ডিসেম্বর,১৫১০ খ্রীঃ।
শায়বানী পুর্ন আত্নতৃপ্তির সাথে মার্ভ দুর্গে ৩০ হাজার সুসজ্জিত সৈন্য নিয়ে জাঁক করে বসে দুর্গের বাইরে অবস্থানরত পারস্যের সাফাভি সম্রাট শাহ ইসমাইলের ১২ হাজার সৈন্যদের লক্ষ্য করছে।জায়গাটা এখনের তূর্কমেনিস্তানের মারীর নিকট আমু দরিয়ার পাড়ে।শাহের সৈন্যরা শীতে কস্ট পাচ্ছে,এটা শায়বানী খানের ভীষন ভালো লাগছে।তিনি চাচ্ছেন আরো কস্ট পাক,দূর্বল হোক তারা।এরপর দুর্গ থেকে বের হয়ে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বেন।
শাহ ইসমাইল যেনো ধৈর্য্যের প্রতিমুর্তি,শায়বানী যে শিয়ালের গর্ত থেকে বের হবে না সেটা তিনি বুঝে গেছেন।তাই রাতে তার বিশ্বস্ত সেনানায়কদের ডেকে বুঝিয়ে দিলেন,কিভাবে ভাও করতে হবে ঘটনাটার।সেনাপতিরা শাহকে পীরের মতো ভক্তি করে।তারা আর একবার শ্রদ্ধায় আপ্লুত হলেন।শাহ ইসমাইলের হাত চুম্বন করে আশীর্বাদ নিলেন।তারা বিদায় নিলেন,কারন গভীর রাত থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু হবে।মহান আল্লাহ যদি দয়া করেন কাল এমন সময় ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হবে।
শায়বানী খান বিগত বছরগুলোতে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছেন,এতে তার আত্নবিশ্বাস চরমে পৌছে যায়।এটাই তাকে শেষ করলো।সে তৈমুরের বংশকে ,তৈমুরের বারলাশ গোত্রকে পৃথিবী থেকে মুছে ফেলার জন্য শপথ নিয়েছে।অনেকাংশে সে সফল।এখন শুধু বাবর বেঁচে আছে।যে এই মুহুর্তে হীরাত বা কুন্দুজের কাছে আছে সম্ভবত।বাবরের বংশের কাউকে শায়বানী বিন্দুমাত্র করুনা দেখায়নি।বাবরের মামা তাশখন্দের শাসককে নিশংসভাবে হত্যা করেছে।বাবরের সৎ ভাইকেও হত্যা করে আন্দিজান,ফরগানা ও বাবরের জন্মস্থান আঁকশি দুর্গকে ধবংশস্তুপে পরিনত করেছে।হীরাতের শাসক বাবরের আত্নীয় হুসেন বাইকারার ছেলেরা বাবরকে দুর্দিনে কেনো আশ্রয় দিলো,এ অপরাধে হীরাত ভস্মীভুত করা হয়েছে।তার পরই সেখান থেকে গিয়ে পারস্যের শাহকে খেপানোর জন্য ফিরতি পথে তার আস্ত্রাবাদ,গুরমেন ও কেহেরমান শহরকে লুট করে অধিবাসীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে।শাহ কিছুই করতে পারেননি,কারন তিনি তখন পশ্চিমে অটোমান সুলতান ২য় বায়েজিদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন।
শায়বানী এরপর যেটা করলেন এটাকে কি বলা যায়,তার একজন দূতের হাতে ভিক্ষার একটা ঝুলি পাঠালেন শাহকে।অর্থাত কিনা পারস্যের শাহ ভিখারি।শাহ সেই দূতের হাতে দিলেন একটা সুতা কাটা চরকা দিলেন।আর সেনাপতিকে একিই রাতে ডেকে বললেন,তারা এই মুহুর্তে কতোজন প্রস্তুত আছেন? সেনাপতি জানালো-সমগ্র বাহিনী শাহের নির্দেশের অপেক্ষায়।শাহ জানালেন-পাগলা কুত্তার ট্রিটমেন্ট একটাই, এটাকে পিটিয়ে মারতে হয়।
কিন্তু শায়বানী দুর্গ ছেড়ে বের হয় না,তার পুত্রেরা আমু দরিয়া পেরিয়ে বাকী সৈন্য নিয়ে আসলেই তিনি শাহের সৈন্যদের ছাল ছাড়াবেন।কিন্তু আজ সকাল হতেই দেখা যায়,শাহের একদল অশ্বারোহী ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে দুর্গের সামনে দিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে আর অন্যেরা তাড়াহুড়া করে মালপত্র গুচাচ্ছে।তার মানে তারা পিছু হটছে।ভালো করে শায়বানী লক্ষ্য করে দেখলো আগের ১২ হাজার অশ্বারোহীকেও তো দৃস্টিসীমায় দেখা যাচ্ছে না।সে তাড়াতাড়ি তার সেনাপতি মোল্লা আব্দুর রহিমকে ডেকে বললো-এই পলায়নপর সৈন্যগুলোকে আমাদের পেড়ে ফেলতে হবে দ্রুত,এবং তা এখনই।এরা পালিয়ে গেলে আর ধরতে পারবো না।মোল্লা বললেন,সুলতান আপনি দূর্গ ছেড়ে বের হবেন না।আপনার পুত্রেরা আসুক,তারপর বের হবেন।শায়বানী বলে-তারা আসতে আসতে এরা থাকবে না।সে তার দলবল নিয়ে পলায়নপর শাহের বাহিনীর পিছু নিয়ে আমু দরিয়ার কাঠের সেতু পার হয়ে যেই না বিস্তীর্ন মরুভূমিতে পৌছালেন অমনি মরুর বালিয়ারীর আড়ালে লুকিয়ে থাকা ১৭ হাজার দক্ষ পারস্যের সেরা অশ্বারোহী শায়বানীকে ঘিরে বেস্টনি টানা শুরু করলেন।শায়বানী এবার বিজয়ের জন্য না,বাঁচার জন্য আল্লাহকে ডাকলেন।কোন মতেই বেস্টনি ভাঙ্গতে না পেরে একটা পরিত্যক্ত শীতকালীন খামারবাড়িতে সেঁদোলেন।
শায়বানীর দেহরক্ষীরা মরিয়া হয়ে লড়ছেন,তারা তো জানেই তাদের প্রত্যেকের কি দশা করবে শাহ।শায়বানী চিৎকার করে তার দেহরক্ষীদের ভীত না হয়ে শৃংখলাবদ্ধ হয়ে আক্রমন প্রতিহত করতে নির্দেশ দিচ্ছিলেন।শাহ এটা খেয়াল করে তার পাথর নিক্ষেপকারী যন্ত্রচালককে বললেন,শায়বানির দেহরক্ষীদের দিকে সরাসরি পাথর নিক্ষেপ করতে ।তেমনি এক পাথর এসে শায়বানীর ঘোড়ার মাথায় আঘাত হানতেই সেই ঘোড়া মাটিতে আশ্রয় নেয়।ঘোড়ার রেকাবে পা আটকে থাকাতে শায়বানী নিজেও ঘোড়ার নিচে চাঁপা পড়ে,তখনই আরেকটি বিশাল আকৃতির ঘোড়া শায়বানীর পাঁজরের উপর আছড়ে পরাতে পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে শায়বানী জ্ঞান হারায়।তার দেহ খুজে বের করে তার মাথা কেটে শাহের ঘোড়ার পায়ের কাছে নিক্ষেপ করা হয়।তার সারা শরীর টুকরো টুকরো করে পারস্যের বিভিন্ন শহর আর সেইসব বাজারে ঝুলিয়ে রাখা হয়,যা সে গত বছর লুট করেছিলো।আর শায়বানীর মাথার খুলিকে সেদ্ধ করে এর ভিতরের মাংস অপসারন করে পুরো মাথা গলিত সোনায় গিলটি করে তাকে মদের পানপাত্রে রুপান্তরিত করে বাবরকে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়।আর চিঠিতে এ কথাটি উল্লেখ করতে শাহ ভুলেননি যে,উপযুক্ত সময়ের অভাবে এই সোনার গিলটি করা কাজটি আরো নিঁখুতভাবে সম্পন্ন করা যায়নি।
শায়বানী পুর্ন আত্নতৃপ্তির সাথে মার্ভ দুর্গে ৩০ হাজার সুসজ্জিত সৈন্য নিয়ে জাঁক করে বসে দুর্গের বাইরে অবস্থানরত পারস্যের সাফাভি সম্রাট শাহ ইসমাইলের ১২ হাজার সৈন্যদের লক্ষ্য করছে।জায়গাটা এখনের তূর্কমেনিস্তানের মারীর নিকট আমু দরিয়ার পাড়ে।শাহের সৈন্যরা শীতে কস্ট পাচ্ছে,এটা শায়বানী খানের ভীষন ভালো লাগছে।তিনি চাচ্ছেন আরো কস্ট পাক,দূর্বল হোক তারা।এরপর দুর্গ থেকে বের হয়ে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বেন।
শাহ ইসমাইল যেনো ধৈর্য্যের প্রতিমুর্তি,শায়বানী যে শিয়ালের গর্ত থেকে বের হবে না সেটা তিনি বুঝে গেছেন।তাই রাতে তার বিশ্বস্ত সেনানায়কদের ডেকে বুঝিয়ে দিলেন,কিভাবে ভাও করতে হবে ঘটনাটার।সেনাপতিরা শাহকে পীরের মতো ভক্তি করে।তারা আর একবার শ্রদ্ধায় আপ্লুত হলেন।শাহ ইসমাইলের হাত চুম্বন করে আশীর্বাদ নিলেন।তারা বিদায় নিলেন,কারন গভীর রাত থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু হবে।মহান আল্লাহ যদি দয়া করেন কাল এমন সময় ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হবে।
শায়বানী খান বিগত বছরগুলোতে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছেন,এতে তার আত্নবিশ্বাস চরমে পৌছে যায়।এটাই তাকে শেষ করলো।সে তৈমুরের বংশকে ,তৈমুরের বারলাশ গোত্রকে পৃথিবী থেকে মুছে ফেলার জন্য শপথ নিয়েছে।অনেকাংশে সে সফল।এখন শুধু বাবর বেঁচে আছে।যে এই মুহুর্তে হীরাত বা কুন্দুজের কাছে আছে সম্ভবত।বাবরের বংশের কাউকে শায়বানী বিন্দুমাত্র করুনা দেখায়নি।বাবরের মামা তাশখন্দের শাসককে নিশংসভাবে হত্যা করেছে।বাবরের সৎ ভাইকেও হত্যা করে আন্দিজান,ফরগানা ও বাবরের জন্মস্থান আঁকশি দুর্গকে ধবংশস্তুপে পরিনত করেছে।হীরাতের শাসক বাবরের আত্নীয় হুসেন বাইকারার ছেলেরা বাবরকে দুর্দিনে কেনো আশ্রয় দিলো,এ অপরাধে হীরাত ভস্মীভুত করা হয়েছে।তার পরই সেখান থেকে গিয়ে পারস্যের শাহকে খেপানোর জন্য ফিরতি পথে তার আস্ত্রাবাদ,গুরমেন ও কেহেরমান শহরকে লুট করে অধিবাসীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে।শাহ কিছুই করতে পারেননি,কারন তিনি তখন পশ্চিমে অটোমান সুলতান ২য় বায়েজিদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন।
শায়বানী এরপর যেটা করলেন এটাকে কি বলা যায়,তার একজন দূতের হাতে ভিক্ষার একটা ঝুলি পাঠালেন শাহকে।অর্থাত কিনা পারস্যের শাহ ভিখারি।শাহ সেই দূতের হাতে দিলেন একটা সুতা কাটা চরকা দিলেন।আর সেনাপতিকে একিই রাতে ডেকে বললেন,তারা এই মুহুর্তে কতোজন প্রস্তুত আছেন? সেনাপতি জানালো-সমগ্র বাহিনী শাহের নির্দেশের অপেক্ষায়।শাহ জানালেন-পাগলা কুত্তার ট্রিটমেন্ট একটাই, এটাকে পিটিয়ে মারতে হয়।
কিন্তু শায়বানী দুর্গ ছেড়ে বের হয় না,তার পুত্রেরা আমু দরিয়া পেরিয়ে বাকী সৈন্য নিয়ে আসলেই তিনি শাহের সৈন্যদের ছাল ছাড়াবেন।কিন্তু আজ সকাল হতেই দেখা যায়,শাহের একদল অশ্বারোহী ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে দুর্গের সামনে দিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে আর অন্যেরা তাড়াহুড়া করে মালপত্র গুচাচ্ছে।তার মানে তারা পিছু হটছে।ভালো করে শায়বানী লক্ষ্য করে দেখলো আগের ১২ হাজার অশ্বারোহীকেও তো দৃস্টিসীমায় দেখা যাচ্ছে না।সে তাড়াতাড়ি তার সেনাপতি মোল্লা আব্দুর রহিমকে ডেকে বললো-এই পলায়নপর সৈন্যগুলোকে আমাদের পেড়ে ফেলতে হবে দ্রুত,এবং তা এখনই।এরা পালিয়ে গেলে আর ধরতে পারবো না।মোল্লা বললেন,সুলতান আপনি দূর্গ ছেড়ে বের হবেন না।আপনার পুত্রেরা আসুক,তারপর বের হবেন।শায়বানী বলে-তারা আসতে আসতে এরা থাকবে না।সে তার দলবল নিয়ে পলায়নপর শাহের বাহিনীর পিছু নিয়ে আমু দরিয়ার কাঠের সেতু পার হয়ে যেই না বিস্তীর্ন মরুভূমিতে পৌছালেন অমনি মরুর বালিয়ারীর আড়ালে লুকিয়ে থাকা ১৭ হাজার দক্ষ পারস্যের সেরা অশ্বারোহী শায়বানীকে ঘিরে বেস্টনি টানা শুরু করলেন।শায়বানী এবার বিজয়ের জন্য না,বাঁচার জন্য আল্লাহকে ডাকলেন।কোন মতেই বেস্টনি ভাঙ্গতে না পেরে একটা পরিত্যক্ত শীতকালীন খামারবাড়িতে সেঁদোলেন।
শায়বানীর দেহরক্ষীরা মরিয়া হয়ে লড়ছেন,তারা তো জানেই তাদের প্রত্যেকের কি দশা করবে শাহ।শায়বানী চিৎকার করে তার দেহরক্ষীদের ভীত না হয়ে শৃংখলাবদ্ধ হয়ে আক্রমন প্রতিহত করতে নির্দেশ দিচ্ছিলেন।শাহ এটা খেয়াল করে তার পাথর নিক্ষেপকারী যন্ত্রচালককে বললেন,শায়বানির দেহরক্ষীদের দিকে সরাসরি পাথর নিক্ষেপ করতে ।তেমনি এক পাথর এসে শায়বানীর ঘোড়ার মাথায় আঘাত হানতেই সেই ঘোড়া মাটিতে আশ্রয় নেয়।ঘোড়ার রেকাবে পা আটকে থাকাতে শায়বানী নিজেও ঘোড়ার নিচে চাঁপা পড়ে,তখনই আরেকটি বিশাল আকৃতির ঘোড়া শায়বানীর পাঁজরের উপর আছড়ে পরাতে পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে শায়বানী জ্ঞান হারায়।তার দেহ খুজে বের করে তার মাথা কেটে শাহের ঘোড়ার পায়ের কাছে নিক্ষেপ করা হয়।তার সারা শরীর টুকরো টুকরো করে পারস্যের বিভিন্ন শহর আর সেইসব বাজারে ঝুলিয়ে রাখা হয়,যা সে গত বছর লুট করেছিলো।আর শায়বানীর মাথার খুলিকে সেদ্ধ করে এর ভিতরের মাংস অপসারন করে পুরো মাথা গলিত সোনায় গিলটি করে তাকে মদের পানপাত্রে রুপান্তরিত করে বাবরকে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়।আর চিঠিতে এ কথাটি উল্লেখ করতে শাহ ভুলেননি যে,উপযুক্ত সময়ের অভাবে এই সোনার গিলটি করা কাজটি আরো নিঁখুতভাবে সম্পন্ন করা যায়নি।