকে তাকালে বোঝা যায়,এই মোটর সাইকেল চালকের দলেরাই গত শতকের ঘোড়সওয়ারির দল।রুচি,সামর্থ,চালনাশক্তি সেই একই আছে,শুধু ট্রান্সপোর্টেশন পশু থেকে মোটরাইজড হয়েছে।গত শতকের তাগড়া শক্তিশালী যুবক সওয়ারীরা যেমন তাগড়া মদ্দা ঘোড়া বা স্টালিয়ন চালাতো ,কারন তারা এটা পছন্দ করতো।যদিও সেটা পালন করা ব্যয়বহুল ছিলো তাও।এই ধরনের সওয়ারীর ঘোড়ার খাই-খরচ বেশী,নিয়মিত দলাই মলাই করা লাগে।
এই ধরনের সওয়ারীরাই এখন বিভিন্ন রেসিং মোটর সাইকেল,পালসার,এফজেড ,রিগাল র‍্যাপ্টর ডেটোনা,রয়াল এনফিল্ড ,হার্লে ডেভিডসন চালায়।
আর গত শতকের যেসব সওয়ারীরা খরচের ভয়ে বা মিতব্যয়িতার জন্য ঘোড়ার বদলে গাধা,খচ্চর ব্যবহার করতো ,তারাই এ যুগে এসে ৫০ সিসি ,৮০-৯০ সিসি হোন্ডা ব্যবহার করে।কারন গাধা-খচ্চরের মতোই এগুলা সাশ্রয়ী।এই দলের লোকগুলাই হোজ্জার মতো মাঝবয়েসী।এজন্যই এরা ৫০ সিসির ভক্ত।
এবার তৃতীয় একশ্রেনীর সওয়ারীর ব্যাপারে বলি, এরা সেই যুগে বাহন হিসেবে মাদি ঘোড়াকে বেছে নিতো,বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের মাদি ঘোড়া বন্ধ্যা।এ ধরনের সওয়ারীরাই এ যুগে আমার হিসেবে ভেসপা চালায়।আমি জানি ,ভেসপাওলারা খুবই ক্ষুদ্ধ হবে এটা শুনে।কিন্তু আমার মনে হয়েছে।ভুলও হতে পারে।
মোটরাইজড যুগ শুরু হওয়ার আগে এই গত শতকের বিশের দশক পর্যন্ত ঘোড়া বা খচ্চর খুবই প্রচলিত বাহন ছিলো।যদিও মার্কিন মুল্লুকে ফোর্ড ও অন্যান্য মোটরসের ব্যাপক প্রচলন ক্রমে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে ঘোড়া বা গাধা-খচ্চরকে কৃষিকাজের সহায়তার উপাদানে পরিনত করে ছাড়ে।তারপরও শুনে অবাক হবেন, এই ২০১৭ সালেও ঘোড়া ,গাধা,খচ্চর মধ্য এশিয়া উজবেকিস্তান,কিরগিজিস্তান ,কাজাকস্তান আর মঙ্গোলিয়ায় এখনো খুবই প্রচলিত বাহন।তারা এটায় চড়ে,এটাকে দিয়ে কৃষিকাজ করে আর জনপ্রিয় লাইভ স্টক হিসেবে এটাকে খেয়েও ফেলে।ঘোড়া তাদের খুবই প্রিয় একটি খাবার।
আমার স্ট্যাটাসের কোন আগা-মাথা নেই।সেই হোন্ডা দিয়ে শুরু আর ঘোড়া খাওয়া দিয়ে শেষ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্রাট আকবর ও মুসলমানী প্রসঙ্গ।

ইতিহাসের এইদিনে এই ভ্যালেন্টাইন ডে তে ১৪ ফেব্রুয়ারী,১৫৫৬ খ্রীঃ সম্রাট আকবর ১৪ বছর বয়সে দিল্লীর সিংহাসনে আসীন হন। ভ্যালেন্টাইন ডে তে সম্র...