নাডা দেখা যাচ্ছে ,চট্টগ্রাম কক্সবাজারের দিকেই আসতেছে।মনে করেছিলাম, মুস্তাফিজের কাটারের মতো সুইং করে এদিক ওদিক চলে যাবে।অনেকদিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম দ্য গ্রেট জ্যাক লন্ডনের,এই টর্ণেডো নিয়ে। গল্পটির নাম "দ্য হিদেন" ।
ঘুর্নিঝড় কেন্দ্রের(মানে চোখটার, যাকে শান্ত কেন্দ্র বলে) বাতাসের চাপ একেবারে কম থাকে, সেখানের ব্যারোমিটারের পারদ তরতর করে পড়ে যায়।এই শুনশান নীরবতায় যেকোন ক্যাপ্টেন এর স্নায়ু ঠিক থাকতে পারে না।যখন তিনি বুঝে যান যে,তিনি সাগরে একটা সাইক্লোনের শান্তকেন্দ্রে ঢুকে পড়েছেন।এরপরই আসবে সেই প্রলয়ঙ্করী তান্ডব।সেই আমলে তো আর অত্যাধুনিক নেভিগেশন ইকুয়েপমেন্ট ছিলো না।ক্যাপ্টেন এসে গল্পের নায়ক অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীকে ডেকে ব্যারোমিটারের রিডিং দেখান।তার কলজে চমকে উঠে।ব্যারোমিটার এ ১০ এর নীচে পারদ নেমে যাচ্ছে।নিশ্চিত কোন ভয়ঙ্কর ঝড় আসছে।
জাহাজটি পলেনেশিয়ার রারাতোঙ্গার থেকে ঠেসে মাল উঠিয়েছে,অনেকের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে।পুরো জাহাজে মালামাল,মানুষ, মুরগী ,শুয়োর ঠাসাঠাসি।এরমধ্যে ট্রপিক্যাল রোদ ,এরই মধ্যে জাহাজে একজনের গুটি বসন্ত দেখা দিয়েছে।সেখান থেকে তা দ্রুত জাহাজে ছড়িয়ে পড়েছে।সবাই বুঝে গেছে রারাতোঙ্গা থেকে তাহিতি যাওয়ার আগেই বেশীর ভাগের আর দুনিয়া দেখা হবে না।তাই সবাই জাহাজের সেলারের মদ হতে শুরু করে যেসব মদের পিপে তাহিতি যাচ্ছিলো ,সব পিপে ভেঙ্গে আকন্ঠ গেলা শুরু করেছে।বাচার আশা থাকলে তো সবাই মদ গেলার লিমিট নিয়ে ভাবতো।সবাই বুঝে গেছে ,এই গুটি বসন্তের হাত থেকে রেহাই নাই।তাই নিজেদের মদে আকন্ঠ ডুবিয়ে নিচ্ছে,এমনকি মদে গোসল করে শরীর জীবানুমুক্ত করে নিচ্ছে।সবার ধারনা , শরীরের ভেতরের মদ ভেতরের জীবানু পুড়িয়ে ছাই করে দেবে আর বাইরের মদ বাইরের জীবানু ছাই করে দেবে।
তারপর একসময় টর্নেডো এলো।তার বর্ননা বেশী করে দেবো না।গল্পের নায়ক পাঠকদের এই টর্ণেডোর তান্ডব বোঝার জন্য অনুভব করতে বলেছেন, মনে করুন বাতাস নয়, কোটি কোটি টন মিহি বালু প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে।আর তার সম্পুর্ন ভরবেগ আপনি অনুভব করছেন।এটাই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন