এটি একটি ১৮+ পোস্টঃ-আগেই ডিস্ক্লেইমার, পরবর্তীতে কতৃপক্ষ কোনমতেই দায় নেবে না।
গতমাসে উত্তরবঙ্গে একটা ট্যুর দিয়েছিলাম।খুবই উপভোগ্য হয়েছিলো।যদি আবার কখনো সুযোগ হয়,আবারো যাবো। আপাতত অন্যদিকে না গিয়ে বাংলাদেশের গ্রাম বা স্থান গুলোর নাম নিয়ে কিছু বলি। নিশ্চয় এসব নাম কোন যুক্তিসঙ্গত কারনে এসেছে।ঠাকুর গাঁ রানী শঙ্কাইল হয়ে নেকমরদ (শুরু হয়ে গেছে) পর্যন্ত এদিকটা ১ম গেছি।নেকমরদ কথাটা জানি না কিভাবে এসেছে।চট্ট্রগ্রামে অবৈধ প্রেমিককে নেক বলে সম্মোধন করা হয়,সাথে তো মরদ রইলোই। এই নেকমরদের বা রানী শঙ্কাইলের কথা সেই স্কুল লাইফেই পাঠ্য বইয়ে পড়েছিলাম। লেখক আবুল খায়ের মোসলেহ উদ্দীন তার নীল গাইয়ের সন্ধানে নামক গল্পে এর ডাকবাংলোর বর্ণনা দেন। সুন্দর একটি জায়গা।তাও আবার লিচু-আম এর সিজনে গেছি।একিই সাথে সেখানে ধান ও ভুট্টা সংগ্রহ চলছিলো।
উত্তর বঙ্গের সাথে দক্ষিন বা মধ্যাঞ্চলের ভাটি এলাকার গ্রামের নামের কিছু পার্থক্য দেখলাম।যেমনঃ নদীমাতৃক এলাকার গ্রামগুলোর অনেকগুলো নাম এসেছে ,যেহেতু এলাকাগুলো এমনিতেই মাছের প্রাচুর্যতায় ভরপুর ,তাই আমাদের এই ঢাকা ,কুমিল্লা,সুনামগঞ্জ ,ব্রাহ্মনবাড়িয়ার প্রচুর গ্রামের নাম মাছ কেন্দ্রিক। যেমনঃ- চিংড়ি থেকে এসেছে ইছাখালি বা পুর,কৈজুরি, বড় পাঙ্গাসি কিংবা আড় পাঙ্গাসিয়া,পুটিমারি,শিঙ্গিমারি, বোয়ালিয়া বা ইলশামারি ইত্যাদি ।আরো অনেক বলা যাবে।
কিন্তু উত্তরে যেমনঃ পঞ্চগড়ের ওপারে কুচবিহারের ছ্যাকামারি দিয়ে স্টার্ট দিই। এই যে মারামারি শুরু হয়েছে,তা বর্ডার ক্রস করে লালমনিরহাটের বুড়িমারি দিয়ে ঢুকে তিস্তার অববাহিকায় ম্যাসাকার করে দিয়েছে।আছে হাতিবান্ধার গোদ্দিমারি,শিঙ্গিমারি,আরেকটু পশ্চিমে গোটামারি( পুরাই),দক্ষিনে ভোটমারি(হয়তো কবে কেউ ৫ জানুয়ারীর মতো ভোটের পুটকন মেরে দিয়েছিলো) ও আদিতমারি। আছে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারি,রৌমারি আর চিলমারি।হায় রে মারামারি!এরপর শুধু নীলফামারির উপর দিয়ে গেছে।এরপর এদিকে হয়রান হয়ে আপাতত আর মারামারি নাই।
এবার পঞ্চগড়ের কথা বলি।এ জেলা একাই নামের দিক দিয়ে লিজেন্ড। একেবারে শহরের পাশেই আছে ধাক্কামারা।উত্তরের সীমান্ত দিয়ে ঢুকেছে টালমারা ও কোরামারা নদী।তবে সবাইরে ফেইল দিছে বোঁদা উপজেলা।বোঁদার পাশেই আছে মারিয়া গ্রাম। এহেন বোঁদার আঙ্গুলদিয়া গ্রাম কোন মহাভারত মোঘল আমল থেকে নাম পেয়েছে তা বলা মুশকিল।একবার নাকি আঙ্গুলদিয়ায় বজ্রপাতে একজন নিহত হলেন।ইত্তেফাক পত্রিকায় আসলো-বোঁদায় আঙ্গুলদিয়াই একজনের মৃত্যু। কি ভয়ানক! আর এই স্বনামধন্য বোঁদায়ই আছে পুটকি মারি নামক একমাত্র মারি সমৃদ্ধ গ্রাম। এহেন যেই মহিমাম্বিত বোঁদা তার সাংসদ একবার সংসদে ফ্লোর পেয়ে বললো-মাননীয় স্পীকার,আমাদের বোঁদায় পানি নাই।আপনার মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রীর কাছে জানতে চাই,আমাদের বোঁদায় কবে নাগাদ পানি আসবে?স্পীকার বললেন-মাননীয় সাংসদ,আপনার ভাষা সংযত করুন।এটা জাতীয় সংসদ।সাংসদ বললেন-মাননীয় স্পীকার,এই বোঁদা সেই বোঁদা না।এটা পঞ্চগড়ের বোঁদা।স্পীকার বললেন-আপনি এমন করলে মাইক বন্ধ করে দেবো।
এবার সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল হয়ে চান্দাইকোনা যাওয়ার আগে এক গ্রামের নাম সোনাখাড়া,খুলনায়ও একটা সোনাপোতা আছে।স্বাভাবিক খাড়া থাকলে পোতাও থাকবে। নোয়াখালীতে আছে সোনাইমুড়ি। তেমনি ১৪ গ্রামে আছে প্রচুর কড়া,যেমনঃ-ফাল্গুনকড়া,আলকরা,বশকরা,মশকরা আরো বহুত।কক্সবাজার ও পার্বত্য জেলাগুলোতে আছে প্রচুর ছড়া আর ছড়ির বন্যা।হিমছড়ি,রুমালিয়ার ছড়া,মানিক ছড়ি ইত্যাদি।
আজ এটুকুই। গ্রাম নিয়ে আরেকটা লেখা দিবো। আরেকদিন মানুষ নিয়ে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন