শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৭

প্রনব মুখার্জি ও ঘোড়া মইন উপাখ্যান।

ফেসবুকের আজকের ট্রেন্ডিং হলো, প্রনববাবু ,মইন ইউ আহম্মেদ আর ২০০৮ এর নির্বাচন।প্রনব বাবু তার জীবনীতে জানাচ্ছেন,কিভাবে তিনি ২০০৭ এ মইন ইউ এর ভারত সফরে তাকে পরের বছরের নির্বাচন হওয়ার পরও পদে বহাল রাখা হবে, তার নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন।
এরপর ২০০৮-২০১৭ পর্যন্ত কি কি হয়েছিলো,সেগুলোর বর্ননা দেওয়ার প্রয়োজন নাই।আপনাদের আজ ক্ষুদ্র একটা ঘটনা মনে করিয়ে দেবো।ইতিহাসে এইসব সিগিনিফিকেন্ট ঘটনাগুলোর বিবরণ আগেও ঘটেছিলো।
আপনাদের হয়তো মনে নেই ,মইন ইউ আহম্মেদ ভারত থেকে ঘুরে আসার পর সাথে করে ৬টি মদ্দা তাগড়া স্টালিয়ন ঘোড়া উপহার স্বরুপ নিয়ে দেশে ফেরে।সেনাবাহিনীর লাইভ স্টক বিভাগের লোকেদের অবশ্যই এ ঘটনা মনে আছে।এখন বলি, এই কোন দেশকে, কোন বাহিনীকে,কোন শাসককে মদ্দা তাগড়া ঘোড়া উপহার দেয়ার রীতি প্রাচীনযুগ ,মধ্যযুগ ও বর্তমান যুগ কোন যুগেই শুভ লক্ষন হিসেবে ধরা হয় না।এর সাংকেতিক মানে ধরা হয় ,তোমরা মাদি ঘোড়া তাই তোমাদের মদ্দা ঘোড়া দেয়া হলো।এখন বসে বসে বাচ্চা বিয়োও।অর্থাত মইন পুরো নিয়ন্ত্রনে।
যাক,আমরা মুর্খ মানুষ।এবার ইতিহাসের মোটামুটি এমন একটা ঘটনা বলি, যার শেষটা আবার মইন ইউ পর্বের মতো ঘটেনি।মোঘল সম্রাট বাবুর ভারতে এসে সাম্রাজ্য স্থাপন করলেও নিজ দেশ উজবেকিস্তানের ফরঘানায় মোটেও তিস্টোতে পারেনি উজবেক উপজাতি নেতা শায়বানী খানের জন্য।শায়বানি খান কেবল তাকে ট্রান্স অক্সিয়ানা থেকেই দূর করেনি,বাবুরের বোনকে উপপত্নী বানিয়ে ফেলেন।বাবুর এই প্রবল প্রতিদ্বন্দীর হাত থেকে বাচার জন্য কাবুল ,হিরাত, কুন্দুজ ,গজনীতে আওয়ারার মতো ঘুরতে থাকেন।আর শায়বানী তার পিছু নিয়ে যারাই তাকে আশ্রয় দিতো তাদেরও হত্যা করতে থাকেন।এসব করতে করতেই শায়বানী একিই সাথে পারস্যের সাফাভিদ বংশের প্রথম শাসক শাহ ইসমাইলের শাসনাধীন বিভিন্ন শহরেও লুটতরাজ ,সেয়ানা ট্যাক্স আদায় করতে থাকেন।শায়বানীর কি গতি শাহ ইসমাইল করেছিলো তা পরবর্তী স্টাটাসে দেয়া হবে।
শাহ শায়বানীকে ধরে সাইজ করে তার মাথার খুলিটা থেকে মাংস খুলে নিয়ে পুরো খুলি গলিত সোনায় কোটিং করে বাবুরকে উপহার দেয়।সাথে বাবুরের বোন ও ভাগ্নেকে।আর একটা কাজ শাহ করে, তিনি ছিলেন শিয়াদের ১২ ইমামে বিশ্বাসী।তাই শিয়াদের কিজিলবাসী লাল লম্বা টুপি আর লম্বা আলখেল্লা তিনি যেটা পড়তেন তার একসেট বাবুরকে পাঠান।যাতে কৃতজ্ঞতাবশত বাবুর সুন্নী থেকে শাহের শিয়াতে চলে আসেন।আর ১২ টি মদ্দা তুর্কমেনী চমৎকার ঘোড়া দেন।সিগনাল ক্লিয়ার,বাবুর তার করদ হিসেবে শায়বানী অধিকৃত রাজ্য শাসন করবেন।
মধ্যযুগে রাজা রাজায় এভাবেই সিগনালে সিগনালে পরষ্পরকে সংকেত দিতো।যেমনঃ শায়বানী ধরা খাওয়ার আগে শাহকে একটা ভিক্ষার পাত্র পাঠিয়েছিলেন, অর্থাৎ শাহ ভিক্ষা করবে।আর শাহ পালটা তাকে একটা সুতা কাটার চরকা দেন।মানে বসে বসে সুতা কাটো, আমি আয়তাছি।
বাবুর শাহকে যথাপোযুক্ত সন্মান দেখান আর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন।শাহকে জানান,ভবিষ্যতে যেকোন সময় শাহর উপকারে আসতে বাবুর কোনরকম দ্বিধা করবে না।কিন্তু উনি সুন্নী মুসলমান হিসেবেই মরতে চান।আর তার রাজ্যে শিয়ারা সবসময় অত্যান্ত সন্মানিত আর মর্যাদাবান পদে থাকবেন।এরপরই বাবুরের নির্দেশে ১২ টি মদ্দা ঘোড়াকে আত্তাঘোড়া বা খাসি করা হয়।শাহকে জানানো হয় বাবুরের প্রচুর উন্নত জাতের মদ্দা ঘোড়া আছে।তারপরই খোজা ঘোড়াগুলো আর কিজিলবাসী লাল টুপি আর আলখেল্লাকে প্রচুর উপঢৌকন সহ পারস্যের রাজধানী কাজবিনে ফেরত পাঠানো হয়।
বাবুরটা পারছিলো, মইনটা পারে নাই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্রাট আকবর ও মুসলমানী প্রসঙ্গ।

ইতিহাসের এইদিনে এই ভ্যালেন্টাইন ডে তে ১৪ ফেব্রুয়ারী,১৫৫৬ খ্রীঃ সম্রাট আকবর ১৪ বছর বয়সে দিল্লীর সিংহাসনে আসীন হন। ভ্যালেন্টাইন ডে তে সম্র...