শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

রানী পদ্মিনী ও পদ্মাবতী মহাকাব্য।

১৫৪০ খ্রীস্টাব্দে আওয়াধি(উত্তর ভারত,নেপালের তরাই,ভোজপুরী অঞ্চলের উর্দু) কবি মালিক মোহাম্মদ জইশী খিলজি বংশের সবচেয়ে সফল পরাক্রমশালী শাসক আলাউদ্দীন খিলজি ও চিতোর দুর্গের রানী পদ্মিনীকে নিয়ে একটা ম্যাগনাম ওপাস প্রেমকাহিনী "পদ্মাবতী" রচনা করেন।এতোদিন পর্যন্ত এটা নিয়ে কোন ঝামেলা হয় নাই।
কিন্তু ২০১৭ সালে এসে সঞ্জয় লীলা বানশালী এটা নিয়ে মুভি বানানোর সময় ঝামেলা শুরু হলো।বলতে গেলে ,এটার শুটিং চলাকালে রাজস্থানে ,রাজপুত কর্নী সেনা নামে একদল লোক সঞ্জয়কে ধরে কান বরাবর বন চটকনা দেন এবং দাড়ি ধরেও নাড়ানাড়ি হয়।আগেই বলে নিই, রানী পদ্মিনী ভারতের বিভিন্ন মন্দিরে পুজিত হন।সেটা তার জওহর ব্রত পালন করার জন্য,তিনি আত্মাহুতি দেন আগুনে।১৩০৩ খ্রীঃ এ তার স্বামী রাজা রাওয়াল রতন সিং মেবারের নিয়ন্ত্রন আলাউদ্দীন খিলজীর হাতে হারালে চিতোর দূর্গ অবরোধের মুখে পড়ে এবং পতন ঘটে।ইতিহাস বলে তখন রানী পদ্মিনী আরো রানীদের নিয়ে আগুনে আত্মাহুতি দেন।
কিন্তু আরো একসুত্রে ইতিহাস বলে, আলাউদ্দীন খিলজি পদ্মিনীর রুপে মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েন।এজন্যই তিনি চিতোর দূর্গ অবরোধ করেন।আওয়াধি কবি জইশি এ পর্ব নিয়েই পদ্মাবত কাব্য লেখেন।
রাজপুত কর্নী সেনারা এখানেই প্রবল বিরোধিতা করেন।তাদের কথা হলো, খিলজির সাথে আদৌ কোন প্রেম পদ্মিনীর হয়নি।
বস্তুত সমকালীন ইতিহাসে আলাউদ্দীন খিলজি অত্যান্ত সফল শাসক ছিলেন।তার বাবা ফিরোজ খিলজির হাতে এই বংশের সুচনা।তিনি ৮৪ বছরের মামলুক ও বলবন বংশের পতন ঘটিয়ে তার সাম্রাজ্যের সুচনা করেন।যে মামলুক বংশের শুরু হয় কুতুব উদ্দীন আইবেকের হাতে আর শেষ হয় খিলজির বাবা ফিরোজ খিলজির হাতে বলবন বংশের শেষ সুলতান মুইজ উদ্দীন কায়কোবাদের নিহত হওয়ার মধ্যে দিয়ে।আলাউদ্দীন খিলজি ২০ বছর পরাক্রমশালি শাসকের ভূমিকা পালন করেন।তার সাম্রাজ্য কাবুল থেকে আমাদের যমুনার পশ্চিম পাড় পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো।শুধু দক্ষিন ভারত তার হাতের বাইরে ছিলো।আলাউদ্দীন জন্মেছিলেন, লখনৌবতী বাংলায়।
আর যে বিশেষ কারনে তিনি ইতিহাসে পরিচিত ছিলেন তা হলো, তার সেনাপতি মালিক কাফুরের প্রতি তার বিশেষ দূর্বলতা।তিনি সমকামী ছিলেন।মালিক কাফুর প্রথম জীবনে গুজরাটের হিন্দু পরিবারের সন্তান ছিলেন।তার নাম ছিলো মানিক।সে একজন দক্ষ কুস্তিগীরও ছিলেন।আলাউদ্দীনের চোখে পড়ার পর সে ক্রমে ক্রমে সেনাপতির পদে আসীন হন।সম্রাটের তার প্রতি দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে সে প্রবল ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠেন।তার উপাধি হয় মালিক নায়েব কাফুর।বলা হয় , ১৩১৬ সালে সম্রাটের মৃত্যু হলে মালিক এর নামে অভিযোগ উঠে ,তা ত্বরাম্বিত করার।ক্ষমতা হাতে নিয়েই সে আলাউদ্দীন খিলজির দুই পুত্র খিজির খা আর সাদি খাকে অন্ধ করে দেন।একজন দূর্বল রাজপুত্রকে শাসক বানান।কিন্তু আলাউদ্দীন খিলজির ৩য় পুত্র কুতুব উদ্দীন মুবারক খিলজি তার হাত থেকে বাচতে পারেন।সেই মালিক কাফুরকে হত্যা করে আবার ক্ষমতায় আসীন হন।
রাজপুত কর্নী সেনার অভিযোগ হলো, এমন যে আলাউদ্দীন খিলজি যার সাথে মালিক কাফুরের দোস্তানা ছিলো,এটা নিয়ে যদি করন জহর কোন মুভি বানাতো তা মেনে নেওয়া যেতো।কারন করন জহর ও রংধনু পার্টি।কিন্তু না , এর বদলে পদ্মিনীর সাথে জড়িয়ে যে কাহিনী তা কিভাবে মেনে নেয়া সম্ভব?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্রাট আকবর ও মুসলমানী প্রসঙ্গ।

ইতিহাসের এইদিনে এই ভ্যালেন্টাইন ডে তে ১৪ ফেব্রুয়ারী,১৫৫৬ খ্রীঃ সম্রাট আকবর ১৪ বছর বয়সে দিল্লীর সিংহাসনে আসীন হন। ভ্যালেন্টাইন ডে তে সম্র...