শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৭

সাফাবি শাহ ইসমাইল বনাম শায়বানী খান ইন মার্ভ।

ডিসেম্বর,১৫১০ খ্রীঃ।
শায়বানী পুর্ন আত্নতৃপ্তির সাথে মার্ভ দুর্গে ৩০ হাজার সুসজ্জিত সৈন্য নিয়ে জাঁক করে বসে দুর্গের বাইরে অবস্থানরত পারস্যের সাফাভি সম্রাট শাহ ইসমাইলের ১২ হাজার সৈন্যদের লক্ষ্য করছে।জায়গাটা এখনের তূর্কমেনিস্তানের মারীর নিকট আমু দরিয়ার পাড়ে।শাহের সৈন্যরা শীতে কস্ট পাচ্ছে,এটা শায়বানী খানের ভীষন ভালো লাগছে।তিনি চাচ্ছেন আরো কস্ট পাক,দূর্বল হোক তারা।এরপর দুর্গ থেকে বের হয়ে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বেন।
শাহ ইসমাইল যেনো ধৈর্য্যের প্রতিমুর্তি,শায়বানী যে শিয়ালের গর্ত থেকে বের হবে না সেটা তিনি বুঝে গেছেন।তাই রাতে তার বিশ্বস্ত সেনানায়কদের ডেকে বুঝিয়ে দিলেন,কিভাবে ভাও করতে হবে ঘটনাটার।সেনাপতিরা শাহকে পীরের মতো ভক্তি করে।তারা আর একবার শ্রদ্ধায় আপ্লুত হলেন।শাহ ইসমাইলের হাত চুম্বন করে আশীর্বাদ নিলেন।তারা বিদায় নিলেন,কারন গভীর রাত থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু হবে।মহান আল্লাহ যদি দয়া করেন কাল এমন সময় ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হবে।
শায়বানী খান বিগত বছরগুলোতে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছেন,এতে তার আত্নবিশ্বাস চরমে পৌছে যায়।এটাই তাকে শেষ করলো।সে তৈমুরের বংশকে ,তৈমুরের বারলাশ গোত্রকে পৃথিবী থেকে মুছে ফেলার জন্য শপথ নিয়েছে।অনেকাংশে সে সফল।এখন শুধু বাবর বেঁচে আছে।যে এই মুহুর্তে হীরাত বা কুন্দুজের কাছে আছে সম্ভবত।বাবরের বংশের কাউকে শায়বানী বিন্দুমাত্র করুনা দেখায়নি।বাবরের মামা তাশখন্দের শাসককে নিশংসভাবে হত্যা করেছে।বাবরের সৎ ভাইকেও হত্যা করে আন্দিজান,ফরগানা ও বাবরের জন্মস্থান আঁকশি দুর্গকে ধবংশস্তুপে পরিনত করেছে।হীরাতের শাসক বাবরের আত্নীয় হুসেন বাইকারার ছেলেরা বাবরকে দুর্দিনে কেনো আশ্রয় দিলো,এ অপরাধে হীরাত ভস্মীভুত করা হয়েছে।তার পরই সেখান থেকে গিয়ে পারস্যের শাহকে খেপানোর জন্য ফিরতি পথে তার আস্ত্রাবাদ,গুরমেন ও কেহেরমান শহরকে লুট করে অধিবাসীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে।শাহ কিছুই করতে পারেননি,কারন তিনি তখন পশ্চিমে অটোমান সুলতান ২য় বায়েজিদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন।
শায়বানী এরপর যেটা করলেন এটাকে কি বলা যায়,তার একজন দূতের হাতে ভিক্ষার একটা ঝুলি পাঠালেন শাহকে।অর্থাত কিনা পারস্যের শাহ ভিখারি।শাহ সেই দূতের হাতে দিলেন একটা সুতা কাটা চরকা দিলেন।আর সেনাপতিকে একিই রাতে ডেকে বললেন,তারা এই মুহুর্তে কতোজন প্রস্তুত আছেন? সেনাপতি জানালো-সমগ্র বাহিনী শাহের নির্দেশের অপেক্ষায়।শাহ জানালেন-পাগলা কুত্তার ট্রিটমেন্ট একটাই, এটাকে পিটিয়ে মারতে হয়।
কিন্তু শায়বানী দুর্গ ছেড়ে বের হয় না,তার পুত্রেরা আমু দরিয়া পেরিয়ে বাকী সৈন্য নিয়ে আসলেই তিনি শাহের সৈন্যদের ছাল ছাড়াবেন।কিন্তু আজ সকাল হতেই দেখা যায়,শাহের একদল অশ্বারোহী ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে দুর্গের সামনে দিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে আর অন্যেরা তাড়াহুড়া করে মালপত্র গুচাচ্ছে।তার মানে তারা পিছু হটছে।ভালো করে শায়বানী লক্ষ্য করে দেখলো আগের ১২ হাজার অশ্বারোহীকেও তো দৃস্টিসীমায় দেখা যাচ্ছে না।সে তাড়াতাড়ি তার সেনাপতি মোল্লা আব্দুর রহিমকে ডেকে বললো-এই পলায়নপর সৈন্যগুলোকে আমাদের পেড়ে ফেলতে হবে দ্রুত,এবং তা এখনই।এরা পালিয়ে গেলে আর ধরতে পারবো না।মোল্লা বললেন,সুলতান আপনি দূর্গ ছেড়ে বের হবেন না।আপনার পুত্রেরা আসুক,তারপর বের হবেন।শায়বানী বলে-তারা আসতে আসতে এরা থাকবে না।সে তার দলবল নিয়ে পলায়নপর শাহের বাহিনীর পিছু নিয়ে আমু দরিয়ার কাঠের সেতু পার হয়ে যেই না বিস্তীর্ন মরুভূমিতে পৌছালেন অমনি মরুর বালিয়ারীর আড়ালে লুকিয়ে থাকা ১৭ হাজার দক্ষ পারস্যের সেরা অশ্বারোহী শায়বানীকে ঘিরে বেস্টনি টানা শুরু করলেন।শায়বানী এবার বিজয়ের জন্য না,বাঁচার জন্য আল্লাহকে ডাকলেন।কোন মতেই বেস্টনি ভাঙ্গতে না পেরে একটা পরিত্যক্ত শীতকালীন খামারবাড়িতে সেঁদোলেন।
শায়বানীর দেহরক্ষীরা মরিয়া হয়ে লড়ছেন,তারা তো জানেই তাদের প্রত্যেকের কি দশা করবে শাহ।শায়বানী চিৎকার করে তার দেহরক্ষীদের ভীত না হয়ে শৃংখলাবদ্ধ হয়ে আক্রমন প্রতিহত করতে নির্দেশ দিচ্ছিলেন।শাহ এটা খেয়াল করে তার পাথর নিক্ষেপকারী যন্ত্রচালককে বললেন,শায়বানির দেহরক্ষীদের দিকে সরাসরি পাথর নিক্ষেপ করতে ।তেমনি এক পাথর এসে শায়বানীর ঘোড়ার মাথায় আঘাত হানতেই সেই ঘোড়া মাটিতে আশ্রয় নেয়।ঘোড়ার রেকাবে পা আটকে থাকাতে শায়বানী নিজেও ঘোড়ার নিচে চাঁপা পড়ে,তখনই আরেকটি বিশাল আকৃতির ঘোড়া শায়বানীর পাঁজরের উপর আছড়ে পরাতে পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে শায়বানী জ্ঞান হারায়।তার দেহ খুজে বের করে তার মাথা কেটে শাহের ঘোড়ার পায়ের কাছে নিক্ষেপ করা হয়।তার সারা শরীর টুকরো টুকরো করে পারস্যের বিভিন্ন শহর আর সেইসব বাজারে ঝুলিয়ে রাখা হয়,যা সে গত বছর লুট করেছিলো।আর শায়বানীর মাথার খুলিকে সেদ্ধ করে এর ভিতরের মাংস অপসারন করে পুরো মাথা গলিত সোনায় গিলটি করে তাকে মদের পানপাত্রে রুপান্তরিত করে বাবরকে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়।আর চিঠিতে এ কথাটি উল্লেখ করতে শাহ ভুলেননি যে,উপযুক্ত সময়ের অভাবে এই সোনার গিলটি করা কাজটি আরো নিঁখুতভাবে সম্পন্ন করা যায়নি।

প্রনব মুখার্জি ও ঘোড়া মইন উপাখ্যান।

ফেসবুকের আজকের ট্রেন্ডিং হলো, প্রনববাবু ,মইন ইউ আহম্মেদ আর ২০০৮ এর নির্বাচন।প্রনব বাবু তার জীবনীতে জানাচ্ছেন,কিভাবে তিনি ২০০৭ এ মইন ইউ এর ভারত সফরে তাকে পরের বছরের নির্বাচন হওয়ার পরও পদে বহাল রাখা হবে, তার নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন।
এরপর ২০০৮-২০১৭ পর্যন্ত কি কি হয়েছিলো,সেগুলোর বর্ননা দেওয়ার প্রয়োজন নাই।আপনাদের আজ ক্ষুদ্র একটা ঘটনা মনে করিয়ে দেবো।ইতিহাসে এইসব সিগিনিফিকেন্ট ঘটনাগুলোর বিবরণ আগেও ঘটেছিলো।
আপনাদের হয়তো মনে নেই ,মইন ইউ আহম্মেদ ভারত থেকে ঘুরে আসার পর সাথে করে ৬টি মদ্দা তাগড়া স্টালিয়ন ঘোড়া উপহার স্বরুপ নিয়ে দেশে ফেরে।সেনাবাহিনীর লাইভ স্টক বিভাগের লোকেদের অবশ্যই এ ঘটনা মনে আছে।এখন বলি, এই কোন দেশকে, কোন বাহিনীকে,কোন শাসককে মদ্দা তাগড়া ঘোড়া উপহার দেয়ার রীতি প্রাচীনযুগ ,মধ্যযুগ ও বর্তমান যুগ কোন যুগেই শুভ লক্ষন হিসেবে ধরা হয় না।এর সাংকেতিক মানে ধরা হয় ,তোমরা মাদি ঘোড়া তাই তোমাদের মদ্দা ঘোড়া দেয়া হলো।এখন বসে বসে বাচ্চা বিয়োও।অর্থাত মইন পুরো নিয়ন্ত্রনে।
যাক,আমরা মুর্খ মানুষ।এবার ইতিহাসের মোটামুটি এমন একটা ঘটনা বলি, যার শেষটা আবার মইন ইউ পর্বের মতো ঘটেনি।মোঘল সম্রাট বাবুর ভারতে এসে সাম্রাজ্য স্থাপন করলেও নিজ দেশ উজবেকিস্তানের ফরঘানায় মোটেও তিস্টোতে পারেনি উজবেক উপজাতি নেতা শায়বানী খানের জন্য।শায়বানি খান কেবল তাকে ট্রান্স অক্সিয়ানা থেকেই দূর করেনি,বাবুরের বোনকে উপপত্নী বানিয়ে ফেলেন।বাবুর এই প্রবল প্রতিদ্বন্দীর হাত থেকে বাচার জন্য কাবুল ,হিরাত, কুন্দুজ ,গজনীতে আওয়ারার মতো ঘুরতে থাকেন।আর শায়বানী তার পিছু নিয়ে যারাই তাকে আশ্রয় দিতো তাদেরও হত্যা করতে থাকেন।এসব করতে করতেই শায়বানী একিই সাথে পারস্যের সাফাভিদ বংশের প্রথম শাসক শাহ ইসমাইলের শাসনাধীন বিভিন্ন শহরেও লুটতরাজ ,সেয়ানা ট্যাক্স আদায় করতে থাকেন।শায়বানীর কি গতি শাহ ইসমাইল করেছিলো তা পরবর্তী স্টাটাসে দেয়া হবে।
শাহ শায়বানীকে ধরে সাইজ করে তার মাথার খুলিটা থেকে মাংস খুলে নিয়ে পুরো খুলি গলিত সোনায় কোটিং করে বাবুরকে উপহার দেয়।সাথে বাবুরের বোন ও ভাগ্নেকে।আর একটা কাজ শাহ করে, তিনি ছিলেন শিয়াদের ১২ ইমামে বিশ্বাসী।তাই শিয়াদের কিজিলবাসী লাল লম্বা টুপি আর লম্বা আলখেল্লা তিনি যেটা পড়তেন তার একসেট বাবুরকে পাঠান।যাতে কৃতজ্ঞতাবশত বাবুর সুন্নী থেকে শাহের শিয়াতে চলে আসেন।আর ১২ টি মদ্দা তুর্কমেনী চমৎকার ঘোড়া দেন।সিগনাল ক্লিয়ার,বাবুর তার করদ হিসেবে শায়বানী অধিকৃত রাজ্য শাসন করবেন।
মধ্যযুগে রাজা রাজায় এভাবেই সিগনালে সিগনালে পরষ্পরকে সংকেত দিতো।যেমনঃ শায়বানী ধরা খাওয়ার আগে শাহকে একটা ভিক্ষার পাত্র পাঠিয়েছিলেন, অর্থাৎ শাহ ভিক্ষা করবে।আর শাহ পালটা তাকে একটা সুতা কাটার চরকা দেন।মানে বসে বসে সুতা কাটো, আমি আয়তাছি।
বাবুর শাহকে যথাপোযুক্ত সন্মান দেখান আর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন।শাহকে জানান,ভবিষ্যতে যেকোন সময় শাহর উপকারে আসতে বাবুর কোনরকম দ্বিধা করবে না।কিন্তু উনি সুন্নী মুসলমান হিসেবেই মরতে চান।আর তার রাজ্যে শিয়ারা সবসময় অত্যান্ত সন্মানিত আর মর্যাদাবান পদে থাকবেন।এরপরই বাবুরের নির্দেশে ১২ টি মদ্দা ঘোড়াকে আত্তাঘোড়া বা খাসি করা হয়।শাহকে জানানো হয় বাবুরের প্রচুর উন্নত জাতের মদ্দা ঘোড়া আছে।তারপরই খোজা ঘোড়াগুলো আর কিজিলবাসী লাল টুপি আর আলখেল্লাকে প্রচুর উপঢৌকন সহ পারস্যের রাজধানী কাজবিনে ফেরত পাঠানো হয়।
বাবুরটা পারছিলো, মইনটা পারে নাই।

মোল্লা মাসুদের সাথে কথোপকথন।

আজকে ১২-৩০মিঃ নাগাদ আমাকে একটা রবি নাম্বার থেকে কল করে যেরকম লেপা মার্কা সালাম দিয়েছে ,আমি ভেবেছিলাম রবিওলারা আবার কোন ফাউলটাইপ কোন মোবাইল সেবা দিতে উদগ্রীব।কিন্তু সে আমাকে জানায়,আমি তৌফিক কিনা?(সে অভ্রান্তভাবে আমার বাসার ঠিকানা বলে),
আমি হ্যা জানাতেই সে জানায়, আমি মোল্লা মাসুদ বলছি আন্ডারওয়াল্ডের থেকে(এই একটা বাক্যেই আমি বুঝে গেছি উনারা কারা)।আমি সাথে সাথে তাকে জানাই,আপনি কি মোল্লা সল্ট এর মালিক কিনা?(সে কিঞ্চিত ক্ষুদ্ধ হয়)। আমাকে জানায়,আমি কি ইয়ার্কি করছি নাকি?(ভাবুন দেশটা কোথায় গেছে,ইয়ার্কি নাকি আমি করছি)।
এবার ডন মোল্লা মাসুদ জানায়, তাদের আন্ডারওয়াল্ডের গোলটেবিল বৈঠকে স্থির হয়েছে, তাদের বন্দী সহযোদ্ধাদের জেল থেকে মুক্ত করতে ৫০ লক্ষ টাকা দরকার,তাই আমার সহযোগিতা দরকার।আমি জানতে চাইলাম,আমাকে কেনো উনার প্রয়োজন হলো।তাতে উনি আমাদের চট্টগ্রামের এমনসব গার্মেন্টস মালিক ও শিল্পপতির নাম জানালো,যারা নাকি সবাই ইতিমধ্যে ৫-১০ লাখ দিয়ে দিয়েছে।আমি ৫ লক্ষ দিলেই তারা খুশী। এমন অবস্থায় আমাকে তারা এতো উচু মর্যাদা দিয়েছে,এটা ভেবেই আমার চোখে দিয়ে আনন্দে ও গর্বে পানি বের হয়ে গেছে।সাথে সাথে মুত্রত্যাগ করার এক দূর্নিবার ইচ্ছাও হলো।আমি তাকে সেটা জানালাম( সে ইষত ক্ষুদ্ধ হলো)। আমাকে জানালো,আমার ছেলে আছে একটা,সেটা তারা জানে। তারা আমার বাসায়ই লোক পাঠাতো(তাদের নাকি সারা চট্টগ্রামে হাজার খানেক কর্মী আছে),কিন্তু আমি শিক্ষিত লোক এজন্য তারা সেটা করে নাই। আমি শিক্ষিত এটা শোনার পর আবার আমার বেদম কান্না পেলো।তা হলো সুখের ও গর্বের কান্না। সাথে যথারীতি আবার মুত্রত্যাগ।
আমি তাকে জানালাম, তাহলে চট্টগ্রামে ব্যাপারটা পৌছাতে ৮-১০ বছর লাগলো। সে বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলো,কিসের ৮-১০ বছর? আমি জানালাম, ৮-১০ বছর আগে ঢাকাতে কালা জাহাঙ্গীরের নাম দিয়ে এগুলা হতো। সেটা চট্টগ্রাম পৌছাতে এতোদিন লাগলো।আচ্ছা,আপনাকে টাকা বিকাশে দিবো না ফ্লেক্সি করে দিবো?এরপরই সে খট করে মোবাইল বন্ধ করে দিলো।
আমি বুঝলাম, টাকা না পেয়ে আমার সর্বনাশ না করলেও,টিটকারীগুলোর জন্য মনে হয় আমার ক্ষমা নাই।

নাম নিয়ে আবার !

এটি একটি ১৮+ পোস্টঃ-আগেই ডিস্ক্লেইমার, পরবর্তীতে কতৃপক্ষ কোনমতেই দায় নেবে না।
গতমাসে উত্তরবঙ্গে একটা ট্যুর দিয়েছিলাম।খুবই উপভোগ্য হয়েছিলো।যদি আবার কখনো সুযোগ হয়,আবারো যাবো। আপাতত অন্যদিকে না গিয়ে বাংলাদেশের গ্রাম বা স্থান গুলোর নাম নিয়ে কিছু বলি। নিশ্চয় এসব নাম কোন যুক্তিসঙ্গত কারনে এসেছে।ঠাকুর গাঁ রানী শঙ্কাইল হয়ে নেকমরদ (শুরু হয়ে গেছে) পর্যন্ত এদিকটা ১ম গেছি।নেকমরদ কথাটা জানি না কিভাবে এসেছে।চট্ট্রগ্রামে অবৈধ প্রেমিককে নেক বলে সম্মোধন করা হয়,সাথে তো মরদ রইলোই। এই নেকমরদের বা রানী শঙ্কাইলের কথা সেই স্কুল লাইফেই পাঠ্য বইয়ে পড়েছিলাম। লেখক আবুল খায়ের মোসলেহ উদ্দীন তার নীল গাইয়ের সন্ধানে নামক গল্পে এর ডাকবাংলোর বর্ণনা দেন। সুন্দর একটি জায়গা।তাও আবার লিচু-আম এর সিজনে গেছি।একিই সাথে সেখানে ধান ও ভুট্টা সংগ্রহ চলছিলো।
উত্তর বঙ্গের সাথে দক্ষিন বা মধ্যাঞ্চলের ভাটি এলাকার গ্রামের নামের কিছু পার্থক্য দেখলাম।যেমনঃ নদীমাতৃক এলাকার গ্রামগুলোর অনেকগুলো নাম এসেছে ,যেহেতু এলাকাগুলো এমনিতেই মাছের প্রাচুর্যতায় ভরপুর ,তাই আমাদের এই ঢাকা ,কুমিল্লা,সুনামগঞ্জ ,ব্রাহ্মনবাড়িয়ার প্রচুর গ্রামের নাম মাছ কেন্দ্রিক। যেমনঃ- চিংড়ি থেকে এসেছে ইছাখালি বা পুর,কৈজুরি, বড় পাঙ্গাসি কিংবা আড় পাঙ্গাসিয়া,পুটিমারি,শিঙ্গিমারি, বোয়ালিয়া বা ইলশামারি ইত্যাদি ।আরো অনেক বলা যাবে।
কিন্তু উত্তরে যেমনঃ পঞ্চগড়ের ওপারে কুচবিহারের ছ্যাকামারি দিয়ে স্টার্ট দিই। এই যে মারামারি শুরু হয়েছে,তা বর্ডার ক্রস করে লালমনিরহাটের বুড়িমারি দিয়ে ঢুকে তিস্তার অববাহিকায় ম্যাসাকার করে দিয়েছে।আছে হাতিবান্ধার গোদ্দিমারি,শিঙ্গিমারি,আরেকটু পশ্চিমে গোটামারি( পুরাই),দক্ষিনে ভোটমারি(হয়তো কবে কেউ ৫ জানুয়ারীর মতো ভোটের পুটকন মেরে দিয়েছিলো) ও আদিতমারি। আছে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারি,রৌমারি আর চিলমারি।হায় রে মারামারি!এরপর শুধু নীলফামারির উপর দিয়ে গেছে।এরপর এদিকে হয়রান হয়ে আপাতত আর মারামারি নাই।
এবার পঞ্চগড়ের কথা বলি।এ জেলা একাই নামের দিক দিয়ে লিজেন্ড। একেবারে শহরের পাশেই আছে ধাক্কামারা।উত্তরের সীমান্ত দিয়ে ঢুকেছে টালমারা ও কোরামারা নদী।তবে সবাইরে ফেইল দিছে বোঁদা উপজেলা।বোঁদার পাশেই আছে মারিয়া গ্রাম। এহেন বোঁদার আঙ্গুলদিয়া গ্রাম কোন মহাভারত মোঘল আমল থেকে নাম পেয়েছে তা বলা মুশকিল।একবার নাকি আঙ্গুলদিয়ায় বজ্রপাতে একজন নিহত হলেন।ইত্তেফাক পত্রিকায় আসলো-বোঁদায় আঙ্গুলদিয়াই একজনের মৃত্যু। কি ভয়ানক! আর এই স্বনামধন্য বোঁদায়ই আছে পুটকি মারি নামক একমাত্র মারি সমৃদ্ধ গ্রাম। এহেন যেই মহিমাম্বিত বোঁদা তার সাংসদ একবার সংসদে ফ্লোর পেয়ে বললো-মাননীয় স্পীকার,আমাদের বোঁদায় পানি নাই।আপনার মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রীর কাছে জানতে চাই,আমাদের বোঁদায় কবে নাগাদ পানি আসবে?স্পীকার বললেন-মাননীয় সাংসদ,আপনার ভাষা সংযত করুন।এটা জাতীয় সংসদ।সাংসদ বললেন-মাননীয় স্পীকার,এই বোঁদা সেই বোঁদা না।এটা পঞ্চগড়ের বোঁদা।স্পীকার বললেন-আপনি এমন করলে মাইক বন্ধ করে দেবো।
এবার সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল হয়ে চান্দাইকোনা যাওয়ার আগে এক গ্রামের নাম সোনাখাড়া,খুলনায়ও একটা সোনাপোতা আছে।স্বাভাবিক খাড়া থাকলে পোতাও থাকবে। নোয়াখালীতে আছে সোনাইমুড়ি। তেমনি ১৪ গ্রামে আছে প্রচুর কড়া,যেমনঃ-ফাল্গুনকড়া,আলকরা,বশকরা,মশকরা আরো বহুত।কক্সবাজার ও পার্বত্য জেলাগুলোতে আছে প্রচুর ছড়া আর ছড়ির বন্যা।হিমছড়ি,রুমালিয়ার ছড়া,মানিক ছড়ি ইত্যাদি।
আজ এটুকুই। গ্রাম নিয়ে আরেকটা লেখা দিবো। আরেকদিন মানুষ নিয়ে।

ফেসবুক থেকে। ২০১৫ জুলাই

১০২ বছরের বৃদ্ধা মাকে জানানো হয়েছে ,উনার ছোটছেলে ৫৫ বছরে স্ট্রোক করে ক্লিনিকে। উনি কানতে কানতে শেষ,খোদার অবিচারে। উনার কান্না থেকে যে বাক্য উদ্ধার করা গেছে ,তার সারমর্ম হলো- ইতের(ওর,ছোট ছেলের) আত-পা(হাত-পা) টিক(ঠিক) আছেনি কোন। অবুক এইল্লা(এরকম) গুরা ফোঁয়ার(ছোট ছেলে) কেনে এতর ডর অসুগ অইয়ে(এতো বড় রোগ হইছে)। তোঁরা আরে ন খস কিল্লাই( আমাকে কেনো আগে জানানো হলো না)।
এটাই মা।


রাতে একটা অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলাম।দেখি কি, আমি কোরবানির আগে গরুর বাজারে গিয়ে একটা উট সস্তায় পেয়ে কিনে ফেললাম।বাসায় আনার পর সবচেয়ে বেশী ক্ষেপা ও ক্ষুদ্ধ হলো তারা(সাচ্চু,হাসান,রুবেইল্লা,দেলোয়ার) যারা আজ ২০ বছর ধরে আমার গরুর কোরবানীর মাংশ বানায়। সাচ্চু উট দেখেই বলে উঠলো,তুহিন ভাই ইডা কি ঠ্যাংগা আনলেন।ইডারে তো_ _ _ করলেও(খুব আপত্তিজনক) এক ফোডা লক্ত বাইর হইতো না। ৪টা ঠ্যাং আলাদা কইরা লাইলে এই বাসকোডা লইয়া আফনে কিরবাম। আমি এ পর্যায়ে মেজাজ হারা হয়ে তাকে গালাগালি করলাম। আর সেও তার দলবল নিয়ে-দুনিয়ায় ভাতের অভাব নাই বলে জয় বাংলা শ্লোগান দিতে দিতে চলে গেলো। খোলা মাঠে আমি একা ঐ ঠ্যাংগা উট নিয়ে।
তারপরই আমার ধরফরিয়ে ঘুম ভাঙ্গে।আমি আবিষ্কার করলাম,আমি ঐ ঠ্যাংগা উট কিনি নাই।আর আমি খোলা মাঠেও না। আমার ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে।



দেখছেন, গরীব দূর্বল প্রতিবেশী হওয়ার কি বিপদ!আমাদের ফেলানিরে গুলি করে কাটাতারে ঝুলিয়ে দেয়।আর শাহিদা/মুন্নীরে কাঁধে করে পাকিস্তান দিয়ে আসে।


এই একটা অদ্ভুত যুগ! এটম বোমা বানাইছে বলে আবুল কালামের মৃত্যুতে কানতে কানতে শেষ।কিন্তু নিজের দাদা নানার মৃত্যুতেও নাকি এতো কান্না আসে নাই।কারন আর কিছুই না, উনারা কিছুই বানাই নাই। উলটা শেষদিকে বিছানাবাসী হইয়া দীর্ঘদিন ল্যাদাইয়া লুদাইয়া ঘর শুদ্ধা লোকেরে ভীষম ভুগাইয়া গেছে।


গ্রীসের অবস্থা আমার মতোই হয়ে গেছে, আমি আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম। এই মুহুর্তে আমার রিকশা চালিয়ে খাওয়া উচিতের উপর ২০০% উচিত। কিন্তু ভাই-ব্রাদার , শ্বশুরকুলের কথা চিন্তা করে কোনমতেই নামতে পারতেছি না। একমাত্র উপায় রাতে মুখে গামছা পেচিয়ে বা সান গ্লাস পড়ে রিকশা-সিএনজি চালানো। সেটাতেও পুলিস অর্থাৎ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রবল আপক্তি। আমারে মাইরালা!





ছোকরাকে জিজ্ঞেস করলাম,বল তুই কি দূঃখে বিড়ি খাস? সে উদাস দৃষ্টিতে ধুমা ছাড়তে ছাড়তে বললো, যেই মেয়েটাকে ভালবাসতাম সে আমার পাশের বাসায়ই থাকতো। একবার তাদের সাথে কোরবানী ভাগে দিছিলাম। তো গরু কাটার সময় সবাইকে সাহায্য করার জন্য প্লাস ঐ মেয়ের বাবাও কসাইয়ের সাথে শখ করে হাত লাগালো,ভাবলাম হবু শশুর তার জামাই সম্পর্কে একটা ভালো ধারনা পাক। কিন্তু কিভাবে যেনো হাত থেকে ফসকে গরুর ঠ্যাং মাটিতে আছাড় খায়। এই ভরা মজলিসে আব্বা নাদান বলার সাথে ফাউ হিসেবে একটা চটকানা দিয়ে দেয়। মেয়েটা অলরেডি জানালা দিয়ে থাকিয়েও ছিলো। গরুর সাথে প্রেমও কোরবানী হয়ে গেলো।

ভাবতেছি,মানুষ কতো দূঃখে না জানি বিড়ি খায়?



আনিসুল হক ও তার মোহাম্মদী গ্রুপ নিশ্চয় ভুলে যায়নি, বেগম খালেদা জিয়ার দুই টার্মে সে নিজে কতো কাজে ততকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলো। আজকে দেখি পত্রিকাতে তার সাথের সন্ত্রাসীগুলো একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর গাড়ীতে আক্রমন করে।এগুলো শামীম ওসমান,মায়া এদেরে মানায়। কিন্তু আনিসুল তুমি! আহারে ! আনিসুল! সঙ্গদোষে বঙ্গদোষ!দোয়া করি, শয়তানের চক্র থেকে মুক্তি পাও। তোমারো মোঙ্গল,আমাদেরও চেঙ্গিস খান!



কারো কিছু চোরে নিয়ে গেলে নোয়াখালির লোকেরা তাদের স্থানীয় ভাষায় বলে- চোরাইয়া হেতে্রে হোন মারি দিছে।ভাবতাম ,কি আশ্চর্য কথা! চুরি গেছে যাক।এতে কৌমার্য হারানোর কথা কেনো উঠে? এখন বুঝি, উঠে ,উঠার কথা বলেই উঠে। ধর্ষিতা যেমন সকলের সহানুভূতি পায়, কেউ কেউ তার থেকে জানতেও চায়- ঠিক কিভাবে ঘটনাটা ঘটলো? তেমনি সকলে চুরি যাওয়া লোকের কাছ থেকে জানতে চায়- চোর কিভাবে মারলো, না মানে কিভাবে জুতাটা নিলো?



কারো কিছু চোরে নিয়ে গেলে নোয়াখালির লোকেরা তাদের স্থানীয় ভাষায় বলে- চোরাইয়া হেতে্রে হোন মারি দিছে।ভাবতাম ,কি আশ্চর্য কথা! চুরি গেছে যাক।এতে কৌমার্য হারানোর কথা কেনো উঠে? এখন বুঝি, উঠে ,উঠার কথা বলেই উঠে। ধর্ষিতা যেমন সকলের সহানুভূতি পায়, কেউ কেউ তার থেকে জানতেও চায়- ঠিক কিভাবে ঘটনাটা ঘটলো? তেমনি সকলে চুরি যাওয়া লোকের কাছ থেকে জানতে চায়- চোর কিভাবে মারলো, না মানে কিভাবে জুতাটা নিলো?














বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৭

ফেসবুকের ট্রেন্ডিং ও কতিপয় আঁতেলদের আতলামী ও নাপতালি।

আমার কয়েকজন ফেসবুক বন্ধু দেখি ইদানিং স্টাটাস দেয়(প্রায়সই বিরক্তি সহকারে), "পাবলিক আছে আজ নোবেল নিয়ে তো কাল খান আতা নিয়ে"।তারপরই তাদের বিভিন্নরকম জ্ঞানগর্ভীয় ভাষন এর বিরুদ্ধে।
তারা পাবলিক বলতে এই তিনি নিজে বাদে আরসব ফেসবুক ইউজারদের বুঝিয়েছেন।উনি নিজে খুব জ্ঞানী ফেসবুকার আর বাকিরা খুব বিরক্তিকর।উনারা জানে না,পাবলিক যার যার বাপের টাকা খরচ করে ফেসবুকে আসে, উনাদের বাপের টাকায় না।উনাদের এই আলগা আতলামি আর নাফথালি নিয়ে উনাদের বুঝা উচিত, তাদের কে বলেছে ফেসবুকে থাকতে।
ফেসবুক আর টুইটারসহ অন্যান্য জনপ্রিয় সোশাল সাইট গুলো সবই আসলে এই সোশাল ট্রেন্ডিং নিয়ে আছে,এটাই চলতি নিয়ম।আজ বাজার কি নিয়ে গরম ,সেটার প্রতিক্রিয়াই স্বাভাবিকভাবে ফেসবুকে বা টুইটারে পড়বে।টুইটারে তো প্রতিদিন শীর্ষ ২০টি ট্রেন্ডিং বা বাজার গরম খবর থাকবেই।সেই ধারায় ফেসবুকও সরগরম থাকে।আবারো সেসব জ্ঞানী আতেলদের বলছি, আপনাদের ভাষায় পাবলিকেরা একেবারে স্বাভাবিক সব চলতি ঘটনা নিয়ে ফেসবুক বা টুইটারে থাকে।পাবলিক স্বাভাবিক,অস্বাভাবিক আপনি নিজে আতেলটা।
৮০-৯০ এর দশকে যেমন বাজার আর মাঠ-ঘাট এ পাবলিক ব্যস্ত ছিলো একিই রকম বাজার গরম খবর নিয়ে,যেমনঃ শারমীন রীমা হত্যাকান্ড,মুনীর খুকু এফেয়ার ইত্যাদি।সেটাই এখন সোশাল সাইটের মাধ্যমে তার ধরন পালটেছে।এখন সামিয়াদের পিএইচডির রচনাচুরিও সোশাল সাইটের ট্রেন্ডিং হয়।ভেবে দেখেন,সেই রীমা হত্যাকান্ড, খুন,ধর্ষন, এর ওর বৌ নিয়ে ভেগে যাওয়া থেকে ট্রেন্ডিং একেবারে সর্ব্বোচ্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের থিসিস চুরি নিয়ে বাজার গরম রেখেছে।এটা কিন্তু রীতিমতো একটা ডিজিটাল বিপলব। ১৯৯০ সালে কেউ ভাবতেও পারে নাই সংবাদ মাধ্যম এভাবে সোশাল সাইটের নিউজফিডে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়বে। আজকে এটা অত্যান্ত জনপ্রিয় একটা মাধ্যম।কারন এখানে পাবলিক সরাসরি তাদের মন্তব্য জানাতে পারে।সরকার সবরকম মিডিয়াকে তাদের তাবেদারে পরিনত করলেও ফেসবুক টুইটারের ব্যবহারকারীদের মুখ বন্ধ রাখতে পারেনি।
কথা আর না বলি।উপরের এই আতেলগুলা এগুলো বলে মুলত মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতাকেই অবমাননা করে। অন্যের ব্যক্তিগত মতামতকে ভালো না লাগা কোন দোষের কিছুই নয়।কিন্তু তা নিয়ে ঠাট্টা তামাশা জ্ঞানগর্ভ ভাষন দেয়া অন্তত ভদ্রলোকের কাজ নয়।পারিবারিকভাবে এরা একটা নিচু মানসিকতার পরিবার থেকে আগত।এখন ফেসবুকে এসে হেডম জাহাজের কচ্ছপ হয়ে গেছে।

ফেসবুক থেকে। ১৭ অক্টোবর,২০১৭।

আমার ছেলে আর আমার স্ত্রীর মাঝে কথোপকথন :
মিনহাজ তুমি দুপুরে ঘুমাবা।দুপুরে ঘুরাঘুরি করবা না।দুপুরে ঘুমাইলে ব্রেন ঠান্ডা থাকে।ব্রেনের ঘুম দরকার।
এ পর্যায়ে আমার ছেলে জিজ্ঞেস করে, ব্রেন তাহলে এখানে(সে আগেই জানে ব্রেন মাথার ভেতর থাকে) ঘুমায়।ব্রেন কি আম্মু তাহলে খায়?আমি খাইলে তাহলে ব্রেনও খায়।আম্মু তাহলে আমি ব্রেন পালি।


নোয়াখালীর লোকেরা আমার খুব প্রিয় তাদের উপযুক্ত বিশেষন ব্যবহার করার জন্য।আমার বেশীর ভাগ বন্ধুই এই জেলার।উনারা কেউ যখন মাতলামি আর পাগলামি তে আছন্ন হন, তখন মনে করেন এই লোকেরে কোন অস্বাভাবিক কিছু বা অশরীরী কিছু ইন্টারকোর্স করে দিছে, না হলে এমনসব কথা বা আচরন কেনো করতেছে?
নোয়াখালীতে এমনসব পাগলামিতে বা ভুতে পাওয়া লোকদের সম্পর্কে এভাবে বলা হয়:
হেতেরে হাগলে হোন মাইচ্ছে।
নতুবা
হেতেরে বুতে হোন মাইচ্ছে।
কথা মনে এলো স্বনামধন্য খান আতাউর রহমানকে বাচ্চুর রাজাকার বলা দেখে!



বাংলাদেশের অনেক লোক আছে যারা দেশে থাকলে দামী পানীয় তেমন একটা কিনে খেতে পারে না। এরা তাই প্লেনে ফ্রি পানীয় পেলে সমস্যা করে।আর এরাই বিদেশে গেলে এদের যখন অন্যরা সন্মান করে দামী পানীয় খাওয়ান,এরা অনভ্যাস বশত হাভাতের মতো গলা ডুবিয়ে খেয়ে ফেলে।এরা ভাবে,আর যদি না জুটে।এই মাত্রাতিরিক্তভাবে খাওয়া এদের তরলমতি করে ফেলে।তখন মাতলামি বশত এরা যা তা বলে বসে।যতোটুকু ওজন না,তার বেশী কথা বলে ফেলে।
খান আতাউর রহমান একজনই হয়।বাচ্চুরা বাচ্চুই থাকে।



আমার পাঁচ বছর বয়সী ছেলে আমার দুলাভাইকে(উনি সরকারের একজন সাবেক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা) আজকে বলেছে, "আংকেল আপনি বুলু হোয়েল গেম এর ছবি দেখতে পারবেন,কিন্তু খেলতে গেলেই মারা যাবেন।দুলাভাই জিজ্ঞেস করলো কিভাবে? সে বললো,আপনি হাতে সুই দিয়ে ফুটা ফুটা করে তিমি মাছ আকবেন,আর সব রক্ত বেরিয়ে মরে যাবেন।
আমার দুলাভাই আমাকে ডেকে বলেছেন, আসলে তুহিন ওর থেকেও অনেক কিছু শিখার আছে।এর পরই উনি অজ্ঞান(হাসতে হাসতে)।




বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৭

বাঙ্গালপনা।

গরুর বাজারে গরু-ছাগল কেনার সাথে বিয়ের বাজারে বর-কনের বিয়ে কমপ্লিট হওয়ার একটা মিল আছে। উভয়ক্ষেত্রেই কিনে ফেলা বা হয়ে যাবার পর ধরা খেলে সংশ্লিষ্ট সবাই বলে ,এটা আল্লাহর ইচ্ছা, কিসমতে যা লিখা আছে তার বাইরে যাবার কোন উপায় নাই। কিন্তু ভিকটিমের সামনে থেকে সরে গিয়ে দূরে যেয়ে বলে, জন্মের ধরা একটা খাইছেরে। আরে নিশ্চয় মনে হারামিপনা নিয়ে বাজারে বা বিয়েতে নামছিলো।
আর কেনাবেচায় জিতে গেলে বা বিয়েতেও জিতে গেলে - ব্যক্তির সামনে বলবে- না ভাই,জিতছেন। কিসমতের বাইরে কেউ না। ব্যক্তির পিছনে বলবে- এক্কেবারে কসাইয়ের চোখ রে ভাই। গরুর দাবনাতে এরা একটা চাপড় দিয়ে বুঝে ফেলে কয়মন মাংস হবে।
একিই রকম বিয়েতে জিতে গেলে সামনে এক রকম বলবে।আর পিছনে বলবে- আহারে মেয়েটা কস্ট পাবে।এরা লোক ভালো নয়।

নরমাল ডিম!

তোফায়েল সাহেব রিটায়ার করেছেন। অফুরন্ত সময় উনাকে আরো খুতখুতে স্বভাবের করে দিয়েছে। এলাকার প্রায় দোকানদার উনার ব্যাপারে বিরক্ত। প্রতিটা জিনিস উনি খুব বেছে বেছে নেন, এতে সময় ও ব্যয় করেন, কথাও প্রচুর। আজকে উনি যথারীতি উনার বাসার সামনের দোকানে আসেন। আর সব দোকানদারের মতো এই ফিচেল ছোকরা দোকানীকে তার মোটেই পছন্দ নয়। ছোকরা তাকে দেখলেই মশকরা করার একটা সুযোগ নেয়। বিশেষ করে আজ যেটা করেছে,তাতে তিনি স্তম্বিত। এর বাবাকে বিচার দিয়ে কোন ফল হবে না। সেও একিই রকম।
তিনি আজ দোকানে ছোকরাকে জিজ্ঞেস করলেন, হাসের ডিম আছে? ছোকরা নির্লিপ্তভাবে জবাব দিলো- নাই। উনি অবাক হয়ে দেখলেন ,পুরো দুই ঝুড়ি ডিম দেখা যাচ্ছে। উনি আবার বললেন - কি ব্যাপার এই তো ডিম আছে। দোকানী ছোকরা জবাব দিলো- এগুলো নরম্যাল ডিম। আপনি সবসময় যেগুলো খুজেন একদম বড় বড় ,ডিমের গায়ে রক্ত লেগে থাকা, মানে যেই ডিম পাড়তে গিয়ে হাস-মুরগীর পোন ফেটে গেছে,সেগুলো আমার কাছে নাই, আছে এই নরম্যাল ডিমগুলো।

সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৭

মানবতা ও বিবেকের চাপ।

কয়দিন আগে রাতের বাসে ঢাকা যাওয়া হচ্ছিলো।একে তো প্রবল শীত তার উপর আমার বড় বাথরুম চাপলো।বাস তখন রাত ৪টায় দাউদকান্দি পেরিয়ে গজারিয়ার চরের উপর দিয়ে রকেট গতিতে ধাবিত হচ্ছে।আমি জোম্বির মতো কাঁপতে কাঁপতে সিট থেকে সামনে গিয়ে ড্রাইভারকে জানালাম,হে আমার ভাই,আমার কাল কেয়ামত এসে উপস্থিত।আমাকে বাচান।
উনি জানালেন, এখানে রাতে দাড়ালে যাত্রীরা চিল্লাচিল্লি করবে।আমি জানালাম, যাত্রীরা চিল্লাচিল্লি করলে আমার ওইটা থেমে থাকবে না।মানবতা আর বিবেকের চাপে তার উচিত আমাকে সাহায্য করা।বিবেকের চাপের কথা শুনে তার মধ্যে একটা বিচারকের ভাব এলো,আমিও হালকা দেখলাম যেনো তার মাথায় বিচারকের সেই সোনালি পাক দেয়া পরচুলা আর গায়ে গাউন।গম্ভীর কন্ঠে সে জানালো,সে গাড়ি দাড় করাবে।মানবতা আর বিবেকের চাপে তার পেটটাও কেমন জানি করতেছে। একটা ফিলিং স্টেশনে আমরা বিবেকের ভারমুক্ত হলাম।আরো ৫-৬জন যাত্রী বিবেকের চাপে সাড়া দিয়ে বাস থেকে নামলো।

ডানকার্ক উদ্বাসন,১৯৪০।

কোন কোন মুহুর্তে সঠিকভাবে স্ট্রাটেজিক পশ্চাদপশরন শুধু জীবন বাচায় তাইই নয় বরং পরবর্তিকালে তা বিজয়ের নিয়ামক বা অনুঘটক হয়ে কাজ করে।
ক্রিস্টোফার নোলান মুভি পরিচালক হিসেবে আমার কাছে একটা আলাদা জায়গা পান।কোয়েন ব্রাদাসরা, মাইকেল মান এরা অন্যরকম স্বাদের মুভি নির্মাতা।নোলানও তাই।সে এখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে ডানকার্কে আটকে পড়া ব্রিটিস অভিযাত্রী বাহিনীর সেই অবিস্মরনীয় উদ্বাসন বা ইভাকুয়েশন নিয়ে মুভি বানাচ্ছে। নাম "ডানকার্ক"। আর ডানকার্কের কথা শুনেই আমার ৬ষ্ট ভাইকাউন্ট জেনারেল লর্ড প্রেনডারগেষ্ট ভেরেকার গর্ট এর কথা মনে পড়লো।কারো কারো জীবনের একটি কর্মই তার বাকি জীবন মুল্যায়ন করার জন্য যথেষ্ট। লর্ড গর্ট (কি অদ্ভুত নাম ,নয় কি?
মুভি নয়, ইতিহাসটা নিয়ে বলি।১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বরে জার্মানীর পোলান্ড দখলের পর যুদ্ধ মোটামুটি ১১ মাসের জন্য অবকাশে চলে যায়।ইংগ-ফরাসী নেতৃবৃন্দ হতবাক হয়ে পড়ে ।ফরাসীরা তাদের দূর্ভেদ্য ম্যাজিনো লাইনে অবস্থান নেয়,যা ফরাসী জার্মান সীমান্তও বটে।জার্মানরা এটাকে জিগফ্রীড লাইন বলে।এই ১১ মাসে দুই পক্ষ পরস্পরকে কেবল কুটনীতিক হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছিলো।আর দরাদরি করে কালক্ষেপন করে নিজেদের সুরক্ষা করা ব্রিটিসদের পুরান অভ্যাস।১১ মাসের নীরবতা বা ফোনি ওয়ার ভাংলো হিটলারের ব্লিতসস্ক্রিগ আক্র্মনে।এতো শক্তিশালী ফরাসী বাহিনী শুধু টিপিক্যাল জেনারেলদের হাতে থাকায় মুহুর্তেই গুড়িয়ে গেলো।ফরাসী সেনাপতি গ্যামেলিন তার হেড কোয়ার্টার ভাঁসেন থেকে কমই বের হতেন।তিনি আর জেনারেল জর্জ ভেবেছিলেন, আরে ভাবাভাবির কি আছে ,ফরাসী আর্মি প্রস্তুত ।আক্রমন ম্যাজিনো লাইন আর ১ম বিশ্বযুদ্ধের মতো আবারো বেলজিয়ামের ভেতর দিয়ে আসবে।সেই রিভলভিং ডোর শ্লাইফেন পরিকল্পনা।প্রথাগত জেনারেল শ্লাইফেনের সেই উনবিংশ শতকের পরিকল্পনা।যেটা ফ্রান্সকে বোঝাবে যে ম্যাজিনো লাইন ভেঙ্গেই আসবো,যতো কিছুই করো।কিন্তু পুবের ম্যাজিনো লাইনে পুরো ফরাসী বাহিনীকে টেনশনে বসিয়ে রেখে পশ্চিমে বেলজিয়ামের ভেতর দিয়ে একটা ঘড়ির কা্টার বিপরীত দিকে ঘোরা বক্সিং এর আদর্শ ভলি।পুরো জার্মান বাহিনী পশ্চিম থেকে ঘুরে একদল যাবে আইফেল টাওয়ারের দিকে আর আরেকটা ঝঞ্জাবাহিনী ম্যাজিনো লাইনের পিছনে বসা ফরাসীদের ধরবে।
এর বিপরীতে গ্যামেলিন বেলজিয়াম সীমান্তে ডাইল নদীতে নাৎসিদের পাওয়ার জন্য গ্যামেলিন ডাইল প্ল্যান বানান।ফরাসীদের দূর্ভাগ্য,তাদের জাতির ইতিহাসের সন্ধিক্ষনে গ্যামেলিন ,জর্জ,মার্শাল ওয়েগাদের মতো ঘাটের মড়া বুড়োগুলোকে পাওয়া।২য় বিশ্বযুদ্ধ যে ১ম বিশ্বযুদ্ধের মতো পরিখাযুদ্ধ নয়, আর ভর্দাবিজয়ী মার্শাল পেতা(পেতা ফ্রান্সে ভিসি সরকার গঠন করে ফরাসী রাজাকারের নাম কামায়) ও লড়াকু মার্শাল ফশ ও আর তখন নেই যে জাতিকে উদ্দীপিত করবে।চারদিক থেকে আক্রান্ত হয়ে ফশ তার সৈন্যদের বলেন, দেখো,আমার ডান বাম আক্রান্ত ,চারদিক অবরুদ্ধ, কিন্তু ভেতরটা গর্জাচ্ছে।আমরা আক্রমনে যাচ্ছি।
১৯৪০ এর বসন্তে ১১ মাসের নীরবতা ভেঙ্গে নাৎসিরা আক্রমন করলো।ম্যাজিনো লাইন দিয়েও নয় ,বেলজিয়েমের ভেতর দিয়েও নয়।এই দুইয়ের মধ্যবর্তী আর্দেনের জঙ্গলের ভেতর দিয়ে।শেষ ২০০০ বছরের ইতিহাসে রোমান শাসক বা গথ দস্যু কেউ এই কাজটা করে নাই।এতো দূর্গম বন ভেদ করে কোন বাহিনী আসবে এটা গ্যামেলিন বা জর্জ কারো মাথায় খেলে নাই। কিন্তু নাতসি জেনারেল মানস্টাইন আর পানজার জিনিয়াস গুডেরিয়ান এই চিন্তাটা করছিলো।এই ১১ মাস চুড়ান্ত কেমোফ্লাজের সাহাজ্য নিয়ে কেবল রাতে শ্বাপদের মতো তারা এগিয়েছিলো।মুড়ির মতো গুপ্তচর ছড়িয়ে দিয়েছিলো আর্দেনের আশেপাশে।আর ফরাসিদের নিশ্চিন্তে ঘুমানোর জন্য এই জায়গায় ছিলো ফরাসী ৯ম আর্মি।আর তার অধিনায়ক জেনারেল কোরা। পুরো পানজার বাহিনী এই হতভাগ্য কোরার বাহিনীর গায়ে ঝাপিয়ে পড়ে।কোরা ১ম দিনই বীরের মতো তার সৈন্যদের নিয়ে নিহত হন।আর্মি হেড কোয়ার্টারকে শুধু জানাতে পেরেছিলেন যে তারা লড়ছেন।নিজেদের সাহায্য বিন্দুমাত্র চাননি, নাৎসিরা মেউজ নদী পেরিয়ে প্যারিস আসবে।প্যারিস বাচুক।
ফরাসী বাহিনী বিনা প্রতিরোধে গুড়িয়ে যাওয়ায় চার্চিল হতবাক ও বিহবল হয়ে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী রেনো আর প্রতিরক্ষামন্ত্রী দালাদিয়ের কাছে,এমনকি নিয়ম ভেঙ্গে গ্যামেলিনের কাছেও- আপনাদের রিজার্ভ বাহিনী কই? নাৎসিরা মেউজ নদী আর আমিয়ান্সে কিভাবে নদী পার হলো? কোথায় আপনাদের প্রতিরোধ।চার্চিলের মনে নিজের দেশের ৪ লাখ ব্রীটিস বাহিনীর কথা এসে যায়,যারা ব্রিটিস অভিযাত্রী বাহিনী নামে ১ম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই ফ্রান্সে থাকে ।এদের কি হবে? চার্চিল ও ইংল্যান্ড জানে ,১ম বিশ্বযুদ্ধে ৫ লক্ষ ব্রিটিস সন্তান ফ্রান্স আর বেলজিয়ামের মাটিতে ঘুমিয়ে আছে।সেবার শুধু বেলজিয়ামে প্যাসেন্ডেলে ইপ্রে দখলের সেকেন্ড ফেজে আড়াই লক্ষ ব্রিটিস সৈন্য নাই হয়ে যায়।
গ্যামেলিন সেটাই বলে যেটা চার্চিল শুনতে চাচ্ছিলো না।গ্যামেলিন জিজ্ঞেস করে- ব্রিটিস অভিযাত্রী বাহিনী কি এই মুহুর্তে পালটা আক্রমন দিবে,ফরাসীদের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে? চার্চিল জানায় প্রশ্নই উঠে না।ব্রিটিসরা এখন তাদের অভিযাত্রী বাহিনীকে রক্ষা করবে যাতে অন্যকোনদিন অন্যকোন রণক্ষেত্রে এই বীরেরা নামতে পারে।ব্রিটিস অভিযাত্রী বাহিনী ফ্লান্ডার্সের দক্ষিনে ডানকার্কে সমুদ্রের পার টুকুতে আটকে আছে।তাদের বিপরীতে আছে জেনারেল রোমেল।হিটলার কোন এক অজ্ঞাত কারনে এই ব্রিটিস বাহিনীকে আপাতত কিছু করছেন না।আর রোমেল খুবই ক্ষুদ্ধ হয়ে আছে ফুয়েরারের উপর।তার এই সাড়ে তিন লাখ ব্রিটিস অভিযাত্রী বাহিনীকে আটলান্টিকে ঠেলে ফেলে দেয়ার চুড়ান্ত ইচ্ছা।
চার্চিল রাতেই ইংল্যান্ড ফিরে।খবর চারদিক খারাপ।ফরাসী সেনাবাহিনী বিধবংশ হয়ে যাওয়াতে ফরাসী নৌ-বাহিনী সমস্ত সরঞ্জাম নিয়ে আলজিয়ার্সের ওরান বন্দরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।চার্চিলের দৃঢ় বিশ্বাস এরা জার্মান নৌবহরের কাছে ধরা দিবে।উনি একটা মারাত্বক সিদ্ধান্ত রাজকীয় মেরিনকে দিয়ে রেখেছেন।ফরাসী নৌবহর ওরান বন্দরে ব্রিটিস মেরিনকে নেতৃত্ব বুঝিয়ে সরঞ্জামের দায়িত্ব দিয়ে দেবে ।নচেৎ ডেপথ চার্জ করে সমস্ত ফরাসী নৌযান ডুবিয়ে দেবে।তারা তাই করেছিলো।আঘাতের পর আঘাতে ফ্রান্স ম্রিয়মান হয়ে যায়।জেনারেল ডিগল একে পাশবিক আবেগের অভিব্যক্তি বলে অভিহিত করেছেন।
এবার জেনারেল লর্ড গর্ট।তিনি ফরাসী বাহিনীর অবস্থা দেখে রাতেই চার্চিলের সাথে বেতার বার্তায় বসেন।পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় সমগ্র মন্ত্রীসভা গর্টের কাছে জানতে চায়, আপনি কি করবেন?গর্ট একেবারে সংক্ষেপে জানায় ,আমার বাহিনীকে বাচাতে হবে।যদি সাড়ে তিন লাখের এক তৃতিয়াংশ আমি মেইন ল্যান্ডে নিতে পারি সেটাও ভাগ্য।আপনারা জাতিকে ভয়ঙ্কর দূ;সংবাদের জন্য প্রস্তুত রাখুন।আর আমি সৈন্যদের সাথেই থাকছি।তাদের পাশে আমি মৃত্যুবরন করতে চাই।
চার্চিল সমস্ত রাজকীয় বিমান বহরকে ডানকার্কের চারপাশের নাৎসি অবস্থানে অব্যাহত বোমাবর্ষনের নির্দেশ দেন। সমগ্র রাজকীয় মেরিন তাদের রিকুইজিশন করা ভ্যাসেল নিয়ে এসে হাত লাগায়.২৭ মে থেকে ৪জুন পর্যন্ত সময়ে জেনারেল গর্ট ৩লাখ ৩৮হাজার সৈন্য পার করে উদ্বাসনের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলে।সর্বশেষের নৌযানে লর্ড গর্ট ইংল্যান্ডে নামে।এই বেচে ফেরা বীর সৈনিকেরা ঠিক ৪ বছর পর আবার নরমান্ডিতে মানব ইতিহাসের বৃহত্তম ল্যান্ডিং অভিযানে নামে।সেটা ছিলো ৬জুন,১৯৪৪ ডি-ডে।

নিরাপত্তাবলয়!

আইজিপি সাহেবের নিরাপত্তা বলয় তৈরীর আহবান শুনে আমার কেনো যেনো বৈদ্যতিক বলয় তৈরীর কথা মনে এলো|আচ্ছা থাক সে কথা|
ক্লাস ফাইভ না সিক্সে একবার এরকম নিরাপত্তা বলয় বানাইছিলাম| আমার মুসলমানি হইছে, সপ্তাহ না পেরোতেই বনানী কমপ্লেক্স এ নায়ক রুবেলের খুবই মারাত্বক একটা মুভি আসছে| এ সিনেমায় একটা সে আমলে বিশ্বকে পিছে ফেলে দেয়া স্পেশাল ইফেক্টের কাজ আছে| শুনার পর আর ঘরে থাকতে পারতেছি না|রুবেল ভিলেনের অন্ডকোষ চিপে মেরে ফেলে,সেটা নাকি ইনসেটে আলাদা করে দেখিয়েছে|আমরা জসীমের ভিলেনকে গিরাকাট্টা মাইর দেখতে দেখতে ফেডাপ |আমাদের একটা সিনেমা দেখার দল আছিলো| ওরা আমাকে ফেলে যাবে এটা জানার পর আমি লালু ভুলু মার্কা কান্না দিলাম| আশির দশকে এসব কান্নার ভ্যালু আছিলো,এখন চুলও নাই|
যেহেতু আমার মুসলমানির এক সপ্তাহও পার হয় নাই,তাই ভিকটিমের গায়ের ব্যান্ডেজ তখনও কাচা| আমিই বললাম- দেখ আমি লুংগি পড়েই যাবো,ওই জায়গার লুংগিটাকে একটু আলগি দিয়ে রাখবো| তোরা আমাকে ঘিরে একটা নিরাপত্তা বলয়(!) তৈরী করবি|
সবই ঠিকঠাক এগোলো| গার্ড রেজিমেন্টের সহায়তায় রাস্ট্রপতির মর্যাদা নিয়ে লুংগি উচিয়ে হলে ঢুকলাম|কিন্তু হিট সিনেমার সাইড এফেক্ট হিসেবে ছবি ভাংগার পর জনতার প্রবল চাপে আমার নিরাপত্তা বলয়ের গার্ড রেজিমেন্টই কেবল ভেংগে পড়ে নাই স্বয়ং আমি চিতকার করে জানান দেই, ওদের চাপ দিয়েন না,আমার মুসল্মানি হইছে| আমাকে বাচান|

আনারসের বিড়ম্বনা।

কয়টা আনারস আনছিলাম।এটা আমার অতীব প্রিয় ফল।কিন্তু ঘরের আর সবের বিষ।আমার আম্মা কিরণমালা দেখতেছিলো।খুবই গুরুত্বপুর্ন মুহুর্তে যখন কটকটি,কিরনমালা,ডঙ্কার এদের ভাগ্য নির্ধারন হচ্ছিলো তখন আনারস নিয়ে আমার প্রবেশ অত্যান্ত অনাহুত বলে বিবেচিত হলো।আম্মা হায় হায় করে জানালো, আর যে কয়দিন বাচার সম্ভাবনা ছিলো তাও আমি নিঃশেষ করে ফেলতেছি। এগুলা কে ছিলবে, ঘরদোড় পুরো নোংরাই ভরে যাবে।প্রত্যেকদিন আনারস খাবার কি আছে?
তো নিয়ম আছে,চায়ের কাপের থেকে পেয়ালা বেশী গরম।আমার স্ত্রী মুহুর্তে উদ্যোগটা নিয়ে নিলো।সে জানালো, আম্মা যেটা পছন্দ করে না,আমি দেখছি সেগুলো আপনি বেশী বেশী করেন।তারপর তার আর আম্মার ছি ছি সহ নিন্দা ক্রোধ শুনে মনে হলো আমি ঘরে নিকাহ করে ২য় পক্ষের স্ত্রী আনছি,আনারস না।
যেকোন অনাসৃষ্টি কে আমার আম্মা উনার গ্রামের বাড়ির যেকোন একটা লোকের উদাহরন দিয়ে শেষ করে।যেমনঃ আমার হাতে বই থাকলে বা পড়তে থাকলে আমার আম্মা জানায় উনাদের গ্রামের খুরশীদ ভাইচা এই বই আর গাজায় জীবনটা শেষ করে দিছে।আজকে জানালো, উনাদের গ্রামের মোল্লাবাড়ীর রুইত মিয়া এই আনারস আর সাপের পিছে দৌড়াতে দৌড়াতে শেষে সর্পাঘাতে মরেছে।হায়রে আমি কবে সাপের পিছনে দৌড়ালাম?
এইসব যখন চলতেছে তখন আমি নিজে নিজে আনারস কাটতেছি আর ভাবতেছি, আনারস এর গঠনটা কেনো এমন?আবার চোখগুলোও ফেলতে হয়। এতোসব করে খাওয়া আর সহ্য হয় না।

সুইসাইড খাওয়া।

আচ্ছা,তোমরা কিছু একটা ঘটলেই সুইসাইড খাও, সমস্যাটা কি?কয়দিন আগে ফেসবুকেই পড়ছিলাম এক মেয়ে ডেটল খেয়ে ফেলছে,তার বান্ধবী জানালো, সে তার একটা সেলফি দিয়েছিলো,কিন্তু টানা দুইদিনে হারাম একটা লাইক না পড়াতে সে জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে|সেই বান্ধবীই জানালো পোস্টটা অনলি মি থাকাতে এই ভুল বোঝাবুঝি|
আরে তুহিন ভাই,আপনি আমার আত্মহত্যার চেস্টার সাথে এসবের তুলনা দেন,এজন্যও আমার আবার সুইসাইড খাইতে ইচ্ছা করতেছে|আব্বা কোরবানীর দিন গরু কাটার ওইখানে আমাকে সবার সামনে থাপ্পড় মারছে|আমিই কাজে হেল্পকরার জন্য গরুর একটা ঠ্যাং ধরেছিলাম,হঠাৎ হাত থেকে ঠ্যাং টা কিভাবে যে ছুটে গেলো|পাশের বিল্ডিং এর আংকেলের সাথে আমরা একসাথে কোরবানি দিচ্ছিলাম ,হায়! আমিই আংকেলদের সুবিধা হবে ভেবে তাদের বিল্ডিং এর সামনেই গরু ফেলার জন্য আব্বাকে রাজি করাই| কতোকষ্টে আংকেলের মেয়েকে ভুলকি ভালকি দিয়ে লাইনে আনছিলাম এই একটা চোবার(থাপ্পড়) এ গরুর ঠ্যাং না শুধু, মেয়েটাই হাতছাড়া হলো| পথেঘাটে দেখা হলে যে হাসিটা দেয়, শুধু ওটাই মরে যাবার জন্য যথেষ্ট !

কুম্ভীলকপনা আমার লেখা থেকে।

বাংলামেইল আমার "ত্রিশের দশক ও স্টালিনের শুদ্ধি অভিযান" লেখাটা স্রেফ চুরি করে মেরে দিয়েছিলো।আমি ইনবক্সে তার কাছে কৈফিয়ত চাইলে সে একেবারে চুপ মেরে যায়।এভাবেই বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল ফেসবুকের অনেকের লেখা চুরি করে মেরে দেয়।আল্লাহর কি বিচার এই কর্ম করার অল্প কিছুদিন পর বাংলামেইল তথ্য প্রযুক্তির ৫৭ ধারা মামলা খায়।আমার থেকে চুরি করা সেই লিঙ্কটি দিচ্ছিঃ https://www.facebook.com/tuhin.ctg/posts/10202034897550046

স্যাডলার কমিশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২১।

কয়দিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস গেলো।স্যাডলার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯২১ সালের পহেলা জুলাই ঢাকা ইউনিভার্সিটি তার কার্যক্রম শুরু করে,আরো আগেই হতো ১ম বিশ্বযুদ্ধ এই কার্যক্রমে বিলম্ব ঘটায়।আজকে আমি ব্রিটিশ ভাইসরয় ও গভর্নর এবং ১ম ভিসি হার্টগ এর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও গভীর শ্রদ্ধা অনুভব করি।বস্তুত বাংলাদেশের সকল নাগরিকের কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা তারা ডিজার্ভ করে ।কেনো করে তা এবার বলছি।
প্রতিষ্ঠালগ্নে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সমাজের এমন অনেক লোক এর বিরোধিতা করে যে,আজকে ৯৬ বছর পর সকলে ভাবতেই পারেন,আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পেলে বাঁধা দেয়ার ব্যাপারটা আসেই বা কোন চিন্তাধারা থেকে।ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার তার জীবনী" জীবনের স্মৃতিদ্বীপে" বইয়ে এই ব্যাপারটা জানিয়েছেন।তিনি ১৯৩৭-৪২ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছিলেন।উনি জানান, ব্রিটিস প্রশাসক সরাসরি কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার আশুতোষ মুখার্জিকে জানিয়ে দেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হবেই,এর অন্যথা হবে না।আপনি বলুন কি হলে ,আপনি এর বিরোধিতা করবেন না। অতঃপর তিনি জানান,তিনি অতিরিক্ত ৪টি বিভাগ পেলে এর বিরোধিতা করবেন না।
অতঃপর অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করলো।হার্টগ এতে খুব বাছা বাছা বিদ্ধান লোকদের জড়ো করলেন।আরেকটা ব্যাপারও ছিলো,এর বেতন সেই আমলেই ১৮০০টাকা মাসিক স্থির হলো।যেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ৪০০-৬০০ টাকার মধ্যে ছিলো।পাশাপাশি শিক্ষকদের রমনার কৃষ্ণচুড়ার ছায়ায় ছায়ায় মনোরম বাসস্থান। ফলে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী,সত্যেন বসু, লেখক নিজে,স্যার এ এফ রহমান, ডঃ মুহাম্মদ শহিদুল্লাহর মতো অনেক বিদ্ধান লোক ঢাকা পায়। আর বাস্তবেই কারিকুলাম ও একাডেমিক দিক থেকে ঢাকা কলকাতাকে পিছে ফেলে দেয়।আর তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কাদের নিয়ে চলতো এর উদাহরন রমেশ মজুমদারে বইয়ের ৪৬ পৃষ্টা থেকে দিই।
যেসব শিক্ষকরা কলকাতা থেকে ঢাকা চলে যাচ্ছেন তাদের উপলক্ষ্য করে একটা বিদায় গোছের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।প্রধান অতিথী আশুতোষ মুখার্জি। সেই অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতির কারমাইকেল অধ্যাপক দেবদত্ত রামকৃষ্ণ ভাণ্ডারকর বললেন, সম্প্রতি তিনি এক বৃহৎ শিলালিপি আবিষ্কার করেছেন,তাতে অনেক নতুন কথা আছে।আমার বক্তৃতার বিষয়ের সাথে সম্পর্ক না থাকলেও আমি এর উল্লেখ করতে চাই ।তিনি একটি লুপ্ত পুরানের ভবিষ্যত উক্তি উদ্ধৃত করেন।সেটা এই, কলিযুগে বৃদ্ধগঙ্গা(স্পষ্টই বুড়িগঙ্গা) নদীর তীরে হরতগ(স্পষ্টই ভিসি হার্টগ) নামে এক অসুর জন্মগ্রহন করবে।(আমি আধাঘন্টা হাসছি) সে মুল গঙ্গার তীরে এক আশ্রমের(কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়) অনেক শিষ্যদের ভাগিয়ে নিয়ে গিয়ে নিজের আশ্রমে নিয়ে ঢুকাবে। আর অতি অবশ্যই সেসব শিষ্যও ক্রমে ক্রমে অসুরত্ব প্রাপ্ত হবে। (রমেশ বাবুরা আর কি, অসুরে রুপান্তরিত হবেন)।
একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারমাইকেল প্রফেসর এই উক্তি করেছেন।ভিসি আশুতোষ মুখার্জি এতে ক্ষুদ্ধ হন।কিন্তু ভবিষ্যতের অসুর রমেশ বাবু,সত্যেন বসু,শাস্ত্রী মহাশয়রা হরতগ নামে অসুরের কাছে তথাপিও গিয়েছিলেন।

জুতাচোর।

বন্ধু নিলয়ের মসজিদ থেকে জুতা চুরি গেছে শুনে আমার নিজের জীবনের এক মর্মান্তিক ঘটনা মনে পড়লো|
কলেজের প্রথমদিন ক্লাস করে কলেজের মসজিদেই নামাজ পড়ার সময় চোররুপি ইবলিশ শয়তান আমার মাত্রই আগের রাতে কেনা দামি জুতা চুরি করে ফেলে| আমার ঈমানকে সে কঠিন অবস্থায় ফেলে দিছিলো,আমি আল্লাহর কাছে মজলুমের মতো ফরিয়াদ করেছিলাম, এতো ছোট বয়সে এতো কোমলমতি কোন বালকের এতো কঠিন পরীক্ষা কেনো খোদা? রহমানুর রাহিম দুইটা মাস জুতাগুলা পড়ার পর না হয় পরীক্ষা দিতাম|আমার বিহবলতা দেখে ঈমাম সাহেব যারপরনাই সমব্যথী হলেন, একজোর স্যান্ডেল দিলেন এ অবস্থায় যাতে ঘরে যেতে না হয়,পরের দিন ফেরত দিলেও হবে জানালেন| বাকি মুসল্লীরা জ্ঞান দিলো আমার সতর্কতার অভাব নিয়ে|মানুষ কখন আত্মহত্যা করে কিংবা মানুষ খুন করে আমি সেবারই প্রথম উপলদ্ধি করেছিলাম|মনে জাগছিলো,তামাম পৃথিবীর সব লোকের জুতা চুরি করে তাদের বুঝাই,আমার কি দশা চলছে|
ঘরে আসার পর চোরের থেকেও বেশী কষ্ট পেলাম,একমাত্র মায়ের পেটের ধর্মের বোনের ব্যবহারে| সে যাকে পেতো তাকেই দেখাতো কিভাবে সালাম ফেরানোর পর আমি আবিষ্কার করলাম আমার জুতা আর এ জগতে নাই|

মুহম্মদ বিন তুঘলক।

শাসনকালের প্রায় ৫০০ বছর পরে ঐতিহাসিক মাউন্ট স্টুয়ার্ট এলফিনস্টোন তার বইয়ে লিখে যান, মুহম্মদ বিন তুঘলক তার যুগের সাথে বেমানান লোক ছিলেন।তিনি বদ্ধ উম্মাদ, সাইকো ,জৌতিবিদ্যা ও গণিতে দক্ষ ছিলেন।তুঘলকের সাথে সময় পার করেছেন ইবনে বতুতা ও ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দীন বরনী।তারা অবশ্য চা ছাকনী দিয়ে ছেকে যতোটুকু লিখলে জান বাচানো যায় ততোটুকু লিখেছেন।জান বাচানো ৩ ফরজ।
ইবনে বতুতা তার রাজত্বে ৮ বছর কাজীর দায়িত্ব পালন করেন।তিনি বলেন ,হেন কোন দিন নাই সুলতানের দরবারের মুখে বস্তাবন্দী লাশের স্তুপ ছিলো না।তিনি অবাধে মৃত্যুদন্ড দিতেন।চোরের হাত কেটে দিতেন, বেত্রেঘাত বা চাবুকের উপযুক্ত অপরাধীকে চাবকাতেন।মোটামুটি একটা রক্তাত অধ্যায়।ইবনে বতুতাকে তিনি ১২ হাজার স্বর্নমুদ্রা বছরে বেতন দিতেন, তাই বতুতা খুব আনন্দে ছিলেন।কিন্তু তিনি শেষের বছরে একটা ভুল করে ফেলেন।তিনি বুজুর্গ দরবেশ শেখ শিহাব উদ্দীনের সাথে সাক্ষাত করেন।পুরো দিল্লীতে শুধুমাত্র এই দরবেশই তুঘলকের কঠোর সমালোচনা করতেন। তাই তুঘলক এই দরবেশকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেন।আর বতুতার সমস্ত দায়িত্ব কেড়ে নেন। ৪জন আজরাইল সদৃশ্য মামলুক দেহরক্ষী তাকে সর্বক্ষন পাহাড়া দেয়া শুরু করে।ডরে বতুতার খানা-দানা বন্ধ হয়ে যায়।তিনি শুকিয়ে যান, তিনিও দরবেশের জীবন-যাপন শুরু করেন।
জিয়াউদ্দীন বরনী বলেন, সুলতান নাগরিকদের উপর অত্যাধিক কর বসান।একিই সাথে নতুন করে তাম্র-মুদ্রা চালু করেন।কিন্তু সেটা সস্তা-গোছের হওয়াতে বাজারে বিপুল জাল মুদ্রার আনাগোনা হয়ে রাজকোষ শুন্য হয়ে পড়ে ।তুঘলক আরো ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে।এমতাবস্থায় তুঘলক দূষ্ট অবাধ্য নাগরিকদের দমনে ব্যাপক গোয়েন্দা নামিয়ে দেন। জনগন সমালোচনা না করতে পেরে যেহেতু তখন ফেসবুক এর ওয়াল ছিলো না,তাই দিল্লীর প্রাচীরের ওয়ালে তুঘলকের বাপ-মা-মাসীর নামে যা তা কহতব্য নয় এমন জিনিস লিখে রাখতো।তুঘলক তার হত্যাযজ্ঞ ব্যাপক আকারে বাড়িয়ে দেন।সাথে করে বালিকা গোয়েন্দাও নিয়োগ দেন ,এরা আমীর ওমরাহের বাড়িতে নিয়োজিত থাকতো।এরা গোপন খবর দিতো মেথরদের,মেথররা দিতো শহরের গোয়েন্দা প্রধানদের।আমাদের শাসকরা এখন বেডরুমের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে কি হবে তুঘলক সফল হয়েছিলো বেডরুমে নিরাপত্তা দিতে।তেমনি এক ঘটনা ইবনে বতুতা বলেন, এক আমীর রাত্রে তার স্ত্রীর সাথে সংগম করতে চাইলে আমীরের স্ত্রী বলেন আজ তার মুড নাই ।কিন্তু আমীর জোর করে করতে চাইলে স্ত্রী তাকে সুলতানের মাথার দিব্যি দিয়ে আজকে করতে মানা করে।আসল পুরুষ আমীর শুনে নাই নিষেধাজ্ঞা। বালিকা গোয়েন্দা মেথর গোয়েন্দা প্রধান হয়ে তুঘলকের কানে এ কথা উঠে।তার নাম শোনার পর মাথার দিব্যি দেওয়ার পরও যার এশ উঠে তার মৃত্যুদন্ড ফরজে আইন।আমীর নিহত হন।
এমন অবাধ্য নগরীকে শাস্তি দেওয়া সুলতান স্থির করেন।তিনি দিল্লী থেকে ২০০০ মাইল দূরে মহারাষ্ট্রের দৌলতাবাদে রাজধানী সরিয়ে ফেলেন ।নগরবাসী মাত্র ৩ দিন সরে যাবার সময় পায়। সরে যাবার দিন দেখা যায়,শুধু এক পঙ্গু আর এক অন্ধ জানায় তারা যাবে না।সুলতান পঙ্গুকে উচু পাহাড়ের উপর থেকে ফেলে হত্যা করে আর অন্ধকে দুই পা ঘোড়ার সাথে বেধে দৌলতাবাদ পর্যন্ত টেনে নেওয়ার হুকুম দেন।দৌলতাবাদ পৌছার পর দেখা যায় অন্ধের শুধু দুই পা আছে।শাহনামা ই হিন্দ এর লেখম ইসামা বলেন।এভাবে তড়িঘড়ি করে দিল্লী ছাড়ার সময় তার ৯০ বছর বয়সী বাবা প্রবল অসুস্থতায় অজ্ঞান ছিলেন।ফলে তাকে সেই অবস্থায়ই গড়ুর গাড়িতে করে নিয়ে সবাই রওয়ানা হন।সপ্তাহ খানেক পর জ্ঞান ফিরে উনি দেখেন এক গরুর গাড়িতে উনি,আর তার চারদিকে দূর্গম বন ,পাহাড় ও জীব জন্তু।তিনি জানতে চান,কোথায় তার দিল্লীর হাভেলি? সবাই বোঝায় পাগলের বাচ্চা পাগল দিল্লীর কি অবস্থা করেছে।উনি সেখানেই স্ট্রোক করে মারা যান।্দিল্লীর চার ভাগের একভাগ মাত্র লোক জীবিত দৌলতাবাদে আসে।
তারপর লম্বা কাহিনী ,দৌলতাবাদ একসময় তুঘলকের কাছে অসহ্য হয়ে যায়।তিনি আবার সবাইকে দিল্লী ফেরার আদেশ দেন।সেই পঙ্গু আর অন্ধ লোকের পরিনতি চিন্তা করে সবাই তার সাথে উদগ্রীব হয়ে রওয়ানা দেন।
তুঘলক এ যাত্রায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন।তার লিভার যকৃত ক্ষতিগ্রস্থ হয়।সেখান থেকেই তিনি এক মরু ডাকাতের পিছে ধাওয়া করেন।ক্লান্ত শ্রান্ত সেনাবাহিনী বলে এর পিছে ছুটবেন না।এ ডাকাত না ,স্বয়ং মৃত্যু।কিন্তু তুঘলক ছুটলো।এবং বৃথায় ঘুরে আরো দূর্বল হয়ে পড়লেন।এসময় সিন্ধু নদের কাছে থাট্টায় নদী পেরোতে গেলে একটা তেলতেলে পাল্লা মাছ বা সিন্ধুর ইলিশ মাছ দেখে তার খুব খেতে ইচ্ছা করলো।হাকিম জানালো,সুলতান এটা খাবেন না।আপনার শরীরের কলকব্জা সব মরুভূমিতে ঘুরে বিকল হয়ে গেছে।এটা আপনার সহ্য হবে না। সত্যিই এ মাছ খাওয়ার পর ফুড পয়জনিং এ মুহম্মদ বিন তুঘলক অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানে।
ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দীন বরনী ব্যাপারটাকে এভাবে লিখেছেন, এভাবে অত্যাচারী সুলতান তুঘলকের হাত থেকে জনগন, আর জনগনের হাত থেকে অত্যাচারী সুলতান উভয়ে নিস্কৃতি পেয়ে গেলো।
বাংলা ভাষায় পাগলামীর সমার্থক তুঘলকী কান্ড এই সুলতানের কর্ম থেকেই উদ্ভুত।

আমার ফেসবুক স্টাটাস থেকে।

কলকাতায় সংঘমিত্র নামে এক এনজিও চমৎকার এক উদ্যোগ নিয়েছে।উনারা কাউকে খোলা জায়গায় মলত্যাগ করতে দেখলেই একটি গোলাপ ফুল ডাটিসহ নিয়ে সাথে এক ঘটি বা লোডা পানি নিয়ে হাসিমুখে এগিয়ে যান।আশা করা হয় এর ফলে সেই লজ্জিত ব্যক্তি ভবিষ্যতে আর কোথাও এভাবে ছাড়বে না।আর এদিকে সেই ব্যস্ত ত্রস্ত ব্যক্তি ফুল দেখেও হাগতে হাগতে পালিয়ে যায়।পথে হাগমার্কের চিহ্ন রেখে।- ২১ সেপ্টেম্বর,১৬।



আমি একদিন ঠিক করছিলাম, কেনো আমি এইসব রামপাল,ধনপাল ,দেশব্যাপী খুনাখুনি, ব্যাংক লুটা,রিজার্ভ লুটা ,সেভেন মার্ডার ,ট্রিপল ,পেন্টা,হেক্সা ,অক্টা মার্ডার নিয়ে প্রতিবাদ করি।এই যেমন কিছু বিশিষ্ট লোক এগুলো দেখলে একদম চুপ মেরে যায়।যেনো কিছুই হয় নাই। আমি কেনো তাদের মতো হয়ে এগুলো তলে তলে সমর্থন দিই না।তো আমি এইসব বিশিষ্ট লোক বনে গেলাম।দুই ঘন্টা পর দেখি কি আমার গায়ে দিয়ে পাঠার গন্ধ বের হইতেছে।আয়নায় গিয়ে দেখি, কোন এক চুদির ভাই এর প্রতিচ্ছবি। আমার আর সহ্য হলো না। আমি সোনা-রুপার পানি দিয়ে গোসল দিয়ে আবার মানুষ বনে গেলাম।- ২৮ আগষ্ট,১৬। 



অমিতাভের মা তেজি বচ্চন ইন্দিরা গান্ধীর খুব ঘনিষ্ট বান্ধবি ছিলেন।দিল্লীতে এরা পাশাপাশিই থাকতেন।বাড়ির ভিতর দিয়ে একে অন্যের বাসায় আসার একটা রাস্তাও ছিলো।অনেকে ভেবে থাকেন অমিতাভ রাজিবের খুব ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলো,সেটাও ঠিক না।অমিতাভ বরং সঞ্জয়ের সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলো।রাজিব তার বৈমানিক পেশাতেই ব্যস্ত থাকতো।অমিতাভ ৭০ এর দশকের সঞ্জয়ের ক্ষমতার নেউটা ছিলেন।একসময় সে সঞ্জয়ের বা ইন্দিরা গান্ধীর কোন গুরুত্বপুর্ন রাজনৈতিক মিত্র এলে তাদের রিসিভ করতে এয়ারপোর্টে স্বেচ্ছায় যেতেন।কিন্তু এর মধ্যেই ৭৫ এর জরুরী অবস্থা দিয়ে ইন্দিরা ক্যাডাভেরাস সিচুয়েশন করে ফেলেন। আর অমিতাভ সে বছরই দিওয়ার আর শোলে তে সুপার হিট করে লাইমলাইটে এসে যান।তেমনি এক দিনে সঞ্জয় অমিতাভকে রিকোয়েস্ট করেন ,তার এক বিদেশী বন্ধুকে যদি অমিতাভ এয়ারপোর্টে রিসিভ করেন ,সে খুশী হবে।এই প্রথম অমিতাভ জানায় তার একটা পাবলিক গ্রহনযোগ্যতা আছে, এই অবস্থাতে তার পক্ষে সেটা সম্ভব না।সঞ্জয়ের সাথে তার আর হলো না। আবার রাজিব প্রধানমন্ত্রী হলে অমিতাভ গান্ধীদের কাছের মানুষে পরিনত হন। রাজিব মারা গেলে অমিতাভ ভুলেই যান সোনিয়া ও তার সন্তানদের কথা।
১৯৯৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রিয়াঙ্কার বিয়ের দিন অনেক আগেই ধার্য করার পর ঠিক আগের দিন ১৭ তারিখ অমিতাভ শ্বেতা বচ্চনের আকস্মিক বিয়ের দিন ধার্য করেন।যেহেতু দুই পরিবারের বিয়ের নিমন্ত্রিতরা প্রায় কমন দাওয়াতি ,তারা অমিতাভকে জানায় এক সপ্তাহ এগিয়ে বা পিছিয়ে দিন ধার্য করা যায় কিনা? অমিতাভ রাজি হলেন না। সোনিয়ার সাথে অমিতাভের আরেক দফা ভুল বোঝাবুঝির সুত্রপাত হলো।-২৬আগষ্ট,১৬।


অমিতাভকে দক্ষিনের লোকেরা পছন্দ করে না।এরমধ্যে মারাঠারা বা মহারাষ্ট্রের লোকেরা তো নয়ই।আশ্চর্য যে, অমিতাভের মা তেজি বচ্চন পাঞ্জাবি খত্রি শিখ হওয়া স্বত্বেও শিখেরাও তাকে পছন্দ করে না তার ১৯৮৪ সালের শিখ নিধনের সময় স্বার্থপরের মতো ভূমিকায়।এর বাইরে বাকি ভারতের লোকের কাছে সে জনপ্রিয়, সেটার সংখ্যাও কম নয়।
মারাঠা বা মহারাষ্ট্রের লোকেরা এই ৩০০ বছর আগেও বর্গীর হাঙ্গামা ,লুটতরাজ ,ব্যাপক ধবংশ যজ্ঞ চালিয়ে আমাদের বাংলা ,বিহার ,উড়িষ্যাতে ছেলে ঘুমিয়ে আর পাড়া জুড়িয়ে রাখতো।তারা শরতকালের পরই জমিতে ফসল উঠার আগে এসে রাজ্যের সীমানায় বসে থাকতো পরবর্তী বৈশাখ মাসের আগমন পর্যন্ত।বর্ষা আসার আগেই তারা মহারাষ্ট্র পৌছে যেতো।যারা এরকম লুটের ঐতিহ্য নিয়ে একটা কাল পার করেছে, তাদের কাছে এটা অনেক প্যাথেটিক যে ,এলাহাবাদের কোন যুবক এসে সিনেমা করে তাদের দেশে এতো টাকার মালিক হয়ে যাবে।
তাই অমিতাভ তাদের কাছে জনপ্রিয় নয়।তারা এটাও খেয়াল করেছে,অমিতাভের চ্যারিটি কার্যক্রম বেশীর ভাগ সময়েই উত্তর ভারতে বেশী চলে। হালে অবশ্য অমিতাভ এটা টের পেয়ে একটা ব্যালান্সের চেষ্টা চালাচ্ছে। আবার সাংবাদিক কুল একটা গুরুত্বপুর্ন প্রভাবক সেটাও অমিতাভ হারিয়েছিলো অভিষেক -ঐশ্বরিয়ার বিয়ের সময়।যেখানে ইংল্যান্ডের রাজ পরিবারে বিয়ের সময়ও সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার থাকে,সেখানে এশ অভির বিয়ে অত্যান্ত সুরক্ষিত আর সাংবাদিকদের ঘোষিত নিষেধাজ্ঞায় করা হয়েছিল।আমাদের দেশে এই ৩ দিন আগেই ১৯৬ জন সাংবাদিক দরিদ্র ভাতা পায় খামে করে।এখানে এভাবেই কয়েকদিন পর পর কুকুরকে হাড্ডি দেওয়ার মতো করে সাংবাদিক গেটে মজুত করে বেধে রাখা হয়। দরকারের সময় জরুরী কথাবার্তার সময় এই খামে ভরা কুকুরের দল ঘেউ ঘেউ হেউ হেউ করে এমন এক কেওয়াচ পাকিয়ে তোলে যে, আর আসল সমস্যাটাই সবাই ভুলে যায়।
কোন খান থেকে কই এসে গেলাম। ঠিক দুক্কুরবেলা, ভুতে মারে ঢেলা।-২৬ আগষ্ট,১৬।


আদিম নরখাদক জনগোষ্ঠীর মোটামুটি বেশীর ভাগ অবস্থান ছিলো প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে।প্রশান্ত চিত্তেই তারা কাজটা করতেন।বেশী কুখ্যাত অঞ্চলটি ছিলো পাপুয়া নিউগিনি ও মেলানেশিয়া অঞ্চলএর সলোমন আইল্যান্ডের মালাইটা, একটু দূরে তফুয়া। ফিজির ও এই বদনাম ছিলো।আর ইস্টার আইল্যান্ডের ওরা তো শত্রু ধরে খেতে খেতে মজা পেয়ে যাওয়ায় নিজেদের মধ্যেই কারোকে বিভিন্ন কল্পিত দোষে খেয়ে ফেলতো।চিন্তা করেন একবার, নিজ এলাকার স্বাস্থ্যবান নাদুশ-নুদুশ লোকটির উপর তারা কিভাবে তাকাতো।মাঝে মাঝে টুপ করে লোল পড়ে যেতো।
পাপুয়া নিউগিনির ওরাও এই গত শতকেও আশরাফুল মাখলুকাতকে ফ্রাইড চিকেনের মতো পরিতৃপ্তির সাথে ভক্ষন করতেন।মাথাটা ট্রফি হিসেবে ঘরের দাওয়ায় ঝুলিয়ে রাখতেন।যার দাওয়ায় যতো মাথা ,তার ততো সুনাম।নরখাদক রমনীকুলের দৃষ্টিতে সে ততো বেশী বীর্যবান বীর।তাই সেখানের উঠতি যুবকের জীবনের লক্ষ্যই থাকতো ,একটা বড়সড় মাথা।
ইন্দোনেশিয়ান ডায়াক মাথাশিকারীরাও হেডহান্টিং এর জন্য বিখ্যাত ছিলো।আমাদের কাছের এলাকায় কেবল এই সুনাম ছিলো নাগাদের।
স্বাভাবিক ভাবেই ওরাও যেহেতু মানুষ ছিলো,তাই এই নরখাদক জনগোষ্ঠীর মাঝে ছিলো পদ্য রচনা করার মতো লোক, ছবি আকার মতো সুক্ষ অনুভূতিসম্পন্ন লোক, আর খাওয়া শেষ হলে মাথায় হাত দিয়ে ভাবুক গোছের লোক।কি উচু তারের অনুভূতিসম্পন্ন সব লোক!
কথাগুলো কেনো মাথায় আসলো? আমি আজকে চারদিকে রঙ পালটানো গিরগিটির মতো লোকদের মানবতার কথা বলতে শুনি।-১৫ জুলাই,১৬। 


আমাকে একটি শিক্ষিত রামপাল দিন। আমি আপনাদের মহিপাল,গোপাল,ধর্মপাল আর পে-পাল দিবো।-১৩ জুলাই,১৬।


আমার বন্ধুকে চট্টগ্রাম শহর থেকে দূরে বনের মধ্যে এক শাখায় বদলি করা হয়েছে।জ্বি না, উনি প্রকৃতি আর বন-জঙ্গল মোটেও ভালো পাইতেন না।পানিশমেন্ট হানিমুন। আমার বুকটা ভেঙ্গে গেছে।এমনিতেই বন্ধু-বান্ধব দিন দিন কমতেছে ,তার উপর যদি এমন করে কাছের মানুষগুলো নিজেদের দোষে বনে-বাদারে আদাড়ে পাদাড়ে গিয়ে পড়ে, জীবনটার সুখ কই থাকে?
তার দোষ হলো, সরকারী চাকরী করে তার উপর ন্যস্ত করা দায়িত্বের অবহেলা।তাকে তার উর্ধতন বস বেশ কয়েক কপি অসমাপ্ত আত্ম-জীবনী বিলি বিক্রি করার দায়িত্ব দিয়েছিলো। আমার কমবখত বন্ধু বিক্রি তো করেই নাই।সেগুলোকে আলমারীতে ঠাই রেখে দিয়েছিলো। এর জন্য কারন দর্শাতে বললে, সে আবার চ্যাটাং চ্যাটাং উত্তরও দিয়েছে। এখন বলুন, ও থানচিতে যাবে না তো কে যাবে?
যাবার বেলায় দূঃখে বেদনায় জর্জরিত আমাকে সে জানায়, নে এই মোডেমটা .১৪৭ জিবি আছে,মেয়াদও ২০৩০ সাল(আমিও এতোদিন বাচমু না)।ঐখানে তো আর বাংলালায়ন নাই।তুইই চালা।আমি দূঃখে ,আনন্দে হিক্কা দিয়ে কেদে ফেলেছি।অত্যান্ত লজ্জার সাথে অনুভব করলাম,সরকারকে যতো খারাপ ভাবি,ততো খারাপ সরকার না। আর আরো অনুভব করলাম,আমি কিভাবে যেনো ভিতরে ভিতরে চাচ্ছি,বন্ধু থানচি থাক।আমি তাকে বড় পাথর,ছোট পাথর,বগা লেক, কেউক্রাডং,তাজিন ডং,সৈকত পাড়া এইসব ঘুরার জন্য ঠিকানা দিয়ে দিছি।-১৩ জুলাই,১৬।


৭০-৮০ এর দশকে কংগ্রেসী আমল বা সাময়িক যুক্তফ্রন্ট আমলেও হিন্দি সিনেমাগুলোতে মুসলমান চরিত্রগুলোকে স্নেহময়ী চাচা, ভাই বা বিভিন্ন পালক বাবা-মার ভূমিকায় চমৎকার করে দেখানো হতো।অমিতাভের কুলি হতে শুরু করে অসংখ্য সিনেমায় তার উদাহরন পাবেন।
এরপর ৯২ এর বাবরী মসজিদ ভাঙ্গা থেকে শুরু হয়ে ২০০২ সালের গুজরাটের মুসলমান নিধনযজ্ঞ এগুলো পার হয়ে যতো সময় গড়ায় হিন্দি সিনেমায় হাজি রুমাল কাদে দেয়া বিভিন্ন ভাইয়েরা শুধুই সন্ত্রাসী, শুধুই সন্ত্রাসী। টিভির সিরিয়াল গুলাও পিছিয়ে থাকে না। বিভিন্ন নেগেটিভ চরিত্রে শুধুই মুসলমান সন্ত্রাসীরা দায়ী, নাটক সিনেমায় জনি লিভারের কমেডি যেমন একটা অবধারিত অংশ ,তেমনি মুসলমান মাত্রই সন্ত্রাসী ,এটিও অবধারিত অংশ হয়ে যায়।
ভারত এই ত্রিশ কোটি মুসলমান নিয়ে ভীষন বিপদে পড়ে গেছে।-১০ জুলাই,১৬।



চারদিকে গোল্ডেন এ প্লাস এর ছড়াছড়ি দেখে আমার স্ত্রী একটি অনেস্ট ইচ্ছা-পোষন করেছেন|আমার 4 বছরের গুনী পোলা যে আজকে 5 মাসেও অ আ থেকে এ ঐ পর্যন্ত আসতে পারে নাই|আমার স্ত্রী বলেছেন -ইশ এই গাধাটা বড় হতে হতে যদি এই এই পাশের বাজারটা থাকতো?যেদিকে তাকাই খালি এ প্লাস,আমাদেরটাও পার হয়ে যেতো এই জোয়ারে|
আমি বলছি,এতো হতাশ হয়ো না| আল্লাহ চাইলে কি না হয়! ওরা মুখে তো বলছে 2041 পর্যন্ত থাকবে, আরো কি ঠেলেঠুলে 20-50 টা বছর পার করবে না|-২৫মে,১৬।



আজকে রিজার্ভ লুট,কালকে রুপালী ব্যাংক লুট ,পরশু অগ্রনী ব্যাংক লুট এসব দেখে মনে আমার এদের প্রতি তীব্র মায়া জেগেছে|কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই রুপসী কন্যাদের এভাবে যেভাবে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সতীত্বনাশ করা হচ্ছে, এদের আত্মহত্যা ভিন্ন আর কি রাস্তা থাকতে পারে|
-২৫মে,১৬।



সেতুমন্ত্রীকে প্রায় দেখি ঘোষনা দেয়, পদ্মাসেতুর 25% সম্পন্ন,34% সম্পন্ন| দেখে মনে হয় উনি পদ্মাসেতুর টরেন্ট ডাউনলোড দিয়েছেন,ফাইল নামতেছে আস্তে আস্তে|
|
-২৫মে,১৬।



গোলার ধান বেইচ্যা পাকা পায়খানা বানাইছি| এখন কি খাইয়া হাগমু!-৮মে,১৬।



আমায় একটা নিরাপত্তা এনে দাও,যার বলয় সাদা|

মানুষ বড় অসহায় প্রানী|সে কোন বলয় সৃস্টি করতে পারেনা, অথচ বিপদে পড়লে জোনাকি পোকার পুটকনেও আলোর বলয় দেখা যায়| কিংবা ভোদরেরা,বিপদে পড়লে তাদের গুহ্যদ্বার দিয়েও গ্যাসীয় বলয় নির্গত হয়|
- আইজিপির নিরাপত্তা বলয় তৈরীর আহবানে।


আমি কয়দিন আগে সাংবাদিকদের অধঃপতন নিয়ে লিখেছিলাম।রাস্তাঘাট থেকে ধরে এনে যাকে তাকে সাংবাদিক বানিয়ে বা নিজে তা বনে যাওয়ার ফল হলো পদতলে সাংবাদিকতা। আতিয়ার বুদ্ধি করে এইরকম ছাগলগুলোকে মাঠে চড়াতে নিয়ে আসছে।যেটাতে তার দক্ষতার অভাব কোনকালে ছিলো না।
যেকোন সুস্থ দেশে সাংবাদিকেরা এরকম অভিযুক্ত লোককে প্রশ্ন করে কালঘাম বের করে দেয়।
খালি এখানে দেখা যায় কাঠঠল গাছের পাতা দিয়ে এগুলারে আপ্যায়ন করা হয়।আর চইয়ার তলের সাংবাদিকেরা ম্যা ম্যা ম্যা করে পাতা খায় আর আবেগে কাদে।আর পাতার সেলুলোজ ভেঙে পেটে গ্যাস বেড়ে যাওয়াতে পাদে।-১৭ মার্চ,১৬।

কালকে রাতে মাঠে আমাদের আড্ডার ব্যাডমিন্টন কোর্টে দাঁড়িয়ে আছি।এক লোক(নাম বলা বাঞ্ছনীয় নয়) এসে বলে আপনাদের তো এবার বেশী খেলা হয় নাই।বাশগুলো নস্ট(দুইপাশের দুইটা প্রকান্ড বেড়ের বরক বাশ) করে কি লাভ?বর্ষায় এমনিতে নস্ট হবে, আমাকে দিয়ে দেন।
জিজ্ঞেস করলাম, কি করবা? বলে কি- কোরবানীর সময় গরুর রান ঝুলামু।কাটতে সুবিধা হয়।
আমি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম,গোশত বানানির গাছের গদামটা তার আছে কি না?না থাকলে যেনো আমারটা নিয়ে যায়।কারন যে গরুটাকে আল্লায় তার কিসমতে রাখছে সেটা বর্ডার পার হইছে কিনা কে জানে?এমন খাদকের চোখে চোখ রেখে কথা বলাও সাহসের ব্যাপার।-১৭ মার্চ,১৬।


বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হওয়ার এই মুহুর্তে সবচেয়ে যোগ্য অধিকার আছে একটা জলাতঙ্ক আক্রান্ত লালা ঝরা ক্ষেপাটে কালা কুকুরের।যে দায়িত্ব বুঝে নিয়েই প্রথম তার বোর্ডের সহযোগী হতে শুরু করে মন্ত্রী-মিনিস্টারদের পাইকারি হারে কামড়িয়ে যাবে।যার ফলে কামড় খাওয়া দায়িত্ববান লোকেরা আপাতত ৮-১০ ঘন্টা ব্যস্ত থাকবে নাভিতে দ্রুত ৭টা রাভিপুর রেবিজ টিকা দেওয়ার কাজে।তারপর শরীর ধীরস্থীর হলে রিজার্ভ,লুট, সার্ভারের ডাটা সরানো এসব অভিযোগ নিয়ে ব্যস্ত হবে।-১৭ মার্চ,১৬।


যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্য হৃদয়বিদারক পরিবেশে আতিয়ার সাহেবের পদত্যাগপত্র গৃহিত হয়।এ সময় কান্নার রোল পড়ে যায়।ক্যামেরাম্যান,সাংবাদিক, স্টাটাসদাতা কেউ না কেদে থাকতে পারেনি।যে জীবনে কাদেনি এসময় তার কঠিন চোখেও কান্নার গ্যাস বেরিয়ে গেছে।
এটাই মানবিকতা। রিজার্ভ গেলে রিজার্ভ আসবে,কিন্তু আতিয়ার গেলে আরেকটা আতিয়ার কি জাতি পাবে? এটাই আজ জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন।-১৫ মার্চ,১৬।


আজকে সাংবাদিকতা নিয়ে কয়েকটি স্টাটাস দিয়েছি।এটাই লাস্ট দিই।আজকের সাংবাদিকতা কাওরান বাজার বা সিদ্দ্বেশ্বরীর বিল্ডিং কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। প্রকৃত সত্য খবরের জন্য কে পরিশ্রম করবে?সাংবাদিকেরা ফেসবুকে বসেই খবর পেয়ে যান।এজন্য এরা ফেসবুকে সবচেয়ে বেশী সময় দেন।আর যাকে তাকে ব্লক করে বেনামে ব্লক করা লোকেরই আইডিতে থেকে অনেককিছু শিখে বেতন হালাল করে।চারন সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দীন একবার ঠিক করে তিনি ৭৪ সালের বাসন্তির জাল পড়া ছবিটার সম্পর্কে খবর নেবেন।কারন বিশ্ব কাপানো ছবিটা তুলে তখনকার ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমেদ আওয়ামি লিগের পেটোয়া বাহিনীর লক্ষ্য হয়ে পড়েন।সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দীনের পথ থেকে পথে বইয়ের ২০ পৃস্টায় যাবেন।সেখানেই পাবেন আওয়ামি লিগের তখনকার ইউপি নেতা আনসার আলীর নাম,যিনি পরে ভোটে জিতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হন।সেই আনসার আলিই সাংবাদিক আফতাব আহমেদকে বাসন্তির দুর্গতি দেখান।এজন্য আনসার আলীকেও বিড়ম্বনা সইতে হয়।এই আনসার আলীই ৭৮ সালে মোনাজাত উদ্দীনকে জানান,মোনাজাত ভাই,আমি যে দলই করি,আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, আমি দেশকে ভালোবাসি।তাই বাসন্তির এই ছবি মোটেও মিথ্যা না।আমি আর আফতাব তার স্বাক্ষী।শুনেছি তিনিও ছবি তুলে ভুগেছেন।-১৪ মার্চ,১৬।


একবার আমাদের গুনধর এক মন্ত্রী হ্যাকারদের নিয়ে বক্তৃতা দেয়ার সময় বলে ফেলেছে, আমরা হকারদের যদিও বৃহত্তর স্বার্থে রাস্তা থেকে উঠিয়ে দিচ্ছি কিন্তু দ্রুততম সময়ে তাদের পূনর্বাসন করবো।নতুন দোকান পাওয়ার ক্ষেত্রে তারা অগ্রাধিকার পাবে।সরকার চায় না তারা এভাবে অন্যায় পথে জনগনের বিঘ্ন ঘটায়।-১০ মার্চ,১৬।


বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে হ্যাকাররা দুই দফায় ৭৬০০কোটি টাকা মেরে দিয়েছে।একমাস পর সংশ্লিষ্ট লোকদের খুপড়িতে এটা প্রবেশ করার পর তারা নড়েচড়ে বসেছে।তারা নাকি পত্রিকা মারফত জেনেছে।
বাংলাদেশের প্রায় গ্রামগুলোতে একটা করে পাগল না হয় পাগলী থাকে।দূঃখজনকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতোই পাগলীদের প্রায় দুষ্টলোকে পেয়ে বসে ।এদের অপকর্মের ফলে পাগলীটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে।দুষ্টলোকেরা জানে পাগলি তাদের নাম বলে দিতে পারে,তাই কর্ম সম্পন্ন হলেই পাগলীকে খুব একটা পিটুনী দেয়।পাগলেরা শুধু শেষ ঘটনা কিছু মনে রাখতে পারে, এ সুত্রানুযায়ী পাগলী পিটুনীর আগের ঘটনাটা ভুলে যায়।কেবল বলে বেড়াতে পারে কে বা কারা তাকে প্রহার করেছে।আসল ঘটনা বাদ পড়ে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আসল ঘটনা বাদ পড়ে গেছে কর্ম সারার পর পিটুনী খেয়ে ।শুধু হ্যাকারের কথাটাই সর্বশেষ তাদের মনে আছে।
-১০ মার্চ,১৬।




নতুন লেখকদের উচিত না বই বিক্রি না হলেও ঢালাওভাবে বই উপহার দেয়া।দরকার হলে ঘরে রেখে দেয়া অনেক ভালো।কারন মাগনা উপহার পেলে কেউ তার মুল্য বোঝে না।ভাবে আরে ওর বই কেনার কি আছে,বেচা না হলে এমনিই দিবে।
আগেকার লোকেরা নতুন গ্রাম্য হাট বসালে ব্যবসায়ীদের অনেক যত্ন করে এনে যদি দেখতো তেমন বেচা হয় নাই।বাজার কমিটি নিজেরাই স্ব উদ্যাগে কিনে নিতো। কারন তারা দেখেছে কিছু লোক বাজার সময়ে দ্রব্য না কিনে বিকেলে বাজার ভাঙার অপেক্ষায় থাকতো।যদি সস্তায় মিলে।বাজার কমিটি জানতো, এরা একবার কেনার স্বাদ পেলে চারদিক ছড়িয়ে দেবে যে বিকেলে সস্তায় দাও মারা যায়।তাই বাজার কমিটি সেইসব দ্রব্য কিনে নিয়ে ঐসব কাস্টমার নামধারী স্টিমারের চোখের সামনে দ্রব্যগুলো নদীতে ফেলে দিতেন।

সারকথা কি? হ্যা ভাইলোক,দরকার হলে বই নদীতে ফেলে দিবেন।-১৭ ফেব্রুয়ারী,বইমেলা ১৬ থেকে।



এমনকি লেখকদেরও প্রসববেদনা আছে।বইমেলার ডেট যতো আগায় বেদনা জটিলতাও তেমনি বাড়ে।লেখকদের পায়ের পাতায়,পায়ে পানি এসে যায়।প্রসুতি এ অসহায় অবস্থায় যেমন হেটে বেড়ানো সুস্থ সবল স্বামিটির উপর কিছুটা ক্ষেপে থাকে(এই লোকও তো দায়ী) তেমনি লেখকও পাঠকের উপর কিছুটা ক্ষেপে থাকে।লেখক ও মা দুজনেই আগত সন্তানটিকে নিয়ে টেনশনে থাকে।-২৪ জানুয়ারী,১৬।বইমেলা এলো বলে।



একটা গ্রুপে টারজান নিয়ে আলোচনা শুনে মনে পড়ে গেলো, আমাদের সময়ে টারজান বেশ জনপ্রিয় ছিলো। আর হলিউডের একটা ব্যাপার আছে, তারা অনেক জনপ্রিয় চরিত্রকে বাজারে সেরকম চাহিদা আছে বুঝতে পারলে পর্ন মুভিতে একটা ভার্সন ছাড়ে ।এ ক্ষেত্রে তাদের সহযোগী হিসেবে আছে ফ্রেঞ্চ ও ডাচরা। আমরাও সৌভাগ্য কিংবা দূর্ভাগ্যবশত তা দেখার সুযোগ পাই। সেই হিসেবে বোঝা গেলো ,একদিন এভাটার ,লর্ড অব দ্য রিং বা হবিট এদের পর্নোও আসতে পারে। বাজার চাহিদা অনুযায়ী।-৩১ ডিসেম্বর,২০১৫।
































ভারতের মর্দামী,২১ সেপ্টেম্বর২০১৬ ফেসবুক স্টাটাস থেকে।

বাংলাদেশ পাশে থাকবে এটা শুনে ভারতের মধ্যে একটা যুদ্ধম যুদ্ধম ভাব এসে গেছে| এবার পাকিস্তানের রেহাই নেই | ভারত এখন ফুল থ্রটলে আছে, কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলেই ঘ্রাউ করে উঠে |কারো কারো যেমন নুনুর আগায় মুত এসে থাকে, চেইন খোলার আগেই মুতে দেয় |ভারতের এখন রাইফেলের আগায় বুলেট এসে রয়েছে, গতকালই পাটগ্রামে বিএসএফ হযরত আলীকে গুলি করে মেরেছে |পাকিদের চীনাদের সাথে হেডমে কুলোয় না তো কি হয়েছে, ঘরের বৌ পিটিয়ে মর্দামি তো বজায় থাকে|

রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৭

জুলফিকার আলী ভুট্টো ও রাজনৈতিক অভিশাপ।

উপমহাদেশে রাজনৈতিক পরিবারগুলোর ভেতর একটা ট্রাজেডি আছে।আমি বাংলাদেশের প্রসঙ্গ এখানে টানবো না।গান্ধী পরিবার বা ভুট্টো পরিবার সবাই এই ট্রাজেডির ভেতর পড়েছে।কেউওই ক্ষমতাকে ভোগ করতে যেয়ে স্বাভাবিক পরিণতি পায়নি।অথচ নিয়তির পরিহাস,এরা প্রত্যেকেই গনতান্ত্রিক নির্বাচনেই ক্ষমতায় এসেছিলো,কিন্তু কি এক অমোঘ আকর্ষনে এরা সেই জনগনের দেয়া মতামতকে একপর্যায়ে অগ্রাহ্য করেছে।এভাবে ইন্দিরা জরুরী অবস্থা জারি করেছে,ভুট্টো প্রতিপক্ষের হত্যা গুমে জড়িয়ে গেছে।পরিণতি শুভ হয়নি কারোর জন্য।
জুলফিকার আলি ভুট্টো প্রয়াত স্যার শাহনেওয়াজ ভুট্টোর ছেলে।ব্রিটিসদের ধামাধরা শাহনেওয়াজ ভগত সিং মামলায় সরকার পক্ষের কৌশলি ছিলেন।সিন্ধের লারকানায় তার আড়াই লাখ একর জমি ছিলো,যেটা বিশ্বের কোন কোন দেশের আয়তনের সমান।জুলফিকার সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মান।সমসাময়িক ভবিষ্যত রাজনৈতিকদের মধ্যে তুলনামুলক মেধাবি ভুট্টোর টাকা-পয়সা যশ কিছুর অভাব ছিলো না।অক্সফোর্ডের স্কলার, লিংকন ইন ব্যারিষ্টার ,অতি অল্প বয়সে পাকিস্তানের মন্ত্রী হয়ে যাওয়া সবকিছু সম্ভাবনাময় এক জীবনের কথা জানাচ্ছিলো।বাল্যকালে বিয়ে করা ভুট্টো আবার বিয়ে করেন ১৯৫১ সালে ইরানী কুর্দিশ অভিজাত ইস্পাহানী পরিবারে।এই ঘরেই জন্মান বেনজির,মর্তুজা, শাহনেওয়াজ আর সনম ভুট্টো।পুরো একটা সুখী পরিবার।
কারো সময় হলে ওরিয়ানা ফালাচির সাথে ভুট্টোর সাক্ষাতকারটি ধৈর্য ধরে পড়তে পারেন।ভুট্টো অপছন্দনীয় লোক সন্দেহ নাই,কিন্তু আপনি তার ক্ষুরধার মেধার পরিচয় এবং রাজনৈতিক ভবিষ্যত বানীর দূরদৃষ্টিটা দেখে অবাক হয়ে যাবেন।দেখবেন তার বেশীরভাগ রাজনৈতিক ভবিষ্যত বানী পরবর্তীতে মিলে গেছে।শুধু সে নিজে যে বেঘোরে মারা পড়বে সেটা সে আন্দাজ করে যেতে পারেনি।
ভুট্টোর সবচেয়ে বড় পাপ ছিলো বাংলাদেশের জনগনের প্রতি। ২৫ মার্চের কালোরাতের গনহত্যার অন্যতম হোতা ভুট্টো, সাথে অন্য কুশীলব যখন ইয়াহিয়া আর টিক্কা খান।একটা গনতান্ত্রিক সুষ্ঠ নির্বাচন মেনে না নেয়ার গোয়ার্তুমি, ক্ষমতা সুষ্ঠভাবে না বুঝিয়ে দিয়ে টালবাহানা, নিরীহ মানুষ মারার ঠান্ডা মাথার প্ল্যান, এগুলো ভুট্টোর নিয়তিকে স্থির করে দিয়েছে।অতি চালাকি ক্ষমতালোভীর মনমানসিকতার দাম তাকে কিস্তিতে কিস্তিতে মেটাতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পরাজয়,ইয়াহিয়ার পতন,ভুট্টোর প্রেসিডেন্ট হওয়া এগুলো খুব দ্রুত ঘটে গেলো। ৬টা বছর কেটে গেলো।ভুট্টোর প্রতি বেসামরিক ,সামরিক প্রশাসনের প্রতিহিংসা এগুলো মেলার সুযোগ হচ্ছিলো না।পাকিস্তান ভাঙ্গার অন্যতম হোতা বলে সামরিক প্রশাসন তাকে সবসময়ই ভেতরে ভেতরে দায়ী করে আসছিলো।সুযোগটা আসে নিয়তির পরিহাস হয়ে,যখন ভুট্টোর পছন্দের সেটা করা সেনাপ্রধান জিয়াউল হক একটা রক্তপাতহীন ক্যু এর মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্ষমতা হাতে নিয়ে নেয়।ভুট্টো বন্দী হয়ে পড়ে।লারকানার সামন্তপুত্র শেষ কয়টা দিন এমন লাঞ্চনায় কাটায় যেটা ভাষায় অবর্ননীয় হয়ে উঠে।কারাগারে তার বিন্দুমাত্র বিলাসিতার সুযোগ মেলে নাই।পরিবার পরিজন রাজনৈতিক সহকর্মী কারো দেখা সে তার মনমতো পায়নি।দাতের মাড়ির ইনফেকশনের জন্য নিয়মিত লিস্টারিন ইউজ সে করতো।জেল কতৃপক্ষ তাকে এই সামান্য বিলাসিতাও দিতে অপারগতা জানায়।আসে শেষের সেদিন, ভুট্টো কোনমতেই ফাসিকাষ্ঠের দিকে যাচ্ছিলো না।তার এক কথা আমি আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নবাব মুহম্মদ কাসুরীকে হত্যা করি নাই(এটার অভিযোগে তার ফাসি হয়)। তাকে এই আধা অজ্ঞান অসুস্থ অবস্থায় টেনে হিচড়ে ফাসিতে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। সালটা হলো ১৯৭৯খ্রীঃ।
ছেলেমেয়েরা সবাই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। মর্তুজা ভুট্টো শোকে ক্ষোভে জুলফিকার নামে এক সন্ত্রাসী সংগঠন খুলে।এরা ৮০ দশকে বিমান ছিনতাই করে বিশ্বের নজরে পড়ে।এর পর ভুট্টো পরিবারের উপর যেনো অভিশাপ নেমে আসে।আক্ষরিক অর্থেই ৭০ এর দশকের শেষপ্রান্তে জুলফিকার ভুট্টো নিহত হওয়ার পর থেকে প্রতি এক দশকে ভুট্টো পরিবার একজন করে সদস্য অপঘাতে হারিয়াছে। ৮০ এর দশকে মধ্যভাগে ১৯৮৫ সালে শাহনেওয়াজ ভুট্টো প্যারিসের হোটেলে মৃত অবস্থায় পড়েছিলো।ভাই-বোনেরা এর জন্য শাহনেওয়াজের পশতু স্ত্রীকে বিষ প্রয়োগের দায়ে দায়ী করেন।এলো নব্বইয়ের দশক ,এটা ভুট্টো পরিবারের ভিত্তিমুল নেড়ে দেয়।বেনজিরের মা নুসরাত স্বামীর মৃত্যুর পর বহু ঝড়-ঝাপ্টা সামলে পিপিপিকে নেতৃত্ব দেয়, পাকিস্তানে কিন্তু তাকে গনতন্ত্রের মা আখ্যায়িত করা হয়,তিনি জিয়াউল হক রেজিমের সাথে কঠিন সব লড়াই একাই লড়ে গিয়েছেন।কিন্তু বেনজির দ্বিতীয় মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী হলে পিপিপির ক্ষমতার ভাগ নিয়ে মা আর ভাই মর্তুজার সাথে দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েন। এলো অভিশাপের দশকের করাল ছোবল। ১৯৯৬ সালে বেনজির প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মর্তুজাকে তার করাচীর বাসভবনের অনতিদূরে আইন-শৃংখলাবাহিনীর হাতে ৬ জন বিশ্বস্ত সঙ্গীসহ ক্রশফায়ারে মরতে হয়।নুসরাত শোকে পারকিনসন ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে একেবারে জনসমুক্ষের আড়ালে চলে যান।শুধু ২০১১ সালে তার মৃত্যুর পর সবাই জানেন যে তিনি মারা গেছেন। এলো ২০০০-২০১০ এর দশক ,এবার বলি বেনজির স্বয়ং। এভাবে ভুট্টো পরিবার প্রতি দশকে একজন হারিয়েছে।
ক্ষমতা ভীষম জিনিস।জনগনের সাথে বেইমানীর ফল কোন রাজনীতিকের জন্য শুভ ফল বয়ে আনে না।

বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৭

সুপার বাগ ও জীবানুর রেসিস্টেন্স বৃদ্ধি।

ব্যাপারটা সম্পর্কে আগেও পড়ছি কিন্তু আমরা সাধারনত নিজের ঘাড়ে এসে বিপদ না পড়া পর্যন্ত এলার্ট হওয়ার চিন্তাও করি না।বিষয়টা যথেচ্ছ এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারে জীবানুর রেসিটেন্স বেড়ে যাওয়া নিয়ে।অন্যরে কি উপদেশ দিবো,নিজেই তো মাস্টারি করে কম ঔষধ গিলি না।তো এসবের ফলে কিছু ট্রপিক্যাল অঞ্চলের আবাসিক জীবানু সুপার বাগে পরিনত হচ্ছে।যেমনঃ যক্ষ্মার জীবানু, ম্যালেরিয়েল প্যারাসাইট ,কিছু ভাইরাল জ্বরের জীবানু।দেখেন নাই, এই ১০-১৫ বছর আগেও চিকুনগুনিয়া বা জিকা ভাইরাসের নাম শুনি নাই।ইবোলার নাম শুনি নাই।এখন এগুলা আছে।হয়তো আগেও ছিলো,কিন্তু মিউটেন্ট হয়ে উঠে নাই তখন।
ইউরোপ আমেরিকার মতো উন্নত দেশে যক্ষ্মা ,ম্যালেরিয়ার মতো জীবানু বা প্যারাসাইট এই সেদিনও নিয়ন্ত্রনের মধ্যে ছিলো।কিন্তু ড্র্যাগ এডিক্ট ও এইচ আই ভি পজিটিভের মতো রোগীদের দেহে এটা প্রবেশ করার পর তাদের চিকিৎসার অবহেলা বা সঠিক সময়ে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার না করা বা অর্ধেক পথে এন্টীবায়োটিক ছেড়ে দেয়ার জন্য এগুলা এখন প্রায় সুপার বাগে রুপান্তরিত হয়ে পড়েছে।এখন এরাই এটার জন্য বিশেষ চিন্তিত হয়ে পড়েছে।কয়দিন আগেই পড়েছিলাম,সুপার গনোরিয়ার সুপার বাগ নিয়ে।
আশ্চর্য যে, একদিন এই ইউরোপ থেকেই পর্তুগীজ ,ডাচ,ইংরেজ আর দিনেমারদের জাহাজে করে জাহাজীদের শরীরে করেই এই সিফিলিস,বিউবোনিক প্লেগ ,গুটিবসন্ত আর গনোরিয়ার মতো গনমান্য রোগের জীবানু এই এশিয়া,আফ্রিকা,পলেনেসিয়ান দ্বীপের মতো দূর দ্বীপে পৌছে গিয়েছিলো।এর আগে এসব অঞ্চলের লোক এসবে আক্রান্ত হন নাই।উদাহরনঃ ১৭৮৫ সালে ক্যাপ্টেন কুক এর জাহাজের মাধ্যমে সিফিলিস ,গনোরিয়া ,প্লেগ আর গুটি বসন্ত তাহিতি দ্বীপ সহ সমগ্র মেলানেশিয়া ,মাইক্রোনেশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।এই জাহাজীরা যেখানে গিয়ে লাগাইছে সেখানেই এটা ছড়িয়ে পড়েছে।অন্যদিকে সলোমন দ্বীপ,পাপুয়া নিউগিনির মতো নরখাদক প্রায় অঞ্চলেই আদিবাসীরা যারা আগে কখনো সাদা লোক দেখে নাই ,তারা বিধাতার অমোঘ নির্দেশে সাদাদের নামতেই দিতো না, এমন না কেউ তাদের এসে বুঝিয়ে গিয়েছে ,খবরদার সাদাদের সাথে মিশিশ না,ওরা রোগের জীবানু এনেছে।প্রকৃতিই তাদের বায়ো হ্যাজার্ডের ব্যাপারে আগাম সতর্কতা যেনো শিখিয়েছিলো।তারা কিন্তু এই তাহিতির সাদাদের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন আদিবাসীদের থেকে অনেকদিন বেচেছিলো।তাহিতির আদিবাসীরা মাত্র পরবর্তী ২০ বছরের মধ্যে একেবারে ঝাড়ে-বংশে নির্মুল হওয়ার পর্যায়ে এসে যায়।যেহেতু তারাই সাদাদের সাথে আগে মিশেছিলো,তাই মুল্যটা তারাই সবার আগে দেয়।আগে কখনো এসব রোগ তাহিতিতে না থাকার ফলে এসবের বিরুদ্ধে তাদের কোন রেসিস্টেন্স ছিলো না,ফলে এসব রোগ তাদের প্রায় ধবংশ করে ছাড়ে।আদিবাসী লোকসংখ্যা আশংকাজনক হারে হ্রাস পায়।
ক্যাপ্টেন কুকের পর এইচএমএস বাউন্টির বিদ্রোহী জাহাজীদের সাথে একদল তাহিতিয়ান পিটকেয়ার্ন দ্বীপে গিয়ে আস্তানা বাধে। ১৮০৮ এর আগে তাদের কেউ খুজে পায়নি। ১৮০৮ সালে সিল শিকারী জাহাজ টোপাযের ক্যাপ্টেন মেহিউ ফলগার এই মেরুনাইজড দলকে খুজে পায়।এরা তখন নিজেরা নিজেরা খুনোখুনি করে নিজেদেরই সংখ্যা কমিয়ে ফেলেছিলো।ফলগারই ব্রিটিস এডমিরিল্টিকে এই খুজে পাওয়া দলটির কথা জানায়।ব্রিটিসরা এই বাকি বেচে যাওয়া সদস্যদের অস্ট্রেলিয়ার কাছে নরফোক আইল্যান্ডে নিয়ে আসে।এই দলটি পিটকেয়ার্ন দ্বীপে বেশ সুস্থ সবল ছিলেন,কিন্তু নরফোক দ্বীপ ছিলো ব্রিটিস পেনাল আইল্যান্ড।এখানে জেলকয়েদীদের সংস্পর্শে এসে পিটকেয়ার্নবাসী আবার সিফিলিস,গনোরিয়া আর গুটি বসন্তে আক্রান্ত হয়।বেচে যাওয়া বাকিরা ব্রিটিসদের কাছে অনুরোধ জানায় তাদের যেনো আবার পিটকেয়ার্ন আইল্যান্ডে নেয়া হয়।তাদের দাবি মেনে নেয়া হয়।পিটকেয়ার্নের এখনের বাসিন্দারা সেসব বেচে যাওয়াদের বংশধর।
উপরের উদাহরনটা একটা ছোট দ্বীপের ক্ষেত্রে যারা বায়ো হ্যাজার্ডের শিকার হন, তথাকথিত সভ্যদের স্পর্শে এসে।আমাদের এই ১৯ কোটি মানুষ যদি কখনো এমন কোন সুপার বাগের বা সুপার রেসিস্টেন্স জীবানুর কবলে পড়ে আর তা মহামারীতে রুপ নেয় ,তাহলে সেটা হয়তো অকল্পনীয় বিপর্যয় ডেকে আনবে।আগে এইসব সুপার বাগ,গ্লোবাল ওয়ার্মিং বিশ্বাস করতাম না।মনে হতো ,অনেক পরে এসব হবে।আমরা কি তখন থাকবো? কিন্তু গ্লোবাল ওয়ার্মিং সত্যিই আমরাই দেখে যাইতেছি।

সম্রাট আকবর ও মুসলমানী প্রসঙ্গ।

ইতিহাসের এইদিনে এই ভ্যালেন্টাইন ডে তে ১৪ ফেব্রুয়ারী,১৫৫৬ খ্রীঃ সম্রাট আকবর ১৪ বছর বয়সে দিল্লীর সিংহাসনে আসীন হন। ভ্যালেন্টাইন ডে তে সম্র...