শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

সুন্নতে খৎনা।

আমাদের যুগে ৮৮-৮৯ সালের দিকে পোলাপাইনের মুসলমানী করানোর সিজনই ছিলো এই মাঘের শেষ আর ফাল্গুনের শুরুতে।কারন এসময়টায় পড়ার চাপও নাই,স্কুলেরও বালাই নাই।কিন্তু এসময়টায় যেকোন নরমাল কাটাছেড়াই যেখানে শুকাতে টাইম লাগতো,সেখানে এতোবড় এক মেজর অপারেশন শুকিয়ে থিতু হতে বেজায় ঝামেলা হতো।দুইভাবে কাজটা সারা হতো।হয় বিহারী হাজেম এসে কাজটা সারতো ,না হয় মেডিকেলের চিকিৎসক এর মাধ্যমে করা হতো।আমার বন্ধু রাজেশ আমি আর ওর ছোট ভাইয়ের মুসলমানী করা হয়েছিলো রাজেশেরই মামার হাতে মেডিকেলে।
সেই সিজনে প্রথম মুসলমানীর ধাক্কাটা এসে পড়েছিলো মগু সুমন আর মোরতুজার উপর।হাজেম এসে একিই দিন তাদের শহীদ করে যান।সুমনের মুসলমানী দেখার সুযোগ আমার হয়েছিলো।তাকে কয়েকজন শক্তিশালী লোক পায়ের রানের কুচকির ভেতর দিয়ে হাত দুখানা বের করে বিশেষ কায়দায় ধরে রাখে,যার ফলে তার পক্ষে কেবল হাতের আঙ্গুলগুলো টাইপ করার মতো করে বের হয়ে আসিলো।সে যতোক্ষন পেরেছিলো হাজেমকে আর তার নিকটাত্মীয়দের আবাচ্চো ভাষায় গালাগালি করতেছিলো।সাথে মাঝে মাঝে কান্নাকাটি।যখন বাশের ছিলা(এটা খুরের মতো ধার)দিয়ে কেটে দেয়া হলো সুমন একটা চিৎকার দিয়ে চুপ হয়ে গেলো।তার ঐ দুই হাতের আঙ্গুল এমনভাবে টাইপিং করার মতো কাপতেছিলো যেনো ভীষন জরুরী কোন সরকারী ডকুমেন্ট টাইপিং হচ্ছিলো।এরপর একটা কাপড় পুড়িয়ে ছাই করে সেটা কেটে দেয়া অংশে একটা কাপড় পেচিয়ে লাগিয়ে দেয়া হতো।সাম হাউ একধরনের এনালগ কটারিং ব্যবস্থা আর কি।
এর পরের সপ্তাহে আমাকে বলা হলো মুসলমানী করানোর জন্য।জানানো হলো যেহেতু মেডিকেলে করানো হবে,তাই লোকাল এনেস্থেটিক করা হবে।ব্যথা নাকি বলতে গেলে কিছুই না।আশেপাশের সবার হয়ে গেছে ,একমাত্র আমিই মুসলমান হই নাই।এই চাপ একদিকে, আরেকদিকে খোকন মামা বলছে ৫০০টাকা দিবে,আব্বাও বলছে ৫০০টাকা দিবে।এই ইহজাগতিক প্রলোভন একদিকে।এই পরকালের মুমীন মুসলমান হবার ডাক আর ইহকালের ইহজাগতিক ডাক এর যুগপৎ আহবানে আমি সাড়া না দিয়ে পারলাম না।সেকালের ৫০০টাকার নোট কোন ছেলেখেলার ব্যাপার ছিলো না।কি তার চমৎকার সাইজ আর কালার ছিলো।এখনের মতো ফকিরা ২০ টাকার নোটের মতো কালার না,যেটার জন্য বহু বয়স্ক বা অন্যমনস্ক লোক এখন মাঝে মাঝে ৫০০টাকার নোট ভুলে বিতরনের শিকার হয়ে যায়।
যাক, আমি রাজি হয়ে গেলাম।কাটাকুটি হয়ে যাবার পর বাসায় ফিরতেছি,এসময় গাড়িতে এনেস্থেসিয়ার ভাব কাটা শুরু হলো।আর সাথে সেকি জ্বলুনি!আমি কানতে কানতে জানতে চাইলাম মামার কাছে,উনি যে আমাকে টাকাটা দিবে বলছিলেন সেটা কি এখন দিবে কিনা?মামা বললো, বাসায় গিয়ে দিই?আমি কানতে কানতে জানালাম,বাসা পর্যন্ত আমি টিকমু না,আমি মরে যামু।ফলস্রুতিতে আব্বা আর মামা আমাকে নগদে তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করলেন।আমি কান্দি আর ৫০০টাকার নোট দুটোর দিকে দেখি, কান্দি আর নোট দুটো দুটোর দিকে দেখি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্রাট আকবর ও মুসলমানী প্রসঙ্গ।

ইতিহাসের এইদিনে এই ভ্যালেন্টাইন ডে তে ১৪ ফেব্রুয়ারী,১৫৫৬ খ্রীঃ সম্রাট আকবর ১৪ বছর বয়সে দিল্লীর সিংহাসনে আসীন হন। ভ্যালেন্টাইন ডে তে সম্র...